রোনালদোকে লাল কার্ড না দেখানোয় ক্ষুব্ধ ইরান কোচ
জিতলেই পর্তুগালকে টপকে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিতে পারত তাঁর দল। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রেফারি ও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) এর উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ইরান কোচ কার্লোস কুইরোজ। ইরান কোচের দাবি, ‘বড় নাম’ হওয়ায় ন্যায্য লাল কার্ড দেখানো হয়নি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে।
সারানস্কে পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে নিজের রাগ, ক্ষোভ সামলে রাখতে পারেননি কুইরোজ। ভিএআর প্রসঙ্গে এক হাত নিয়েছেন ফিফাকেও। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যদি ভিএআরের সঠিক ব্যবহার না করা হয়, তাহলে এই প্রযুক্তি রাখার দরকার কী, এমন প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের এক পর্যায়ে ইরানের মোর্তেজা পোউরালিগাঞ্জিকে কনুই দিয়ে ধাক্কা মারেন পর্তুগীজ সুপারস্টার রোনালদো। আর এটিকে লাল কার্ড না দেয়া নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ২০১০ বিশ্বকাপে পর্তুগালের কোচের দায়িত্ব পালন করা কুইরোজ, ‘আমরা কোচ, আমাদের জানার অধিকার আছে কী হচ্ছে না হচ্ছে। আমি দেখতে চাই ভিএআর এ কী হচ্ছে। কিন্তু আমরা সেটা দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের সেটা দেখতে দেয়া হচ্ছে না।’
এরপরই রোনালদোর লাল কার্ড প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি, ‘নিয়ম হলো, কনুই দিয়ে ধাক্কা মারলে লাল কার্ড পেতে হবে। সেটা মেসি মারলো না রোনালদো, সেটা দেখার বিষয় নয়। নিয়ম অনুযায়ী এটা লাল কার্ড মানে লাল কার্ড।’
এরপর ভিএআরের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুইরোজ, ‘আমার অভিযোগ নির্দিষ্ট কোন রেফারি নিয়ে নয়, বরং তাদের সাহসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও চরিত্রের দৃঢ়তা নিয়ে। সিদ্ধান্ত সকলের জন্যই একই রকম হওয়া উচিত। আমার মতে, ফিফা ও প্রেসিডেন্ট ইনফান্তিনো সবাইকেই এটা স্বীকার করতে হবে যে, ভিএআর ঠিকমতো কাজ করছে না। এটাই বাস্তবতা। ভিএআর নিয়ে এখনও পর্যন্ত অনেক অভিযোগ এসেছে।’
ভিএআরের স্বচ্ছতা সম্পর্কেও জানতে চাই তিনি, ‘সিদ্ধান্তগুলো আসলে কারা নিচ্ছে? আমাদের সেটা জানার অধিকার আছে। আগে রেফারিরা ভুল করতেন, আমরা সেগুলো মেনে নিতাম। কিন্তু এখন তো আমাদের কাছে ভিএআর আছে। ভিএআর থাকার পরেও কেন তাহলে ভুল সিদ্ধান্ত আসবে? এত উন্নত প্রযুক্তি আছে, এতদিনের প্রশিক্ষণ আছে, রুমে বসে পাঁচজন সার্বক্ষণিক নজরও রাখছেন। তারপরও তারা একটা কনুই মারা ধরতে পারলেন না?’
তবে দিনশেষে কুইরোজ প্রশংসা করেছেন তাঁর দলের, তবে তাতেও মিশে ছিল ক্ষোভ, ‘খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা ম্যাচ দেখেছি আমরা। বিশ্বসেরা একটি দলের বিপক্ষে প্রতিটি মিনিট সমানে সমানে লড়াই করেছি আমরা। যেভাবে পুরো খেলাটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছি আমরা, ফুটবলে যদি কিছুটা হলেও ন্যায়বিচার থাকতো, যেটা আসলে নেই, তাহলে ইরানই জিতে ফিরতো।’
তবে এমন ক্ষোভের মাঝেও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ভুলে যাননি তিনি, অভিনন্দন জানিয়েছেন নিজের দেশ পর্তুগালকে, ‘পর্তুগালকে অভিনন্দন। আমি আশা করব তাদের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। ম্যাচের আগে আমি তাদেরকে পুরোপুরি সমর্থন দেইনি সেটাই স্বাভাবিক, তবে এখন থেকে আমিও তাদের একজন সমর্থক।’
পর্তুগালের সমর্থক হওয়ার চেয়ে নিজের দল নিয়ে শেষ ষোলোতে যেতে পারলেই বোধহয় বেশি খুশি হতেন কুইরোজ!
Comments