চোখ রাঙাচ্ছে বিব্রতকর ইনিংস হার

প্রথম ইনিংসের মূল হন্তারক ছিলেন কেমার রোচ। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করতেই এলেন না তিনি। তবে তাতে কি! শ্যানন গ্যাবব্রিয়েল আছেন না? রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন তিনিই, সঙ্গে যোগ হলেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। তাতেই খাবি খেয়ে দ্বিতীয় দিন শেষেই বিশাল ইনিংস হারের সামনে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেও বিপর্যয়ের গল্প। বাংলাদেশের ৪৩ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪০৬ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৬৩ রানে পিছিয়ে ইনিংস হার এড়ানোর মিশনে ৬ উইকেটে ৬২ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতেই এখনো তিনশোর বেশি রান চাই। হাতে মাত্র ৪ উইকেট নিয়ে সেই কঠিন কম্ম যে আর সম্ভব নয়, হয়ত জেনে গেছে বাংলাদেশও। দুর্বল শরীরী ভাষাই দিচ্ছে তার প্রমাণ।
১৫ রানে অপরাজিত আছেন মাহমুদউল্লাহ, সঙ্গী নুরুল হাসান সোহানের রান ৭। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩৬ রানে ৪ উইকেট গ্যাব্রিয়েলের। ১৫ রানে বাকি দুটি হোল্ডারের।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস যেন প্রথম ইনিংসের রিপ্লে। রোচের জায়গায় ছিলেন খালি গ্যাব্রিয়েল। উইকেট পতনের ধরণ মোটামুটি একই। শুরুটা তামিম ইকবালকে দিয়েই। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চার হাজার রান ছুঁয়েছেন বাউন্ডারি মেরে। তার পরের বলেই খোঁচা মেরে দিয়েছে গালিতে ক্যাচ। লো হওয়া বলে শূন্য রানেই গেছে মুমিনুল হকের স্টাম্প। প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৫ রান করা লিটন দাস এবার ২ রানে ক্যাচ দেন স্লিপে। মুশফিকুর রহিম কেবল স্টাম্প উলট পালট হতেই দেখেছেন। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ঠিক প্রথম ইনিংসের রিপ্লেই দেখিয়েছেন আউট হয়ে।
দিনের শেষ ওভারে আউট হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহও। ক্যাচ হলেও মিগুয়াল কামিন্সের ওভারস্টেপে বেঁচে যান তিনি।
এর আগে প্রথম দিন থেকে বোলিংটা হয়েছিল বেশ ধারালো, ক্যাচিংও জুতসই। উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরে নিয়মিত বিরতিতে নেওয়া গেছে উইকেটও। তবে এসবের মধ্যেও স্বাগতিকদের লিড বেড়েছে তরতরিয়ে। তাতেই টেস্ট বাঁচানো দূরে থাক ইনিংস হার এড়ানোই দুর্গম পথ পাড়ি দেওয়ার মতই চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালঞ্জ নিতে যে বাংলাদেশ একদম প্রস্তুত নয়, ব্যাট করতে নেমেই তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা।
উইন্ডিজের ইনিংসের সর্বোচ্চ ১২১ রান এসেছে কার্লোস ব্র্যথওয়েটের ব্যাট থেকে, শাই হোপ করেছে ৬৭। ৩ টি করে উইকেট পান পেসার আবু জায়েদ ও অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
এদিনও দিনের শুরুটা মনমতো হয়নি বাংলাদেশের। নাইটওয়াচম্যান দেবেদ্র বিশুকে নিয়ে প্রথম ঘন্টা অনায়াসে পার করে দেন ব্র্যাথওয়েট। তুলে নেন সেঞ্চুরি। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে বিশু বোল্ড হওয়ার পর বাকি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের অবশ্য দ্রুত ফেরাতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে শাই হোপের ব্যাটে ঠিকই শক্ত অবস্থায় চলে যায় জেসন হোল্ডারের দল।
মজার কথা, পেসারদের জন্য স্বর্গ পিচেও বাংলাদেশের সফল বোলার স্পিনাররাই। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাহমুদউল্লাহ মিলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। পেসারদের মধ্যে সেরা আবু জায়েদ রাহি। তার পকেটে গেছে ৩ উইকেট । এই অভিষিক্ত পেসার নিজেকে অভাগা ভাবতেই পারেন। তার বলে ফসকে গেছে একাধিক ক্যাচ, তারমধ্যে মাহমুদউল্লাহ ছেড়েছেন একদম লোপ্পা ক্যাচ। আগের দিন ক্যাচ মিস হয়েছিল কামরুল ইসলাম রাব্বি বলেও। তবু সব মিলিয়ে পেসারদের উপর খুব একটা আস্থা রাখতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। স্পিনাররাই করেছেন ৭৪ ওভার। বল পেয়েছিলেন মুমিনুল হকও। পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ যিনি, সেই রুবেল হোসেনই হতাশ করেছেন বেশি। ১৭ ওভার বল করে ৪৪ রান দিয়ে কোন উইকেটই ফেলতে পারেননি তিনি।
Comments