‘নেইমার নয়, কৌতিনহোই ব্রাজিলের ম্যাচ উইনার’
রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকার নাম নেইমার। চার বছর আগে ঘরের মাটিতে ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ শেষ করতে না পারা নেইমারকেই মনে করা হচ্ছে ব্রাজিলের হেক্সা জয়ের স্বপ্নের মূল সারথি। তবে আরেক সুপারস্টার কাকা বলছেন ভিন্ন কথা। নেইমার নন, বরং ফিলিপ কৌতিনহোকেই ব্রাজিলের মূল খেলোয়াড় মনে করছেন তিনি।
সাবেক এই ব্রাজিলিয়ান তারকা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সদ্যই বার্সেলোনায় যোগ দেয়া ২৬ বছর বয়সী কৌতিনহোকে। ইএসপিএন ব্রাজিলের সাথে কথোপকথনের সময় বলেছেন, নেইমার মূল তারকা হলেও এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মূল খেলোয়াড় হবেন কৌতিনহোই, ‘নেইমার আমাদের সেরা খেলোয়াড়। আমার মনে হয় ওকে ম্যানেজ করার ব্যাপারে তিতে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছে এখন পর্যন্ত। ওকে যতটা সম্ভব সুখী রাখার চেষ্টা করছে। তবে আমার মনে হয়, এই ব্রাজিল দলের মূল চরিত্র হবে কৌতিনহো। ও ই হবে ব্রাজিলের ম্যাচ জেতানো খেলোয়াড়।’
এখনও পর্যন্ত যে দুই ম্যাচ খেলেছে ব্রাজিল, তাতে কাকার কথার সত্যতাই মিলেছে। দুটি ম্যাচেই ব্রাজিলকে পয়েন্ট এনে দিয়েছেন কৌতিনহো। প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর গোলেই এক পয়েন্ট পেয়েছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আর কোস্টারিকার বিপক্ষে একের পর এক আক্রমণ করেও যখন কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করা যাচ্ছিল না, তখন যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোল করে ব্রাজিলকে বাঁচিয়েছেন এই কৌতিনহোই। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে গোল পাওয়া নেইমারকেও আগলেই রাখছেন কাকা। নিজের ক্যারিয়ার বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইনজুরির কারণে, ইনজুরি থেকে ফেরার পর পারফরম্যান্সে কেমন ওঠা নামা হয়, তা বেশ ভালোই জানা আছে কাকার। সে কারণেই নেইমারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তিনি, ‘প্রায় তিন মাস ধরে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ও (নেইমার)। ইনজুরি থেকে ফেরার পর কিছুটা সময় লাগেই। ও প্রতি ম্যাচেই উন্নতি করছে, আমাদের ওকে সুরক্ষা দিতে হবে, সাহস জোগাতে হবে। একটু অপেক্ষা করতে হবে আমাদের, কারণ একবার শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছাতে পারলে ও নিজেদের সেরাটা ঢেলে দেবে।’
নেইমারকে সমালোচনায় কান না দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন কাকা, ‘আমি ওকে প্রতি ম্যাচেই আগের ম্যাচের তুলনায় উন্নতি করতে দেখছি। প্রথম ম্যাচে ও খুব স্নায়ুচাপে ভুগেছে। শুধু ও নয়, পুরো দলই ভুগেছে। এটা স্বাভাবিক। আমি নিজেও এরকম পরিস্থিতিতে ছিলাম, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের অনুভূতি আমার ভালোই জানা। আবেগ, উৎকণ্ঠা, উত্তেজনা সবই মিশে থাকে। নেইমারের উপর অস্বাভাবিক রকমের চাপ। নিজেকে কীভাবে সমালোচনা থেকে বাঁচিয়ে চলতে হয় তা ওকে শিখতে হবে। ও মানসিকভাবে খুবই শক্তিশালী। এখনকার বিশ্বকাপ আমাদের সময়ের বিশ্বকাপের তুলনায় অনেক আলাদা। এখন সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনে খুব সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান।’
শেষে ব্রাজিলকে ছোট্ট একটি পরামর্শও দিয়েছেন কাকা, ‘পর্তুগাল যেভাবে রোনালদোকে ব্যবহার করছে, ব্রাজিলেরও উচিত নেইমারের সাথে ঠিক সেটাই করা। মাঠে ওর জন্য স্বস্তিদায়ক পরিবেশের সৃষ্টি করা, ও যা করতে ভালোবাসে সেটাই ওকে করতে দেয়া।’
Comments