বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে বিদায় করে দিল দ. কোরিয়া

আগের ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে রূপকথার গল্প লিখেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে বিশ্বকাপে টিকে ছিল দলটি। কিন্তু এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে আর হলো না। উল্টো অতিরিক্ত সময়ে ২টি গোল খেয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল দলটি। বিদায় নিয়েছে কোরিয়াও। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে হাসি মুখেই মাঠ ছেড়েছে দলটি।

আগের ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে রূপকথার গল্প লিখেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে বিশ্বকাপে টিকে ছিল দলটি। কিন্তু এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে আর হলো না। উল্টো অতিরিক্ত সময়ে ২টি গোল খেয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল দলটি। ১৯৩৮ সালের পর এবারই প্রথম দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে ব্যর্থ হলো জার্মানরা। বিদায় নিয়েছে কোরিয়াও। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে হাসি মুখেই মাঠ ছেড়েছে দলটি।

তবে এদিন কি করেনি জার্মানি। একের পর এক মুহুর্মুহু আক্রমণে দিশেহারা করে ফেলেছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে। কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেনি। গোলের দেখা পায়নি দলটি। মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক জো হিউন উর অসাধারণ দক্ষতায় বাড়ির পথ দেখতে হয় তাদের। এ নিয়ে টানা তিনটি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল আগের আসরের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শেষ পাঁচ বিশ্বকাপে চারবার।

ভাগ্যটা নেহায়েতই খারাপ ছিল জার্মানদের। হয়তো বিশ্বকাপে অভিশপ্ত হচ্ছে আগের আসরের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এছাড়া আর কিই-বা বলতে পারে তারা। তা না হলে কেনই বা এমন হচ্ছে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তো পরিষ্কার ভাবে তাদের হাতে ছিল। ২০০২ সালে নিজেদের ইতিহাসের সেরা দল নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পরেছিল ফরাসীরা। ২০১০ সালে ইতালি। আর ২০১৪ সালে দারুণ দল নিয়েও পারেনি স্পেন। মাঝে ব্রাজিলই শুধু ২০০৬ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব পার হতে পেরেছিল।

কাজান অ্যারেনায় এদিন আগের দিনের একাদশ থেকে পাঁচ জন খেলোয়াড় পরিবর্তন করেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। অফফর্মের কারণে বিশ্রাম দেওয়া হয় থমাস মুলারকে। আর ফিরেন মেসুত ওজিল। জয়ের লক্ষ্যে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে দলটি। ৬ মিনিটে সুযোগও পায়। তবে মার্কো রিউসের শট লক্ষ্যে থাকেনি।

১৪ মিনিটে টনি ক্রুসের ক্রস থেকে দারুণ হেড নেন স্যামি খেদিরা। বল পোস্টের ওপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ২০ মিনিটে দুর্ভাগ্য প্রায় ডেকে এনেছিলেন বর্তমান বিশ্বে অন্যতম সেরা গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়ার। ফ্রি কিক থেকে জাং ইয়ংয়ের শট ঠিকভাবে ধরতে পারেননি নয়ার। হাত ফসকে বের হয়ে গেলে তাতে টোকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সন হিউং মিন। তবে তিনি পা লাগানোর আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করেন নয়ার।

পাঁচ মিনিট পর বারে দারুণ শট নিয়েছিলেন সন হিউং মিন। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। ৩৩ মিনিটে রিউসের শট সামান্যর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩৯ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় জার্মানি। হ্যামেলসের শট রুখে দেন কোরিয়ান গোলরক্ষক। ফলে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। দিনের সেরা সুযোগও বলা যায়। হয়নি জো হিউন উর অবিশ্বাস্য সেভে। জশুয়া কিমিচের ক্রস থেকে দারুণ হেড নিয়েছিলেন লিওন গোরেজকা। ঝাঁপিয়ে পড়ে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন কোরিয়ান গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর টনি ক্রুসের শট সামান্যর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ সুযোগ ছিল কোরিয়ারও। সতীর্থের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন সন হিউং মিন।

৬৫ মিনিটে সুযোগ ছিল কোরিয়ার। কিন্তু ডি বক্সের মধ্যে বল প্যাঁচাতে গিয়ে সর্বনাশ করেন সন হিউং মিন। দুই মিনিট পর আবারও গোলের দারুণ সুযোগ পায় জার্মানি। কিমিচের ক্রস থেকে ফাঁকায় হেড নিয়েছিলেন মারিও গোমেজ। তবে তা সহজেই লুফে নেন কোরিয়ান গোলরক্ষক। ফলে হতাশা বাড়ে জার্মানদের।

৭৭ মিনিটে গোল করার মতো সুযোগ পায় কোরিয়া। ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লি জে সুং। ৮২ মিনিটে দূরপাল্লার দারুণ শট নিয়েছিলেন রিউস। পরের মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন টনি ক্রুসও। কিন্তু কেউই বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।

৮৬ মিনিটে ওজিলের ক্রস থেকে ছোট ডি বক্সে একেবারে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যামেলস। কিন্তু মাথায় না লেগে ঘাড়ে লেগে বল চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ফলে হতাশ বাড়ে দলটির। পরের মিনিটে আবার দারুণ এক সেভ করেন কোরিয়ান গোলরক্ষক। টনি ক্রুসের শট ফিরিয়ে দেন তিনি।

অতিরিক্ত সময়ে এবার শুরু হয় কোরিয়ান রূপকথা। ছোট ডি বক্সের মধ্যে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ইয়ং গাউন। লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা তুলেছিলেন। কিন্তু ভিএআরে টিকে যায় কোরিয়ার গোল। তাতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় জার্মানদের। পরে অলআউট খেলতে গিয়ে ৯৫ মিনিটে আরও এক গোল খায় তারা। নয়ার ছিলেন প্রতিপক্ষের সীমানায়। ফাঁকায় বল পেয়ে বল জালে জড়ান সন হিউং মিন।

এরপরও গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল জার্মানির। কিন্তু হয়নি। দুর্ভাগ্যই ভর করেছিল তাদের। ২-০ গোলের হারে শুধু গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়নি, রয়েছে টেবিলের তলায়। দিনের অপর ম্যাচে সুইডেন ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় মেক্সিকোকে। তাই ম্যাচটি জিততেই হতো তাদের। তা না হওয়ায় গ্রুপ পর্বেই শেষ হয় বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিশ্বকাপ।

 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago