টাইব্রেকারে স্পেনের হৃদয় ভেঙে শেষ আটে রাশিয়া

লড়াইটা ছিল যেন রাশিয়ান গোলরক্ষক ইগোর আকিনফেভ আর পুরো স্পেন দলের বিপক্ষে। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন এ গোলরক্ষক। অবিশ্বাস্য কিছু সেভ করেছেন। মাঝে মধ্যে তো অতিমানবীয়। শেষে টাই-ব্রেকারে ফেরালেন দু’টি শট। আর তাতেই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট কাটে রাশিয়া। স্বপ্নভঙ্গ হয় স্প্যানিশদের।

১২০ মিনিটের লড়াইয়ে দুই দল ছিল ১-১ গোলের সমতায়। ম্যাচের গোলদু’টি প্রথমার্ধে হলেও ম্যাচ তখনও জমে ওঠেনি। দুই দল ওই একটি করেই শট নিয়েছিল বারে। তাতেই গোল। উত্তেজনাটা বাড়ে দ্বিতীয়ার্ধ থেকে। সঙ্গে খেলার ধারও। বিশেষ করে ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন চেপে ধরার চেষ্টা করে স্বাগতিকদের। কিন্তু লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাই ব্রেকারেই হয় নিষ্পত্তি।

২০০২ বিশ্বকাপে শেষবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছিলেন স্প্যানিশ কোচ ফার্নান্দো হিয়েরো। স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সে ম্যাচে টাই-ব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল তার দল স্পেন। ক্যারিয়ারের শেষ শটে অবশ্য তিনি ঠিকই লক্ষ্যভেদ করেছিলেন। পারেননি সতীর্থরা। এদিন পারলেন না তার শিষ্যরা। কোচ হিসেবেও দেখলেন সেই টাই-ব্রেকারে পরাজয়।

বিশ্বকাপে এ নিয়ে মোট ১৪ বার স্বাগতিকদের বিপক্ষে কোন ম্যাচ টাই-ব্রেকারে গড়াল। আর তাতে ১১ বার জয় হলো স্বাগতিকদেরই। এদিন মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিজেরদের করা চারটি শটই লক্ষ্যভেদ করে রাশিয়া। তবে স্নায়ু চাপ ধরে রাখতে পারেনি অভিজ্ঞ স্পেন। কোকে ও আসপাসের করা শটদুটি ফিরিয়ে দেন আকিনফেভ। তাতেই উল্লাসে মাতে স্বাগতিকরা।

১২ মিনিটে আত্মঘাতী গোল পিছিয়ে পরে রাশিয়া। ফ্রি কিক থেকে মার্কো অ্যাসেনসিয়োর নেওয়া শটে হেড করা থেকে সের্জিও রামোসকে আটকাতে ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে পরে যান রাশিয়ান ডিফেন্ডার সের্জিই ইগনাসেভিচ। তবে ওই সময়ে বল তার পায়ে লেগে জালে ঢুকে যায়।  

৩৬ মিনিটে রোমান জবনিনের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক কোনাকোনি শট নিয়েছিলেন আলেকজান্ডার গলোভিন। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। তবে পাঁচ মিনিট পর সমতায় ফেরে রাশিয়া। ডি বক্সের মধ্যে বল জেরার্দ পিকের হাতে লাগলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। আর তা থেকে গোল আদায় করে নিতে কোন ভুল করেননি আর্তেম জুবা। 

গোল খেয়ে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্পেন। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে এগিয়ে যেতে পারতো তারা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দুরূহ কোন থেকে নেওয়া কস্তার শট লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে আবার সুযোগ আসে কস্তার কাছে। তবে তার হেড দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন রাশিয়ান গোলরক্ষক ইগোর আকিনফেভ।

বিরতির পর পরই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল স্পেনের। জর্দি আলবার ভলি ঝাঁপিয়ে পরে রুখে দেন রাশিয়ান গোলরক্ষক। ৮৫ মিনিটে অবিশ্বাস্য সেভ করেন আকিনফেভ। একবার নয় দুইবার। প্রথমে বদলি খেলোয়াড় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পরে রুখে দেন। ফিরতি বলে লাগো আসপাসের শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পরে ফিরিয়ে দেন তিনি।

নির্ধারিত সময়ে আর গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তাতেও গোল করার বেশ কিছু সুযোগ পায় স্পেন। ১০৮ মিনিটে আবারো অবিশ্বাস্য আকিনফেভ। বদলি খেলোয়াড় রদ্রিগোর শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন তিনি। ম্যাচের শেষ সময়েও সুযোগ ছিল স্পেনের। হয়নি সেই আকিনফেভের কারণেই। রদ্রিগোর শট ফিরিয়ে দেন তিনি।   

 

Comments

The Daily Star  | English
Mustafa Zaman Abbasi no more

Mustafa Zaman Abbasi no more

A revered Bangladeshi musicologist, author, and television figure, Mustafa Zaman Abbasi passed away at 7:00am today at the age of 87.

54m ago