টাইব্রেকারের রোমাঞ্চের পর কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

খেলার শুরুর পাঁচ মিনিটেই দুই গোল। শেষ দিকে গিয়ে উত্তাপ, লুকা মদ্রিচের পেনাল্টি মিস। পরে দুই গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেল আর ড্যানিয়েল সোভাসিচের বীরত্বের টানটান উত্তেজনার টাইব্রেকারের পর শেষ হাসি হেসেছে ক্রোয়েশিয়া।

খেলার শুরুর পাঁচ মিনিটেই দুই গোল। শেষ দিকে গিয়ে উত্তাপ, লুকা মদ্রিচের পেনাল্টি মিস। পরে দুই গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেল আর ড্যানিয়েল সোভাসিচের বীরত্বের টানটান উত্তেজনার টাইব্রেকারের পর শেষ হাসি হেসেছে ক্রোয়েশিয়া।

লুজনি নভরোগোদে নির্ধারিত সময়ে  ১-১ গোলে সমতার পর ডেনমার্ককে  টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছে  ক্রোয়েশিয়া। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেনকে হারানো স্বাগতিক রাশিয়া।  

ডেনমার্কের গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেলের বাবা পিটার স্মাইকেলও ছিলেন সেরা এক গোলরক্ষক। ডেনমার্ক একবার ইউরো জিতেছিল তার বীরত্বে। আজ ক্যাসপার যতবার পেনাল্টি ঠেকালেন ততবার গ্যালারি পিটারকে গর্বে বুক ফুলিয়ে উল্লাস করতে দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসিটা তাদের হয়নি। তবে টাইব্রেকার পর্যন্ত খেলা নিয়ে আসার কৃতিত্ব পেতেই পারেন ক্যাসপার।

৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়েও পেতে পেতেও গোল পাচ্ছিল না দুদল। অতিরিক্ত সময়ের খেলাও তখন শেষের দিকে। মাঝমাঠ থেকে ওই সময়েই দারুণ পাস বাড়ান লুকা মদ্রিচ। তার বানিয়ে দেওয়া বল নিয়ে গোলরক্ষকেও পেরিয়ে গিয়েছিলেন রেভিচ। তবে ম্যাথিউস জোর্গেনসন মারাত্মক ফাউল করে ঠেকান তাকে। পেনাল্টি থেকে মদ্রিচ গোল করলে তখনই খেলা শেষ। বা দিকে ঝাঁপিয়ে সেটিই ঠেকিয়ে দেন ক্যাসপার।

টাইব্রেকারে গিয়েও ঠেকান আরও দুই পেনাল্টি। কিন্তু সোভাসিচ ঠেকিয়ে দেন তিনটি। তাতেই জিতে ক্রোয়েশিয়া।

ডি গ্রুপ থেকে দাপটের সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠা ক্রোয়াশিয়াই ছিল এই ম্যাচের ফেভারিট। কিন্তু নড়েচড়ে বসার আগেই গোল হজম করে তারা। ১ মিনিটে কনুদেনসেনের লম্বা থ্রো ইন থেকে বক্সে জটলার মধ্যে অল পেয়ে যান মাথিয়াস জোর্গেনসন। তার শট গড়িয়ে গড়িয়ে ঢুকে যায় জালে।

তিন মিনিট পরেই খেলায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। টমাস ডালেনির কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করেন মারিও মানজুকিচ। পাঁচ মিনিটে কেবল দুই গোলই হয়নি, দুদলের খেলার গতি, মধ্য মাঠ থেকে ডিফেন্স চেরা সব পাসে শুরুতেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।  স্পেন-রাশিয়া ম্যাচের বিরক্তকর মন্থর খেলার পর ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্কে গতি যেন চোখকে প্রশান্তি দেওয়ার মতো।

শুরুতেই পাওয়া গোলের পর প্রথম ৪৫ মিনিট আক্রমণ-পালটা আক্রমণে বেশ উপভোগ্য ছিল লড়াই। দুদলই তৈরি করেছে সুযোগ। তবে বিরতির পরই বদলে যায় ম্যাচের হাল। রক্ষণকে পোক্ত করে হিসেবি ফুটবল খেলতে থাকে উভয় দল। তাতে আর গোল আসেনি। খেলার গতিও হয়ে পড়েছিল মন্থর। 

খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তখন আবার ফিরে আগের গতি।  অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকে চড়াও হয় ডেনমার্ক। চার মিনিটে গোল প্রায় আদায় করে ফেলেছিল। কুদেনসেন-এরিকসেনরা ক্রোয়েশিয়ার বক্সে ঢুকেও হতাশ করেছেন দুর্বল চেষ্টায়। মিনিট দশেক পর লুকা মদ্রিচ তৈরি করেছিলেন সুযোগ। ডেনমার্কের জমাট রক্ষণ ভেঙে ঠিকমতো ক্রস করতে পারেননি।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে বাজিমাত করার সুযোগ এসেছিল ডেনমার্কের বদলি খেলোয়াড় পিওনে সিস্টর সামনে। বা দিক থেকে দারুণ গতি নিয়ে ছুটে গিয়ে তার মারা শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়।

দুই মিনিট পরই মদ্রিচের পাস থেকে ক্রোয়েশিয়ার পেনাল্টি পাওয়া ও নাটকীয় মিসের পর টাইব্রেকার উত্তেজনা। স্নায়ু পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত উৎরাতে পেরেছেন লুকা মদ্রিচ, ইভান রাকিটিচরা। 

Comments