সাকিব, মোস্তাফিজ টেস্ট খেলতে চায় না: নাজমুল

ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজে চরম বিপর্যয়ের রেশ থাকতেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন দলের কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার টেস্ট খেলতে অনাগ্রহী। সাদা পোশাকে ভাল করতে হলে তাই একেবারে আলাদা একটা দল গড়া ছাড়া উপায় দেখছেন না তিনি।
nazmul hasan papon
বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ (ফাইল)

ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজে চরম বিপর্যয়ের রেশ থাকতেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন দলের কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার টেস্ট খেলতে অনাগ্রহী। সাদা পোশাকে ভাল করতে হলে তাই একেবারে আলাদা একটা দল গড়া ছাড়া উপায় দেখছেন না তিনি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্টেই বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ২২১ রানে হারের পর জ্যামাইকায় পরের টেস্টে হেরেছে ১৬৬ রানে। অ্যান্টিগায় প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৩ রানে গুটিয়ে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে অলআউটের নজির গড়েছে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এটাই এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে সিরিজ।

দলের এই অবস্থায় শুক্রবার প্রতিক্রিয়া জানান বোর্ড প্রধান নাজমুল। ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার সংস্করণের প্রতি বৈশ্বিক অনাগ্রহ এখন প্রকট বলে জানান তিনি,  ‘আইসিসিতেও দেখেছি ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া ছাড়া কাউকে টেস্ট খেলায় আগ্রহী দেখি না। এজ এ বোর্ড তারাই আগ্রহী না। ব্রডকাস্টাররা আছে তারাও বলে আগ্রহী না। দর্শক কম হয়।’

বোর্ড প্রধানের পর্যবেক্ষণ, এর প্রভাব পড়েছে দেশের ক্রিকেটেও। মুখে না বললেও অনেক ক্রিকেটারই নাকি টেস্ট খেলতে নিজেদের অনাগ্রহ প্রকাশ করে দিয়েছেন, ‘আমাদের দেশেও দেখি বেশ কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার আছে তারাও টেস্ট খেলতে চাচ্ছে না। চাচ্ছে না বলতে, যেমন সাকিব ও টেস্ট খেলতে চায় না। মোস্তাফিজও টেস্ট খেলতে চায় না। বলে না যে খেলব না, কিন্তু চায় যে এড়িয়ে যেতে। হতে পারে ও ইনজুরি প্রবণ বেশি, টেস্ট খেলতে গিয়ে আবার ইনজুরিতে পড়বে, হতে পারে এ কারণে। অনেকে টেস্ট খেলতে চায় না, টেস্ট অনেক কঠিন।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর চলাকালীন রুবেল হোসেনের টেস্ট খেলতে অনাগ্রহের কথা কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর হয়। কমপক্ষে ১০ টেস্ট খেলেছেন এমন বোলারদের মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে বোলিং গড়ের রুবেলের কাছে নাকি টেস্ট ক্রিকেট এখন ভীষণ কঠিন, ‘রুবেল অনেক অভিজ্ঞ। অনেক দিন সার্ভিস দিয়ে আসছে। হতে পারে ওর জন্য টেস্ট কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তরুণদের থেকে নতুন প্লেয়ার নিয়ে আসতে হবে। এছাড়া উপায় নেই।’

টেস্ট ভালো করতে একেবারে নতুন দল তৈরি করা ছাড়া আপাতত উপায় দেখছেন না বোর্ড প্রধান, ‘এখানে মানসিকতা না, টেস্টের জন্য আমাদের নতুন দল করতে হবে। চার বছর আগে থেকে বলে আসছি টেস্টে একটা আলাদা সেটআপ দরকার। টি-টোয়েন্টিতেও। হয়ত দুই-তিনজন কমন মুখ থাকবে। সবারই কিছু টেস্টের জন্য বিশেষজ্ঞ প্লেয়ার আছে। আমাদের কিন্তু সেভাবে নেই। আমরা খালি মুমিনুলকে রেখেছি টেস্টের জন্য। এটা একটা করলে তো হবে না। আমাদের এরকম পাঁচ-ছয় জন তৈরি করতে হবে।’

তবে হুট করেই দলে আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনাও দেখছেন না বিসিবি প্রধান, ‘কিন্তু আপনার যে স্কোয়াড তামিমের সঙ্গে একজন ওপেনার। দুইজন চলে গেল। তিনটা পেসার আসবে। তারপর একটা তো স্পিনার নিবেন। ছয়জন চলে গেল। তারপর মুশফিক, রিয়াদ , সাকিবকে বাদ দিতে পারবেন না। জায়গা থাকে দুইটা, তিনে কে আসবে। মুমিনুল আছে, মুমিনুলকে একটা সিরিজের জন্য বাদ দিতে পারবেন না।  রইল বাকি সাতে। সাতে কতজন আছে। মোসাদ্দেক আছে, সাব্বির আছে, মিরাজ আছে। এখন এদের কাউকে যদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে মানুষ বলবে এটা কি করল। আবার সিনিয়র কাউকে যদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে তো কথাই নেই। কাজেই ক্রিকেটের স্বার্থে আমাদের এগুলো সহ্য করে নিতে হবে। যদি ভবিষ্যৎ ভাল চাই। আমাদের নতুন নতুন তামিম, সাকিব রিয়াদ দরকার। ওরা আছে থাকবে, কিন্তু যখন থাকবে না তখন আমাদের কি হবে। সেজন্য তরুণদের তৈরি করতে হবে।’

Comments