খেলা শেষে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করে দৃষ্টান্ত জাপানিদের
বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে দর্শকেরা মাঠে শুধু খেলা দেখতেই আসেন না, সঙ্গে থাকে প্রচুর খাবার, পানীয় ও প্ল্যাকার্ড-ব্যানার। খেলা শেষে সেই উচ্ছিষ্ট বর্জ্যগুলো মাঠে ফেলে যাওয়াটাও নতুন কিছু নয়। তবে এদিক থেকে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তই স্থাপন করলেন জাপান সমর্থকেরা। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে ম্যাচ জেতার পর নিজ দায়িত্বে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করেছেন খেলা দেখতে মাঠে আসা দেশটির সমর্থকেরা।
স্টেডিয়ামের যে অংশে জাপান সমর্থকেরা বসেছিলেন, ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে সেই অংশ একদম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রেখে তারপরেই মাঠ ছেড়েছেন তারা। হুট করে নয়, বরং আগে থেকে পরিকল্পনা করেই এমন দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছেন তারা। ম্যাচ দেখতে মাঠে আসার সময়ই সঙ্গে করে বড় বড় পলিথিন নিয়ে এসেছিলেন তারা। সেগুলোতে করেই খেলা দেখার সময় ফেলা বর্জ্যগুলো পরিষ্কার করেছেন তারা।
‘ব্লু সামুরাই’ সমর্থকদের এমন আচরণে মোটেও অবাক হচ্ছেন না জাপান ভিত্তিক ফুটবল সাংবাদিক স্কট ম্যাকিনটায়ার। বরং জাপানিজদের কাছ থেকে এমন আচরণই প্রত্যাশিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি, ‘এটা শুধু জাপানের ফুটবল সংস্কৃতিরই অংশ নয়, বরং এটি জাপানের বৃহত্তর সংস্কৃতিরই অংশ। আপনারা প্রায়ই একটা কথা শুনে থাকবেন, ফুটবল একটি জাতির সংস্কৃতির দর্পণ হিসেবে কাজ করে। জাপানিজ সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, সবকিছু যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে সেটি তারা সবসময় নিশ্চিত করতে চায়। ফুটবল তো বটেই, অন্যান্য খেলাতেও তারা একই কাজ করে থাকে।’
জাপানে খেলা দেখতে আসা অনেক বিদেশি সমর্থকদের কাছে অনেক সময় বিস্ময় হিসেবেই হাজির হয় জাপানিজদের এই সংস্কৃতি। ম্যাকিনটায়ার বলছিলেন সে কথাই, ‘বিদেশি কেউ হয়তো মাঠে একটি পানির বোতল বা উচ্ছিষ্ট খাবার ফেললো। সাথে সাথেই সে নিজের কাঁধে একটি আলতো টোকা অনুভব করবে। কোন না কোন জাপানিজ তাঁকে বলবেন, বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলে দিন কিংবা সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যান, কিন্তু মাঠে বর্জ্য ফেলা যাবে না।’
‘ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাস জাপানিজদের মধ্যে গড়ে তোলা হয়। স্কুলে বাচ্চারা নিয়মিত তাঁদের ক্লাসরুম পরিষ্কার করে। ফুটবল মাঠ পরিষ্কার করাটাও জাপানিজদের সংস্কৃতিরই একটি বর্ধিত অংশ।’
এবারের বিশ্বকাপে জাপানিজদের পাশাপাশি সেনেগালের সমর্থকদেরও একই কাজ করতে দেখা গেছে। পোল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের পর স্টেডিয়াম পরিষ্কার করেছেন সেনেগালিজ সমর্থকেরা।
Comments