অবিশ্বাস্য বাকঁ বদলের পর দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকো আর সুইডেন

ম্যাচ শেষ । ৩-০ গোলে সুইডেনের কাছে হেরেও মাঠের মধ্যে প্রতীক্ষায় মেক্সিকোর খেলোয়াড়রা। গ্যালারি ভরপুর সমর্থকদেরও উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা। খানিক পরই তা রূপ নিল আনন্দে। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে জার্মানি হেরে যাওয়ায় সুইডেনের কাছে বিধ্বস্ত হয়েও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে মেক্সিকো।

ম্যাচ শেষ । ৩-০ গোলে সুইডেনের কাছে হেরেও মাঠের মধ্যে প্রতীক্ষায় মেক্সিকোর খেলোয়াড়রা। গ্যালারি ভরপুর সমর্থকদেরও উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা। খানিক পরই তা রূপ নিল আনন্দে। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে জার্মানি হেরে যাওয়ায় সুইডেনের কাছে বিধ্বস্ত হয়েও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে মেক্সিকো।

চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল মেক্সিকো, পরের ম্যাচে অনায়াসে হারিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়াকেও। শেষ ম্যাচে এসে সুইডেনের কাছে তাদের এমন হার হবে, কে ভেবেছিল! কেবল ড্র করলেই চলত মেক্সিকোর। কিন্তু তারা শুরু থেকেই খেলেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। প্রথম ৪৫ মিনিট দাপট ছিল মেক্সিকানদেরই। বিরতির পরই পাল্টে যায় ভোল। জেতার বিকল্প ছিল না সুইডেনের। মরিয়া হয়ে বাড়ায় ধার।

শেষ ৪৫ মিনিটে তীব্র ঝাঁজ নিয়ে ম্যাচে ফেরা সুইডেনের সঙ্গে আর পেরে উঠেনি মেক্সিকো। একে একে খায় তিন গোল। সব আশা যখন মিলিয়ে আসছিল তখন অন্য ম্যাচ থেকে আসে সুখবর। দক্ষিণ কোরিয়া যে হারিয়ে দেয় চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে! জার্মানির ম্যাচ অবশ্য ড্র হলেই চলত। পয়েন্টে মেক্সিকো, সুইডেন দুই দল সমান হলেও গোল গড়ে এগিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন সুইডেন। যাদের কিনা এই ম্যাচের আগে বাদ পড়ার শঙ্কা ছিল সবচেয়ে বেশি!

প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই কাজটা সেরেই রেখেছিলো মেক্সিকো। অন্য কোন গ্রুপ হলে তখনই নিশ্চিত হত দ্বিতীয় রাউন্ড। কিন্তু মরণ ফাঁদে পরিণত হওয়া গ্রুপ এফ শেষ মুহূর্তেও দেখালো বাঁক বদলের প্রায় অবিশ্বাস্য সব ঘটনা। 

একেটেনবার্গ এরেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই বেশিরভাগ বল পজিশন ছিল মেক্সিকোর। খেলা শেষেও বহাল থেকেছে তা। তবু পরাজিত দলের নাম তারাই। তাও কিনা ৩-০ গোলে।

মনোমতো আক্রমণ তৈরি না হওয়ায় প্রথমার্ধে কোন গোল আসেনি। ওদিকে জেতাটা মেক্সিকোর থেকে বেশি দরকার ছিল সুইডেনের। বিরতির আগে  তাদের খেলা দেখেই মনে হয়েছে মেক্সিকোর এই দল থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে আছে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে সুইডেনের শরীরী ভাষার আমূলে বদলে যাওয়া যেন অভিভূত করার মতো। মাঝমাঠে বল দখলে রেখে দ্রুত গতিতে আক্রমণে যায় তারা। ফল আসে তখনই। ৪৯ মিনিটে এমনি আচমকা এক আক্রমণে গোল দিয়ে বসে সুইডেন। প্রতি আক্রমণে মাঝমাঠ থেকে  বল পান মার্কস বার্গ। তার দেওয়া ক্রস বক্সে ধরে শট নিয়েছিলেন ভিক্টর ক্লেয়েসন। বলে পায়ে ঠিকমতো সংযোগ করতে পারেননি, তবে তাতেই উল্টো লাভ হয়ে যায় সুইডেনের। বল পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়ানো লুডউইক আগস্টিয়ানসন। তার গোলেই এগিয়ে যায় সুইডেন। অন্য ম্যাচে তখনো গোল পেতে জার্মানি ধুঁকছে। গোলটি তাই মেক্সিকো থেকে জার্মান সমর্থকদের জন্যই বেশি বুকে কাঁপন ধরানো হয়ে যায়।

৬১ মিনিটে অবশ্য বুকে কাঁপন ধরার পরিস্থিতি মেক্সিকোরই। পেনাল্টি থেকে আরেক গোল দিয়ে বসে সুইডেন। বক্সের ভেতর বার্গকে ফেলে দিয়েছিলেন হেক্টর মনেরো। বিপদ আসে তাতেই। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন, সঙ্গে দেওয়া হয় হলুদ কার্ড।

৭৬ মিনিটে সর্বনাশের ষোলকলা পূরণ হয়ে যায়। নিজেদের জালেই বল ঢুকিয়ে দেন এডিসন আলভারেজ।

তিন গোল খেয়ে অলআউট আক্রমণে যায় মেক্সিকো। ৮০ মিনিটে গোলের একদম কাছে চলে গিয়েছিলেন হার্নান্দেজ। তার তীব্র গতির শট কীভাবে যে বাইরে যায়! মেক্সিকোর হতাশা তখন বাড়ছিল। অন্য ম্যাচে জার্মানি জিতে গেলেই বাদ পড়তে হত তাদের। শেষ পর্যন্ত জার্মানির আরও খারাপ এক দিন বাঁচিয়ে দিয়েছে মেক্সিকোকে।

গত তিন বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের গ্রুপ পর্বে বিদায় নেওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল এবারও। অসাধারণ জয়ে যেমন বুনো উল্লাস করেছে সুইডেন, বাজে হারের পরও স্বস্তি মেক্সিকানদের চোখেমুখে।

Comments

The Daily Star  | English

More than 600 dengue cases reported in a day; 1 more die

The number of dengue cases in the country has crossed 600 in a single day for the first time this year, as experts urge authorities to take urgent measures to control the spread of the disease

46m ago