‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, তবে চ্যালেঞ্জও আছে সামনে’

উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠলেও তা ধরে রাখতে ২০২১ সাল পর্যন্ত অনেক কষ্ট করতে হবে বাংলাদেশকে। অবকাঠামো, রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ ছাড়াও মাথাপিছু আয়ের বর্তমান গড়-সূচক বাড়াতে হবে আরও।
Seminar on Bangladesh in Kolkata
২৩ জুলাই ২০১৮, ভারতের কলকাতায় ‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় পদার্পণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগী ভারত-বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ছবি: স্টার

উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উঠলেও তা ধরে রাখতে ২০২১ সাল পর্যন্ত অনেক কষ্ট করতে হবে বাংলাদেশকে। অবকাঠামো, রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ ছাড়াও মাথাপিছু আয়ের বর্তমান গড়-সূচক বাড়াতে হবে আরও।

বাংলাদেশ সরকার যেভাবে কঠোর পরিশ্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে পাকাপাকিভাবে ২০২১ সালে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে যাবে দেশটি- কলকাতার একটি প্রভাবশালী বণিকসভা ও বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের যৌথ সেমিনারে বক্তারা এভাবেই বিষয়টি মূল্যায়ন করেছেন।

গতকাল (২৩ জুলাই) বিকালে শুরু হওয়া প্রায় চার ঘণ্টার সেমিনারের শিরোনাম ছিল ‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় পদার্পণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগী ভারত-বাংলাদেশের ভূমিকা’।

সেমিনারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন বিশ্ববাসীর সামনে মডেলে পরিণত হয়েছে। শিল্পকারখানা, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎসহ উন্নয়নমূলক সব খাতে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে।” সে কারণেই তার বিশ্বাস আগামী নির্বাচনেও বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় ফিরবে।

সেমিনারে অংশ দেওয়া ভারতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বাংলাদেশের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের শিরোপা পাওয়া কঠিন নয়। তবে এর জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবেই বিষয়টিকে দেখতে হবে।

অর্থনীতি-বিষয়ক একজন বিশেষজ্ঞ সুরজিত মিত্র জানান, শ্রীলঙ্কার মতো উন্নয়নের নামে বিদেশি কোনও দেশ যেন বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে না বসে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে কাজ করেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “বর্তমানে আমলারা আগের যে কোনও সময়ের তুলনায় বেশি কাজ করেন। এটি উন্নয়নের জন্য খুব জরুরি। সেটি অব্যাহত থাকলেই বাংলাদেশের সামনে অনেক ইতিবাচক কিছু অপেক্ষা করছে।”

বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। গ্যাসের স্থিতিও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে বিকল্প তিনটি পথে জ্বালানি নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে। সেমিনারে একথা বলেন বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ।

এ ধরণের সেমিনার করার অর্থ একদিকে যেমন প্রতিবেশী ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মত বিনিময়, অন্যদিকে বাংলাদেশ সম্পর্কে সঠিক তথ্য তাদের সামনে তুলে ধরা। এমনটি মনে করেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা একটি বিষয়ে সবাই প্রায় এক মত যে, পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে তারা যেমন নিজেদের অর্থনীতিতে বলীয়ান হতে পারবে, অন্যদিকে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হবে।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী সেমিনারে যোগ দেওয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ বাড়ছে। সে কারণে ভারতের পর্যটকদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ একটি ভিসা অফিস খুলতে চায়। সেই সঙ্গে ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-গৌহাটি বিমান চলাচলের বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Chief Adviser Muhammad Yunus

Chief Adviser Yunus's UNGA trip a critical turning point

Now is the best chance for Bangladesh to strengthen international cooperation.

10h ago