বিশ্বকাপে এবার শেষ মুহূর্তের গোলেই হচ্ছে বাজিমাত

স্পেনের বিপক্ষে ৮৮ মিনিটে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর গোল, সুইডেনের বিপক্ষে ৯৪ মিনিটে টনি ক্রুসের গোল, কিংবা নাইজেরিয়ার বিপক্ষে মার্কোস রোহোর ৮৬ মিনিটের গোল, শেষ মুহূর্তের গোল এবার কম দেখেনি বিশ্বকাপ। আর অনেকগুলো ম্যাচেই এই শেষ মুহূর্তের গোলগুলোই হয়ে উঠেছে ফলাফল নির্ধারক।
Toni Kroos
সুইডেনে ইনজুরি টাইমে টনি ক্রুসের গোল। ছবিঃ রয়টার্স

স্পেনের বিপক্ষে ৮৮ মিনিটে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর গোল, সুইডেনের বিপক্ষে ৯৪ মিনিটে টনি ক্রুসের গোল, কিংবা নাইজেরিয়ার বিপক্ষে মার্কোস রোহোর ৮৬ মিনিটের গোল, শেষ মুহূর্তের গোল এবার কম দেখেনি বিশ্বকাপ। আর অনেকগুলো ম্যাচেই এই শেষ মুহূর্তের গোলগুলোই হয়ে উঠেছে ফলাফল নির্ধারক।

এমনিতেই শেষ মুহূর্তের গোল খেলায় উত্তেজনা আনে, তার উপর সেটি যদি হয় ম্যাচের ফল নির্ধারক গোল, তাহলে তো কথাই নেই। রাশিয়া বিশ্বকাপে হরদমই দেখা মিলছে এমন গোলের। ফুটবলের ডাটা সরবরাহের জন্য খ্যাত অপ্টা জানাচ্ছে, এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোতে ৮০ মিনিটের পরে গোল হয়েছে মোট ২৬ টি, আর এর মধ্যে ঠিক অর্ধেক গোল, অর্থাৎ ১৩ টি গোলই ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব রেখেছে (সমতাসূচক কিংবা জয় এনে দেয়া গোল)।

তুলনায় গেলে দেখা যায়, ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচেও ৮০ মিনিটের পরে গোল হয়েছিল ২৬ টি। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৮ টি গোল, অর্থাৎ ৩১% গোল ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব রেখেছিল। চার বছর আগে সাউথ আফ্রিকাতে এই হার ছিল আরও কম। সেবার গ্রুপ পর্ব শেষে ৮০ মিনিটের পর গোল হয়েছিল ২০ টি, তার মধ্যে ফল নির্ধারক ছিল মাত্র ৫ টি গোল, শতকরা হিসেবে যা দাঁড়ায় মাত্র ২৫%।

সুইডেনের বিপক্ষে একেবারে শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচ জেতার পর মার্কো রয়েস বলেছিলেন, ‘শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচ জিততে ভাগ্যেরও দরকার হয়।’

তবে আরেকটু ঘাঁটাঘাঁটি করলে বোঝা যাবে, শুধু ভাগ্যই নয়, শেষ মুহূর্তে এসে স্নায়ুচাপ ধরে রাখাটাও গোল বের করার পেছনে অন্যতম বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, শেষ মুহূর্তের গোলের সুবিধা বেশিরভাগ সময় বড় দলগুলোই পেয়েছে। যেমন স্পেনের বিপক্ষে পর্তুগাল, সুইডেনের বিপক্ষে জার্মানি, কোস্টারিকার বিপক্ষে ব্রাজিল, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনা, তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড, মিশরের বিপক্ষে উরুগুয়ে- মোটামুটি সব বড় দলই শেষ সময়ের গোলে ম্যাচ জিতেছে বা ন্যূনতম পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। বড় দলের খেলোয়াড়েরা উত্তেজনাকর মুহূর্তে নিজেদের স্নায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছে বলেই গোল বের করতে পেরেছে।

তবে শুধু বড় দলগুলোই শেষ মুহূর্তে গোল পেয়েছে সেটিও আবার না। অনেক আন্ডারডগ দলও শেষ সময়ের গোলে পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। পর্তুগালের বিপক্ষে ৯৩ মিনিটে গোল করে খেলায় সমতা এনেছিল ইরান, স্পেনের বিপক্ষে ৮১ মিনিটে গোল করেছে মরক্কোও।

এবারের আসরে শেষ মুহূর্তে ফল নির্ধারক গোলের সংখ্যা এমনভাবে বেড়ে যাওয়ার পেছনে ভিএআরের ব্যবহারের কথা বলছেন অনেকে। পর্তুগালের বিপক্ষে ইরানের গোল, মরক্কোর বিপক্ষে স্পেনের গোলের জন্য সহায়তা নিতে হয়েছে ভিএআরের। এছাড়া শেষ সময়ে এসে ডিফেন্ডারদের ক্লান্ত হয়ে পড়াকেও কারণ হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন অনেকে।

কারণ যাই হোক, নকআউট পর্বেও যে এরকম অনেক শেষ মুহূর্তের গোলের দেখা পাওয়া যাবে, কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে সে কথা বলাই যায়।

 

Comments

The Daily Star  | English
Is human civilisation at an inflection point?

Is human civilisation at an inflection point?

Our brains are being reprogrammed to look for the easiest solutions to our most vexing social and political questions.

9h ago