সংখ্যায় সংখ্যায় ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল
এক মাসের মহাযজ্ঞের শেষ হতে চলেছে আজ। ৩২ দল থেকে টুর্নামেন্ট নেমে এসেছে দুই দলে। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম কি আজ নতুন কোন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দেখবে? না কি ২০ বছর পর আবারও সৌরভ ছড়াবে ফরাসি ফুটবল? জমজমাট এক ফাইনালের আগে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক পরিসংখ্যানের উপর।
হেড টু হেড:
১) ক্রোয়েশিয়ার সাথে এর আগে পাঁচবারের মোকাবেলায় কখনোই হারেনি ফ্রান্স, জিতেছে তিনবার আর ড্র করেছে দুইবার।
২) বিশ্বকাপে এর আগে কেবল একবারই মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও লিলিয়ান থুরামের জোড়া গোলে ক্রোয়াটদের ২-১ গোলে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালের টিকিট কেটেছিল ফ্রান্স।
৩) দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে সাত বছর আগে। ২০১১ এর মার্চে স্তাদে ডি ফ্রান্সের ওই প্রীতি ম্যাচ শেষ হয়েছিল গোলশূন্য ড্রতে।
ফ্রান্স:
১) তিন কিংবা তার বেশিবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা মাত্র ষষ্ঠ দেশ ফ্রান্স। সর্বোচ্চ আটবার ফাইনালে উঠেছে জার্মানি, ব্রাজিল ও ইতালি উঠেছে ছয়বার করে, আর আর্জেন্টিনা উঠেছে পাঁচবার। ফ্রান্সের সমান তিনবার ফাইনালে উঠেছে নেদারল্যান্ডসও, কিন্তু শিরোপা জিততে পারেনি কখনোই।
২) মেজর টুর্নামেন্টে এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনালে উঠল ফ্রান্স (বিশ্বকাপে তিনবার, ইউরোতে তিনবার)। আগের পাঁচ ফাইনালের মধ্যে তারা জিতেছে তিনবারই।
৩) বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স যে চার গোল করেছে, তার তিনটিই এসেছে সেট পিস থেকে (কর্ণার থেকে দুটি, পেনাল্টি থেকে একটি)।
৪) এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত তিনজন ফরাসি ডিফেন্ডার গোল করেছেন (বেঞ্জামিন পাভার, রাফায়েল ভারানে, স্যামুয়েল উমতিতি)। সর্বশেষ যেবার তিনজন ফরাসি ডিফেন্ডার গোল করেছিলেন, সেবার শিরোপা জিতেছিল ফ্রান্স।
৫) পেনাল্টি শুটআউটকে হিসাবের বাইরে রাখলে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ১৪ টি নকআউট ম্যাচের মাত্র একটিই হেরেছে ফ্রান্স (১১ জয়, ২ ড্র)। একমাত্র পরাজয়টি গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে, জার্মানির কাছে।
৬) এই বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচ মিলিয়ে কেবল ৯ মিনিট ১২ সেকেন্ডের জন্য প্রতিপক্ষের কাছে গোলের দিক থেকে পিছিয়ে ছিল ফ্রান্স (শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর)।
৭) এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ১৩ টি শট নিয়েছেন অলিভিয়ের জিরু, তার মধ্যে পোস্টে রাখতে পারেননি একটি শটও। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর জিরুই একমাত্র ফুটবলার, যিনি এতগুলো শট নিয়েও একটিও অন টার্গেটে রাখতে পারেননি।
৮) আজ গোল পেলে ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় টিনএজার হিসেবে বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করার কৃতিত্ব দেখাবেন কিলিয়ান এমবাপে। এখনও পর্যন্ত এই কীর্তি আছে কেবল পেলের।
৯) মেজর টুর্নামেন্টের নয়টি নকআউট ম্যাচ খেলে ১১ টি গোলে সরাসরি অবদান রেখেছেন আতোঁয়ান গ্রিজম্যান, গত ৫০ বছরে যা যেকোনো ফরাসি ফুটবলারের জন্য সর্বোচ্চ। এমনকি জিদান (৮) ও প্লাতিনি (৬) কেও ছাড়িয়ে গেছেন গ্রিজম্যান।
ক্রোয়েশিয়া:
১) বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা ১৩ তম দেশ ক্রোয়েশিয়া।
২) প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা সর্বশেষ দুটি দল শিরোপা জিতেই মাঠ ছেড়েছিল (১৯৯৮ তে ফ্রান্স, ২০১০ এ স্পেন)।
৩) বিশ্বকাপ ইতিহাসে ক্রোয়েশিয়া প্রথম দল, যারা নকআউট পর্বের তিনটি ম্যাচেই শুরুতে পিছিয়ে পড়েও ফাইনালে উঠেছে।
৪) আজও যদি খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়, তাহলে ইতিহাসই গড়ে ফেলবে ক্রোয়েশিয়া। এর আগে অন্য কোন দলকে এক আসরে চারটি নকআউট ম্যাচই অতিরিক্ত সময় খেলতে হয়নি।
৫) এই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া মোট ১২ গোল করেছে, এবং গোলগুলো এসেছে ৮ জন ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে।
৬) বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ১০ ম্যাচেই গোল করেছে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপে তাদের গোল করতে না পারা সর্বশেষ ম্যাচ ২০০৬ বিশ্বকাপে, জাপানের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র।
৭) রাশিয়া বিশ্বকাপে যে পাঁচটি গোল হজম করেছে ক্রোয়েশিয়া, তার চারটিই এসেছে সেট পিস থেকে।
৮) এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি (১৪ টি) হলুদ কার্ড দেখা দল ক্রোয়েশিয়া।
৯) এই বিশ্বকাপে মোট ১৬ টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন লুকা মদ্রিচ, অন্য যেকোনো সতীর্থের চেয়ে যা দ্বিগুণ বেশি।
আরও পড়ুন ঃ ‘৪৫ লাখ খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া’
Comments