জমজমাট ম্যাচ জিতে ২৪ বছর পর শেষ আটে সুইডেন

দারুণ এক ফুটবল ম্যাচ উপহার দিল সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড। মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে দুই দলের রক্ষণভাগকে। বল একবার এই প্রান্তে তো মুহূর্তেই অপর প্রান্তে। তারপরও ম্যাচে গোল হয় একটি। এমিল ফোর্সবার্গের দূরপাল্লার শটের গোলে শেষ হাসি হেসেছে সুইডেনই। ১-০ গোলের জয়ে ২৪ বছর পর আবার কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখল দলটি।

১৯৯৪ সালে শেষবার দ্বিতীয় রাউন্ডের গণ্ডি পার হতে পেরেছিল সুইডেন। সেবার তৃতীয় হয়েছিল দলটি। সেমিফাইনালে ওই বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের কাছে হেরে যায় দলটি। ২৪ বছর পর আবারও শেষ আটে জায়গা করে নিল দলটি। সুযোগ আছে আরও এগিয়ে যাওয়ার। ফাইনালও অসম্ভব নয়। কারণ এক ইংল্যান্ড ছাড়া ফাইনালের পথে বড় দল আর নেই।

সেন্ট পিটার্সবার্গে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলতে থাকে দুই দল। তবে গোল করার মতো সুযোগটা প্রথম তৈরি করে সুইডেনই। ম্যাচের ৯ মিনিটে ফাঁকায় ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন মার্কাস বার্গ। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। দুই মিনিট পর সুযোগ ছিল সুইসদেরও। জেরদান শাকিরি কোনাকোনি শট ফাঁকায় লেরিম জেমিলির পায়ে যাওয়ার আগেই বিপদমুক্ত করেন সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন।

১৫ মিনিটে দারুণ পাস দিয়েছিলেন শাকিরি। জসিপ দ্রিমিচ হেড দিতে পারলে লক্ষ্যভেদ হতেও পারতো। তবে লাফিয়ে নাগাল পাননি তিনি। ২৪ মিনিটে আবারো দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন শাকিরি। কিন্তু ডি বক্সের মধ্যে ফাঁকায় থাকা স্টিভেন জুবেরের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৯ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভ করেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। ভিক্তর ক্লাইসনের কাছ থেকে পাওয়া বলে মার্কাস বার্গের বাঁ পায়ের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন। পাঁচ মিনিট পর ৩৫ গজ দূর থেকে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন গ্রানিত শাকা। তবে বার পোস্টের সামান্য উপর দিয়ে যায় সে শট।

৩৯ মিনিটে জুবের ও জেমাইলির একে অপরের দেওয়া নেওয়ায় দারুণ এক আক্রমণ করেছিল সুইজারল্যান্ড। কিন্তু ফাঁকায় ছোট ডি বক্সে একেবারে সামনে গিয়ে বলে পোস্টের উপর দিয়ে মারেন জেমাইলি। ৪২ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি পায় সুইডেন। মিকায়েল লাসটিগের ক্রসে হেড দিলে কাজটা সহজেই হতো। কিন্তু তিনি পায়ে টোকা দিয়ে বল জালে প্রবেশ করাতে গেলে বল উঠে যায় আকাশে।  অথচ সামনে ছিল না গোলরক্ষকও।

বিরতির পরও বজায় থাকে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের ধারা। ৬৬ মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত গোলটি। ওলা টইভোনেনের পাস থেকে বল পেয়ে বারে জোরালো শট নেন এমিল ফোর্সবার্গ। সুইস ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক বদলে ঢুকে যায় সুইজারল্যান্ডের জালে। গোল খেয়ে যেন তা শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে সুইসরা। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। তবে লাভ হয়নি। ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় কেবল হতাশাই বেড়েছে।

৬৯ মিনিটে বারে দারুণ শট নিয়েছিলেন একদাল। তবে সুইস ডিফেন্ডার রিকার্দো রদ্রিগেজ সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন। দুই মিনিট পর গোল শোধ করার মতো দারুণ সুযোগ ছিল সুইসদের সামনে। তবে শাকিরির শট লক্ষ্যে থাকেনি। ৮০ মিনিটে আবারো হতাশ হয় সুইজারল্যান্ড। টানা তিনটি শট ফিরিয়ে দেন সুইডিশ ডিফেন্ডাররা। প্রথমে শাকিরির শট, ফিরতি বলে জোহান জউরুর শট, এরপর মাইকেল ল্যাংয়ের শট। 

এক মিনিট পর শাকিরির শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন সুইডিশ গোলরক্ষক। ম্যাচের যোগ করা সময়ে অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন তিনি। হ্যারিস সেফেরোভিচের হেড ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন সোমের। তবে ম্যাচের শেষ সময়ে গোল পেতে পারতো সুইডেনও। পাল্টা আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন মার্টিন ওলসন। তবে শেষ মুহূর্তে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে লাল কার্ড দেখেন ল্যাং। প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। তবে পড়ে ভিএআরের সহায়তায় ফ্রি কিকের সিদ্ধান্ত দেন। তবে তা থেকে সুবিধা আদায় করতে পারেনি সুইডেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

US officials preparing for possible strike on Iran in coming days, Bloomberg reports

Iran and Israel continue to attack each other on Wednesday night, as Donald Trump weighs US involvement

8h ago