পর্তুগালকে রুখে দিয়েও বিদায় ইরানের
জিতলেই হতো নতুন ইতিহাস। প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডের হাতছানি। তবে খুব কাছে গিয়েও পারল না ইরান। দুর্দান্ত লড়াই করে পর্তুগালের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে নেহায়েত দুর্ভাগ্যের কারণেই। দ্বিতীয়ার্ধের প্রতিটি মুহূর্তই যেন ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। শেষ পর্যন্ত ড্র হয় লড়াইটি। ফলে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়েছে পর্তুগালের। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে গ্রুপ রানার্স আপ হতে হয়েছে তাদের।
সারানস্কে এদিন রেফারিকে বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে ভিএআরের সহায়তা নিতেই। তিন তিনটি সিদ্ধান্ত বদলে ম্যাচের রঙও অনেক বদল হয়। উত্তেজনাও বাড়ে। ম্যাচে প্রায় হাতাহাতি হওয়ার মতোও পরিস্থিতি হয়। ফলে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কয়েকবারই কার্ড দেখাতে হয়েছে তাকে।
আগের দুই ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও শুরুতে দলকে এগিয়ে দিতে পারতেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ৩ মিনিটে তার নেওয়া শট রুখে দেন ইরানিয়ান গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরানভান্দ। মিনিট ছয় পর আবার সুযোগ পেয়েছিল পর্তুগাল। তবে ফাঁকা গোলপোস্ট পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হোয়াও মারিও।
ইরান গোল করার মতো প্রথম সুযোগ পায় ২২ মিনিটে। জাহানবাখশের বাড়ানো বল আজমাউনের পা ছোঁয়ার আগেই বল লুফে নেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। ৩৪ মিনিটে জাহানবাখশের ফ্রি কিক থেকে সাইদ এজাতোলাহির হেডও রুখে দেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক।
ছয় মিনিট পর প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে রোনালদোর শট সহজেই রুখে দেন ইরানি গোলরক্ষক বেইরানভান্দ। তবে প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের ঠিক আগ মুহূর্তে গোল পায় পর্তুগাল। ডান বক্সের ডান প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রিকার্দো কুরেজমা।
প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে বেশ উত্তেজনাপূর্ণ খেলা হয়। সূত্রটা একটি পেনাল্টিকে ঘিরে। ৫১ মিনিটে ডি বক্সে রোনালদোকে ফাউল করলেও তাতে সাড়া দেননি রেফারি। দুই মিনিট পর ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সেটা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি ইরানি খেলোয়াড়রা। তবে তা থেকে ক্ষতিও হয়নি তাদের। রোনালদোর পেনাল্টি কিক ফিরিয়ে দেন ইরানি গোলরক্ষক।
৫৬ মিনিটে ভালো সুযোগ পেয়েছিল ইরান। এহসান হাজি সাফির বাড়ানো বল কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন পেপে। ৭১ মিনিটে আবার দারুণ সুযোগ পায় ইরান। কিন্তু ফাঁকায় থাকা সতীর্থ পাস না দিয়ে নিজেই লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে সে সুযোগ মিস করেন সরদার আজমাউন।
৮১ মিনিটে লাল কার্ড পেতে পারতেন রোনালদো। ইরানি ডিফেন্ডারকে কনুই দিয়ে আঘাত করলে রিভিউ নেন রেফারি। কিন্তু হলুদ কার্ড দেখালে সে যাত্রা বেঁচে যান রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। যোগ করা সময়ে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পায় ইরান। এবারও সেই ভিএআরের সাহায্যে। ডি বক্সে কেদ্রিক সয়ারেসের হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় এশিয়ার দলটি। তা থেকে গোল পরিশোধ করেন করিম আনসারিফার্দ।
কিন্তু ওই এক গোলে লাভ হয়নি ইরানের। দরকার ছিল আরও একটি। পেতেও পারতো পরের মিনিটেই। দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি তখনই পেয়েছিল তারা। সামান গোদোসের হেড থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান মেহদি তারেমি। কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি তার শট। বার ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে হতাশায় শেষ হয় ইরানের বিশ্বকাপ।
Comments