পয়েন্ট, গোল ব্যবধান সমান হলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে?
গ্রুপ ‘বি’ এর পয়েন্ট তালিকা দেখলে যে কোন সাধারণ ফুটবল সমর্থকের মনে একটি প্রশ্ন জাগতে পারে। পয়েন্ট, গোল ব্যবধান সবকিছু সমান হওয়ার পরেও স্পেন কেন পর্তুগালকে টপকে গ্রুপের শীর্ষে? এমনকি নিজেদের শেষ ম্যাচে দুই দলই একই ব্যবধানে জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে কারা? এমন পরিস্থিতির সমাধান অবশ্য করে রেখেছে ফিফা।
গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ শেষে দুই বা ততোধিক দলের পয়েন্ট, গোল ব্যবধান সবই যদি সমান হয়, তখন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করার জন্য কিছু টাইব্রেকিং পদ্ধতির আশ্রয় নেবে ফিফা।
যেমন, দুই ম্যাচ শেষে পর্তুগাল ও স্পেন দুই দলের পয়েন্টই এখন চার। এমনকি দুই দলের গোল ব্যবধানও সমান। নিজেদের শেষ ম্যাচে যদি দুই দলই একই ব্যবধানে জেতে বা ড্র করে, তখন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করার জন্য এই টাইব্রেকিং পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হবে ফিফাকে।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের জন্য সবার আগে দেখা হয় পয়েন্ট। যে দলের পয়েন্ট বেশি, তারাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। দুই দলের পয়েন্ট সমান হয়ে গেলে তখন দেখা হয় গোল ব্যবধান। কতগুলো গোল দিয়েছে ও কতগুলো গোল খেয়েছে, এই দুটির ব্যবধানই হলো গোল ব্যবধান। কোন দল পাঁচ গোল দিয়ে তিন গোল খেলে তার গোল ব্যবধান +২। আবার কোন দল তিন গোল দিয়ে পাঁচ গোল খেলে তার গোল ব্যবধান -২। এক্ষেত্রে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা দলটিই হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
কোন কারণে গোল ব্যবধানও একই হয়ে গেলে দেখা হবে কোন দল বেশি গোল করেছে। যে দল গোল বেশি করেছে তাদেরকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। যেমন কোন দল গোল দিয়েছেও পাঁচটি, খেয়েছেও পাঁচটি। দলটির গোল ব্যবধান শূন্য। আবার আরেক দল গোল দিয়েছে ছয়টি, খেয়েছেও ছয়টি। এই দলের গোল ব্যবধানও শূন্য। কিন্তু এক গোল বেশি করার সুবাদে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে ছয় গোল করা দলটি।
কিন্তু এরপরেও যদি দুটো দলকে আলাদা করা না যায়? যেমন এই মুহূর্তে স্পেন ও পর্তুগাল উভয়ের পয়েন্ট চার। দুই দলই গোল করেছে চারটি করে, খেয়েছে তিনটি করে। এক্ষেত্রে দুই দলেরই পয়েন্ট, গোল ব্যবধান, গোলের সংখ্যা সবই সমান। শেষ ম্যাচের পরেও যদি একই অবস্থা থাকে, তাহলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হবে কীভাবে?
এক্ষেত্রে প্রথমে বিবেচনায় নেয়া হবে ওই দুই দলের হেড টু হেডের ফলাফলকে। গ্রুপে ওই দুই দলের ম্যাচে যারা জিতেছে, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে তারাই। কিন্তু পর্তুগাল-স্পেনের ম্যাচে জেতেনি কেউই, ম্যাচ হয়েছে ড্র। সেক্ষেত্রে কী করণীয়?
সেক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে ফেয়ার প্লেকে। যে দল ফেয়ার প্লে’র দিক থেকে বেশি এগিয়ে থাকবে, তারাই হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তাহলে এই ফেয়ার প্লে’র হিসাবটা হয় কীভাবে? প্রতিটি দলের জন্যই ফেয়ার প্লে’র র্যাঙ্কিং হিসাব করে ফিফা। প্রতিটি হলুদ কার্ডের জন্য একজন খেলোয়াড় পান নেগেটিভ ১ পয়েন্ট। দুটি হলুদ কার্ড দেখার পর লাল কার্ড পেলে একজন খেলোয়াড় পান নেগেটিভ ৩ পয়েন্ট। সরাসরি লাল কার্ড দেখলে ওই খেলোয়াড়ের নামের পাশে যোগ হবে নেগেটিভ চার পয়েন্ট। আর প্রথমে একটি হলুদ কার্ড দেখার পর সরাসরি লাল কার্ড দেখলে ওই খেলোয়াড়ের নামের পাশে যোগ হবে নেগেটিভ পাঁচ পয়েন্ট। এভাবে একটি দলের মোট ফেয়ার প্লে পয়েন্ট ও র্যাঙ্কিং হিসাব করে রাখে ফিফা। আর ঠিক এ কারণেই আপাতত পর্তুগালকে টপকে শীর্ষে আছে স্পেন।
কিন্তু কী হবে যদি গ্রুপের শেষ ম্যাচের পরে এই ফেয়ার প্লে পয়েন্টও সমান হয়ে যায় দুই দলের? তখন টস করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না ফিফার সামনে! এরকম পরিস্থিতির উদ্ভব হলে কেবল মুদ্রা নিক্ষেপের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে কে হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
তবে কেবল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের জন্যই নয়, দ্বিতীয় দল হিসেবে কোন গ্রুপ থেকে পরের পর্বে কে যাবে, সেটা নির্ধারণের জন্যও ঠিক একই পদ্ধতি অবলম্বন করবে ফিফা। অর্থাৎ গ্রুপের সব খেলা শেষে যদি আর্জেন্টিনা, নাইজেরিয়া বা আইসল্যান্ড সব দিক থেকেই সমতায় আসে, তখন টসের মাধ্যমেই নির্ধারিত হবে কারা হবে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গী!
Comments