ডেইলি স্টারের ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা
রাজধানীর জিগাতলা ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারের চার জন সাংবাদিক ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন জনকে পেটানো হয় ও এক জন নারী সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
ধানমন্ডির ৩/এ এলাকায় শনিবার বিকেল ৬টার দিকে ছবি তুলছিলেন শায়ের রিয়াজ। এসময় লাঠি নিয়ে একজন তাকে পেটাতে থাকে। সঙ্গে চলে লাথি ঘুষি। পেটানোর এক পর্যায়ে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। তার ফোন কেড়ে নিয়েও ভেঙে ফেলা হয়।
নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে শায়ের বলেন, হামলাকারীর সঙ্গে যোগ দিয়ে পুলিশও তাকে পেটানোর পর ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যায়। থানার সামনের চত্বরেও তাকে ফের মারধর করে হাজতে চার ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ডেইলি স্টারের সাংবাদিকরা থানায় গিয়ে অনুরোধ করার পর তাকে ছাড়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শায়েরের ওপর হামলাকারী ব্যক্তি ছাত্রলীগের কর্মী।
ওই থানাতেই আটকে রাখা ডেইলি স্টারের আরেকজন কন্ট্রিবিউটর সাংবাদিকও মারধরের শিকার হয়েছেন। জিগাতলায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ছবি তোলার সময় তাকে আটক করা হয়।
ডেইলি স্টারের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন 'স্টার উইকেন্ড' এর সম্পাদক সুস্মিতা এস পৃথা বলেন, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুর রোডে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তার চড়াও হয়। হামলাকারীরা লাঠি হাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সেখানে ফুট ওভার ব্রিজের ওপর থেকে মিছিলের ভিডিও করছিলেন তিনি। এসময় কয়েকজন ওভারব্রিজে উঠে এসে তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ধর... ধর...’ বলতে থাকে। পৃথা ওভার ব্রিজ থেকে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের দুজন তাকে ধরে ফেলে রাস্তার অপর পাশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার কথা বলে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এর মধ্যেই তিনি ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে দিলেও ছাত্রলীগের যুবকরা তাকে ছাড়েনি। এর মধ্যেই তারা গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।
ভিডিও ডিলিট হয়েছে নিশ্চিত হবার পর তিনি রক্ষা পান।
আরেকজন রিপোর্টার রাফি হোসেন দুপুর ২টার দিকে জিগাতলায় ছাত্রলীগের হামলার মুখে পড়েন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার খবর সংগ্রহ করতে ওই এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি। রাফি বলেন, ঘটনা ভিডিও করার সময় তার সঙ্গে আরও দুই থেকে তিন জন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়।
Comments