ভাগ্যেই নেই ইমরুলের

নয় বছর পর বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। এ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে দলে থাকার কথা ছিল ইমরুল কায়েসের। কিন্তু এ সিরিজের আগেই দল থেকে বাদ পরলেন তিনি। কিন্তু এমনটা কি হওয়ার কথা ছিল?

বাংলাদেশ জাতীয় দলে নীরব পারফরমারের নাম তালিকা করলে ইমরুলের নামই আসবে সবার প্রথম। তারকা খ্যাতি কখনোই পাননি কিন্তু নীরবে বাংলাদেশের অনেক বড় বড় কীর্তিতে অংশ নিয়েছেন। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে দেড়শ রানের ইনিংসও আছে তার। কিন্তু ওই ম্যাচেই ডাবল সেঞ্চুরি সব আলো কেড়ে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। ওপেনিংয়ে দেশের সর্বোচ্চ ৩১২ রানের রেকর্ডে আছে তার নাম। 

দলের প্রয়োজনে উইকেটের পেছনেও দাঁড়িয়েছেন। বিশ্ব রেকর্ডও করেছেন। ১৪১ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে ২০১৭ এর জানুয়ারিতে ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে অনন্য রেকর্ড গড়েন ইমরুল। মুশফিকুর রহিম ইনজুরিতে পড়ায় বদলি উইকেটরক্ষক হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচটি ক্যাচ নিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি। এতো কিছু করার পরও টেস্টে তার জায়গা নড়বড়ে হয় কেবল নতুনদের জায়গা দিতেই।

এতো গেল টেস্টে তার কীর্তির কথা। ওয়ানডেতেও কি খুব পিছিয়ে? সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে তো প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে ইমরুল।

দেশের হয়ে শেষ ১৫টি ওয়ানডে ম্যাচে করেছেন ৬০৪ রান। যার মধ্যে শতক একটি ও অর্ধশতক চারটি।  তার পরিবর্তে যারা সুযোগ পাচ্ছেন তাদের চেয়ে কোথায় পিছিয়ে? শেষ ১৫টি ওয়ানডেতে এনামুল হক বিজয় করেছেন ৩৪৬ রান। আর সৌম্য সরকার নিজের শেষ ১৫ ম্যাচে করেছেন ২৭৫ রান। লিটন অবশ্য ক্যারিয়ারে খেলেছেনই ১২টি ওয়ানডে। তাতে করেছেন মাত্র ১৬৫ রান।

তাহলে কি তার দলে না থাকা দুর্ভাগ্যই নয় ইমরুলের? আক্ষেপটা ঝরল তার কণ্ঠেও, ‘হয়তো আমার কপালে ছিল না। আমি অবশ্য এভাবে চিন্তা করি না। আমি চিন্তা করি সুযোগ আসলে আবার খেলব, বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলাটা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। যখনই দেশের জন্য খেলি তখন চেষ্টা করি সবসময় ভালো খেলার।’

ক্যারিয়ারের শুরুটা ভালো হয়নি ইমরুলের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বাদ পড়ে যান। অথচ পরের বছরই র‍্যাংকিংয়ে উন্নত কোন দলের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর জিম্বাবুয়েতেও সিরিজ জিতে নেয় টাইগাররা। নিজের ঝলকটা শুরুতেই দেখাতে পারলে তখনও হয়তো পেতে পারতেন বিদেশে সিরিজ জয়ের স্বাদ।

হয়নি। হলো না এবারও। হয়তো হবে কোন দিন। সদা বিনয়ী ইমরুলও আশায় আছেন আবার হয়তো সুযোগ মিলবে। তামিমের সঙ্গীর জায়গাটা কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি বলেই হয়তো মিলবে আবার। কিন্তু আবারও হয়তো এক দুই সিরিজ খেলেই বাদ পরবেন নীরব নায়ক। কষ্ট চেপে তখনও হাসবেন। যেমনটা চেপে গেলেন এদিন।

আর কষ্টটা যে চাপিয়ে রাখেন তা বোঝা গেল তার শেষ কথাতেই। পারফরম করে দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে আপসেট? এমন প্রশ্নে যেন মুখ লুকালেন ইমরুল। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ছোট্ট একটা উত্তর দিয়েই কেটে পরলেন, ‘করার চেষ্টা করি ভালো করার।’ এছাড়া আর কি-ই বা বলার আছে তার?

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

6h ago