হামলার বিচার দাবিতে ঢাবিতে শিক্ষকদের সংহতি সমাবেশ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে দমন-পীড়নের প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ জন শিক্ষক ঢাবির অপরাজেয় বাংলার সামনে সংহতি সমাবেশ করেন। ছবি: প্রবীর দাশ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংহতি সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

আন্দোলনে নির্যাতন নিপীড়নের পরও যারা প্রতিবাদ করেছেন তিনি অভিনন্দন জানিয়ে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শ্রমজীবী বাবা-মা তাদের সর্বস্ব দিয়ে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করানোর পরও তারা কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে না। লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। এ কারণেই অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের সংবেদনশীলতা থাকলে তারা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের কারণটাকে বোঝার চেষ্টা করতেন। এর বদলে তারা প্রতিবাদ দমন করার মাধ্যমে সমাজের মতামত, ক্ষোভটাকে দমন করার চেষ্টা করছেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন সেটা দীর্ঘদিন ধরে জমা হওয়া অনিশ্চয়তা-ক্ষোভেরই ধূমায়িত প্রকাশ, এটা চাইলেই বোঝা যায়। এভাবে অসন্তোষ দমন করে রাখা যায় না।

সরকার ও সরকারি দলের নির্যাতনের কারণেই সমগ্র সমাজে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পূরণ করা যাচ্ছে না এটা অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। যেহেতু এভাবে কোটা পূরণ করা বাস্তবসম্মত হচ্ছে না তাহলে সহজেই কোটা সংস্কার করা যায়। প্রধানমন্ত্রী রাগ করে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন, যেটা কেউ চায়নি।

তিনি বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিপদে রয়েছে। এর মধ্যে একটা বিপদ হলো দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষকদের এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় যারা নিজেরা কোনো চিন্তা না করে, সমস্ত আত্মসম্মান জলাঞ্জলি দিয়ে ওপরের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ।

সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা এমন অবস্থা তৈরি করেছেন যাতে ২০১৮ সালে বসে আইয়ুব খানের শাসনের দশকের কথা মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে তাদের কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার সবচেয়ে বড় অপমান।

আজ সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে শিক্ষকরা এই সমাবেশ করেন। শতাধিক শিক্ষার্থীদেরকেও সংহতি সমাবেশে অংশ নিতে দেখা যায়।

সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago