ফের সেই হতশ্রী ব্যাটিং, ফের বিশাল হার

৩৩৫ রান তাড়া করে বাংলাদেশের কাছে জেতার আশা বোধহয় কেউ করেননি, কিন্তু লড়াইয়ের আশা বাড়াবাড়ি ছিল না। হারের চক্রে পড়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দল তাও করতে পারল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফলোঅন না করানোর পরও জ্যামাইকা টেস্টের আয়ু বাড়েনি। সাকিব আল হাসানের দল হেরেছে তিন দিনেই।
Mushfiqur Rahim
উড়ে যাচ্ছে মুশফিকের স্টাম্প। এভাবেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশও। ছবি: এএফপি

৩৩৫ রান তাড়া করে বাংলাদেশের কাছে জেতার আশা বোধহয় কেউ করেননি, কিন্তু লড়াইয়ের আশা বাড়াবাড়ি ছিল না। হারের চক্রে পড়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দল তাও করতে পারল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফলোঅন না করানোর পরও জ্যামাইকা টেস্টের আয়ু বাড়েনি। সাকিব আল হাসানের দল হেরেছে তিন দিনেই।

শনিবার তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনটা দারুণ কেটেছিল বাংলাদেশের। বল হাতে অধিনায়ক সাকিবের জ্বলে উঠায় মিলছিল আশা। স্বাগতিকদের মাত্র ১২৯ রানে বেধে লক্ষ্যটা তাও পাওয়া গিয়েছিল বাস্তবতার সীমানায়। দিন বাড়তেই সেই আশায় গুড়েবালি। গত পাঁচ টেস্ট ইনিংস পর কেবল পেরুনো গেছে দেড়শোর কোটা। সান্ত্বনা বলতে এটুকুই। এবার ১৬৮ রানে গুটিয়ে হারতে হয়েছে ১৬৬ রানের বিশাল ব্যবধানে।

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ তাই জেসন হোল্ডারের দল জিতে নিল ২-০ তে। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬ উইকেট। অ্যান্টিগায় ইনিংস ও ২২১ রানের পর এই হারে কেউ কেউ অবশ্য উন্নতির ছাপ দেখতে পারেন। তবে বাংলাদেশ ঘুরপাক খাচ্ছে একই ভুলের চক্রে।

৩৩ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও যা লড়াই করার করেছেন সাকিবই। সর্বোচ্চ ৫৪ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। দারুণ শুরুর পর লিটন দাস থামেন ৩৩ রানে। ব্যাটিং পজিশন বদলে কিছুটা অচেনা মুশফিকুর রহিম করেন ৩১ রান। বাকিদের কারো রান বলার মতই না। তবে এই তিন ব্যাটসম্যানের সবাই চাপ সরাতে মন দিয়েছিলেন বাউন্ডারি মারায়। তাদের বেশিরভাগ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। সাকিবের ৫৪ রানের ৪০ই চার থেকে। মুশফিক আর লিটনের ২৪ রানই বাউন্ডারিতে পাওয়া। পুরো দলের অবস্থাও তাই ১৬৮ রানের ১১২ রানই বাউন্ডারিতে থেকেই। এই পরিসংখ্যান বলে দেয় ডিফেন্স করতে একটু আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল বাংলাদেশের। চাপ সরানোর উপায় ছিল তাই মেরে খেলা। সেটা আদতে দিনশেষে কাজে দেয়নি। 

উইকেট পতনের শুরুটা তামিম ইকবালকে দিয়েই। সাদা পোশাকে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা পুরো সিরিজেই করেছেন হতাশ। আগের ইনিংসে ধুঁকতে ধুঁকতে ৪৭ করেছিলেন। এবার রানের খাতা খোলার আগেই থামিয়েছেন দৌড়।

দ্বিতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে নিয়ে আস্থার সঙ্গে ব্যাট করছিলেন লিটন। হোল্ডারকে এক ওভারে দারুণ সব শটে চার বাউন্ডারিতে তার শুরুটা চোখ ধাঁধানো। তবে টিকতে পারলেন না বেশিক্ষণ। ৩৩ বলে ৩৩ করে কেমো বলের পরে ক্যাচ দেন গালিতে। মুমিনুল এদিন কিছুক্ষণ উইকেটে সময় কাটাতে পেরেছেন। আগের তিন ইনিংসের সঙ্গে পার্থক্য বলতে এটুকুই। তার বিবর্ণ দশা কাটেনি এবারও। ৪৩ বলে  ১৫ রান করে রোস্টন চেজের নিরিহ বল লাইন মিস করে হয়েছেন এলবিডব্লিও।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ এই ইনিংসেও আত্মঘাতী। অপ্রয়োজনে চেজকে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে ৪ রানেই বিলিয়ে দিয়েছেন উইকেট। এরপর কিছুক্ষণ সাকিব-মুশফিকের লড়াই। ৫৪ রানের জুটিতে অবশ্য কেবল হারের ব্যবধানই কমেছে। মুশফিককে বোল্ড করে সেই জুটি ভাঙার পর হুড়মুড় করে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান এই ইনিংসেও পেলেন গোল্ডেন ডাক। হোল্ডারের তোপ টেল এন্ডারের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়েছে ৪২ ওভারেই। গোটা সিরিজে একবারও ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৫৪

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৪৯

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১২৯

বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৩৩৫) ৪২ ওভারে ১৬৮ (তামিম ০, লিটন ৩৩, মুমিনুল ১৫, সাকিব ৫৪, মাহমুদউল্লাহ ৪, মুশফিক ৩১, সোহান ০, মিরাজ ১০, তাইজুল ১৩*, কামরুল ০, আবু জায়েদ ০; হোল্ডার ৬/৫৯, গ্যাব্রিয়েল ১/২৯, পল ১/৩৪, কামিন্স ০/২০, চেইস ২/১৪)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানে জয়ী

সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জেসন হোল্ডার

ম্যান অব দা সিরিজ: জেসন হোল্ডার

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka's rail link with most of Bangladesh snapped after derailment in Tejgaon

Railway operation between Dhaka and most of the country was suspended after a train derailed hitting a crane in the Tejgaon area in the capital this evening.

2h ago