শিল্পবর্জে মরছে হালদার মাছ

মাছ মারা যাওয়ার ঘটনার পর হালদার পানি পরীক্ষা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দেখা গেছে, নদীটিতে প্রতি লিটার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ গড়ে এক মিলিগ্রামের চেয়েও কম যেখানে অন্তত পাঁচ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকা প্রয়োজন।
চট্টগ্রামের দক্ষিণ মাদার্সা এলাকায় শ্রী বিল থেকে মরা মাছ সংগ্রহ করছেন এক ব্যক্তি। শিল্প দূষণের শিকার এই জলাভূমির সঙ্গে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর সংযোগ রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীতে গত কয়েক দিনে শত শত মরা মাছ ভেসে উঠেছে। নদীর ধারের শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত বর্জ পানিতে মিশে মাছের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গবেষকরা জানিয়েছে, হালদার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ মাছের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন মাত্রার চেয়েও নেমে গেছে। আর এতেই মাছ মরে গিয়ে ভেসে উঠছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদীতে ৩০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরেছি আমরা। পুরো এলাকাজুড়ে মাছসহ জলজ প্রাণী মারা গেছে। আমাদের ধারণা, প্রচুর পরিমাণে শিল্পবর্জ নদীর পানিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ তার গবেষণা দলটি নদীতে ১৫ কেজি ওজনের একটি মরা মৃগেল মাছ পেয়েছে। তার ভাষায়, ‘এই ঘটনা নজিরবিহীন।’

হালদা ছাড়াও হাটহাজারি উপজেলার আরও ছয়টি ইউনিয়নে জলাশয়ে মাছ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মাছ মারা যাওয়ার ঘটনার পর হালদার পানি পরীক্ষা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দেখা গেছে, নদীটিতে প্রতি লিটার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ গড়ে এক মিলিগ্রামের চেয়েও কম যেখানে অন্তত পাঁচ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকা প্রয়োজন।

অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদায় এমোনিয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি। পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক মনে করছেন তিনি।

মানবসৃষ্ট দুর্যোগের মুখে থাকা নদীটি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে হালদা একটি অনন্য নদী। এই অঞ্চলের মধ্যে একমাত্র হালদা থেকেই কার্প জাতীয় মাছের ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন করা হয়।

এ বছর স্থানীয় জেলেরা হালদা থেকে ২২,৬৮০ কেজি মাছের ডিম সংগ্রহ করেছেন। এই ডিম থেকে প্রাপ্ত মাছের পোনা সারা দেশে সরবরাহ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago