ইতিহাস গড়েও বিনয়ী ফরাসী কোচ দেশম
দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। উৎসবে মাতোয়ারা পুরো দল। আর উৎসবের মধ্যমণি কোচ দিদিয়ের দেশম। শিষ্যরা মাথার উপর তুলে আকাশে ছুঁড়ে মারছেন, নেমে আসলে আবার ধরছেন। কারণ এদিন যে ইতিহাস গড়েছেন দেশম। ফ্রান্সের দুটি শিরোপাই এলো তার হাত ধরে। খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় করা ইতিহাসের তৃতীয় ব্যক্তি তিনি। আর অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে দ্বিতীয়। কিন্তু এমন কীর্তির পরও সব কৃতিত্ব শিষ্যদের দিয়ে দিলেন এ ফরাসী।
ফুটবলটা প্রায় পুরোটাই কোচের খেলা। সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করতে পারলে শক্তিশালী দলকেও হারানো সম্ভব। এদিন ম্যাচে সমান তালে লড়াই করে ক্রোয়েশিয়া হেরে গেল যে দেশমের দক্ষতাতেই। চাপ কিভাবে সামলে নিতে হয় তা শিষ্যদের ভালোভাবেই শিখিয়েছেন। ম্যাচ শেষে বললেন, ‘এটা দুর্দান্ত। এটা নবীন একটি দল, যারা কি না এখন বিশ্ব সেরা। কিছু চ্যাম্পিয়ন আছে যাদের বয়স মাত্র ১৯। আমরা হয়তো খুব ভালো ফুটবল খেলিনি কিন্তু আমরা মানসিক পরিপক্বতা দেখিয়েছি। এবং আমরা চারটি গোল করেছি। জয়টি আমাদের প্রাপ্য ছিল।’
দুই বছর আগে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল ফ্রান্স। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল পর্তুগাল। ম্যাচে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোও খেলতে পারেননি পুরো ম্যাচ। তারপরও তাদের কাছে হেরে গিয়েছিল ফ্রান্স। সেই হারের থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার ফাইনালে ওঠার পর থেকেই সতর্ক দলটি। দেশমের ভাষায়, ‘দলটি অনেক কঠিন পরিশ্রম করেছে। আমাদের অনেক বাজে পরিস্থিতি ছিল। দুই বছর আগে ইউরো হারের ক্ষতটা ছিল দগদগে। তবে ওটা আমাদের শিক্ষা দিয়েছে।’
তবে এদিন সত্যিই জয়টা ফ্রান্সের প্রাপ্যই ছিল। লরিসের একটি ভুল ছাড়া পুরো ম্যাচেই ছিলেন দুর্দান্ত। দারুণ সব ফিনিশিং দিয়েছেন ফরোয়ার্ডরা। হাফ চান্সকেও ফুল চান্স করেছে। কৃতিত্বটা তাই পুরোটাই খেলোয়াড়দের দিলেন দেশম, ‘জয়টি আমার জন্য হয়নি। এটা খেলোয়াড়দের, যারা ম্যাচ জিতে নিয়েছে। গত ৫৫ দিনে আমরা অনেক কাজ করেছি। এটা রাজকীয় একটা ব্যাপার। ফরাসী হিসেবে গর্ব বোধ করছি, ব্লুজ হিসেবেও। জয়টা তাদের জন্যই। ভিভা লি রিপাবলিক। ’
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। সে দলের অধিনায়ক ছিলেন বর্তমান দলের কোচের দায়িত্বে থাকা দেশম। এবার আরেকটি বিশ্বকাপ জিতলেন কোচ হিসেবে। এর আগে জার্মানির ফ্র্যাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ও ব্রাজিলের মারিও জাগালো খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে জিতেছেন বিশ্বকাপ। তবে এর মধ্যে বেকেনবাওয়ার ছিলেন দলের অধিনায়ক। আর জাগালো খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার জিতলেও কোনবারই অধিনায়ক ছিলেন না।
Comments