‘মেসি জানে প্রতিদিন কতটা প্যাশন নিয়ে আমি কাজ করি’

আর্জেন্টিনা খাদের কিনারে চলে যাওয়ার পর সমচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়েন কোচ হোর্হে সাম্পওলি। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে শেষ বাঁশি বাজার পর লিওনেল মেসিরা যখন বাঁধভাঙা উল্লাসে মত্ত, সাম্পাওলি আবেগ দেখিয়েছেন ভিন্নভাবে। তখন তিনি সোজা হাঁটা ধরেন ড্রেসিং রুমের দিকে। স্বস্তির সঙ্গে হয়ত মিশে ছিল অভিমান। পরে এসে যোগ দেন উৎসবে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অবশ্য খুলেছেন পুরো আগল।
Lionel Messi celebrates Jorge Sampaoli

আর্জেন্টিনা খাদের কিনারে চলে যাওয়ার পর সমচেয়ে বেশি সমালোচনায় পড়েন কোচ হোর্হে সাম্পওলি। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে শেষ বাঁশি বাজার পর লিওনেল মেসিরা যখন বাঁধভাঙা উল্লাসে মত্ত, সাম্পাওলি আবেগ দেখিয়েছেন ভিন্নভাবে। তখন তিনি সোজা হাঁটা ধরেন ড্রেসিং রুমের দিকে। স্বস্তির সঙ্গে হয়ত মিশে ছিল অভিমান। পরে এসে যোগ দেন উৎসবে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অবশ্য খুলেছেন পুরো আগল।

টুর্নামেন্টে টিকে থাকার ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ২-১ গোলে হারানোর পর দলের খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তার প্রশংসা পঞ্চমুখ কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। খেলোয়াড়দের ‘সত্যিকারের যোদ্ধা’ বলেও স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি।

জানিয়েছেন এমন জয় ঠিকঠাক পরিকল্পনারই ফল , ‘আজকের ম্যাচের জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল। প্রথমার্ধে বেশ ভালো খেলেছি আমরা। আমরা নাইজেরিয়ার চেয়ে শ্রেয়তর দল ছিলাম। বলের নিয়ন্ত্রণও আমরাই বেশি রেখেছি, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও। অনেকবার আক্রমণে উঠেছি আমরা, মিডফিল্ডে বলের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছি অনেকবার।’

পেনাল্টি থেকে গোল খাওয়ার পরেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা বের করে আনতে পেরেছে বলে খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তার প্রশংসা ঝরেছে সাম্পাওলির কণ্ঠে, ‘পেনাল্টিটা হওয়ার পরে আমরা কিছুটা স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম, পরের পর্বে যেতে পারব না এমন শঙ্কাও চেপে বসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিততে পেরে আমরা খুব খুশি। খেলোয়াড়েরা তাদের হৃদয় দিয়ে খেলেছে, সত্যিকারের যোদ্ধার মতো খেলেছে তাঁরা। তাদের কাজটা অনেক কঠিন ছিল, ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন এক দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে এনেছে তাঁরা। আমি মনে করি এই জয় আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক বড় সুযোগ তৈরি করে দেবে।’

ম্যাচশেষে কোচ সাম্পাওলিকে এসে জড়িয়ে ধরেন মেসি। খেলার আগে মিডিয়ায় দলে বিদ্রোহের খবর মাটিচাপা দিতেই পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন তিনি, ‘লিও যখন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, আমার খুব গর্ববোধ হচ্ছিল, খুব খুশি লাগছিল আমার। কারণ সে জানে, প্রতিটা দিন কতটা প্যাশন নিয়ে আমি আমার কাজ করে চলেছি। বিশ্বকাপের আগে ওর সাথে অনেক জায়গায় ভ্রমণ করার, অনেক কিছু শেয়ার করার সুযোগ হয়েছে আমার। ও আমাকে খুব ভালোভাবে জানে। ও জানে আমরা সবাই অভিন্ন স্বপ্ন লালন করে চলেছি, রাশিয়ায় এসে আর্জেন্টিনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন করাই আমাদের সবার স্বপ্ন।’

এই এক ম্যাচেই যেন জয়ের রেসিপিটা ভালোভাবে বুঝে গেছেন সাম্পাওলি, ‘লিওকে প্রশিক্ষণ করায় এমন যেকোনো কোচ জানে যে, ওকে খুশি রাখাটা কতটা জরুরি। লিওকে পাস দিতে পারলে গোলের সুযোগ তৈরি হবেই। তা না হলে আমাদের ভুগতে হয়। আমাদের দলে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় আছে, বাকিদের সেই সুবিধাটা কাজে লাগাতে হবে।’

ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের পর মেসির শরীরী ভাষা নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল প্রচুর। সাম্পাওলি জবাব দিয়েছেন সেটিরও, ‘মেসি একজন অসাধারণ মানুষ। বাকিদের মতো ওরও অনুভূতি আছে, মেসিও কান্না করে, কষ্ট পায়, আর্জেন্টিনা জিতলে খুশি হয়। আমি ওকে চিনি। আমি ওকে সুখের সময় হাসতেও দেখেছি, কষ্ট পেলে কাঁদতেও দেখেছি। দলের প্রয়োজনের সময় ও সামনে এসে দাঁড়ায়, যেমনটা আজকে দাঁড়িয়েছে।’

টুর্নামেন্টে এই ম্যাচেই প্রথম স্বরূপে দেখা গেছে মেসিকে। আর তার জন্য এভার বানেগা, হাভিয়ের মাশ্চেরানো ও এনজো পেরেজের সমন্বয়ে গড়া মিডফিল্ডের আলাদাভাবে প্রশংসা করেছেন সাম্পাওলি। মেসিকে বেশি বেশি বল সরবরাহ করার কৃতিত্বটা এই ত্রয়ীকেই দিয়েছেন তিনি।  

Comments

The Daily Star  | English
expediency

Expediency triumphs over principle in electoral politics

It appears that all of the ruling party’s efforts revolve around the next election, not considering longer-term ramifications for the itself.

5h ago