শ্রদ্ধায় স্নাত অটল বিহারি বাজপেয়ী
পূর্ণরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অশ্রু-সিক্ত আবেগাপ্লত ভারতবাসী চিরবিদায় জানাল ‘ভারত রত্ন’ প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপায়ীকে।
আজ (১৭ আগস্ট) ভারতীয় সময় বিকাল পৌনে পাঁচটায় দেশটির রাষ্ট্রীয় স্মৃতি স্থলে হিন্দুধর্মীয় রীতি মেনে শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং, লালকৃষ্ণ আদভানী, অমিত শাহ, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ছাড়াও বাংলাদেশের পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, ভুটানের রাজা জিংমে কেসার নামগোয়েল ওয়াংচুং, আফগানিস্থানের সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই ছাড়াও গণ্যমান্যব্যক্তিরা সেখানেই প্রয়াত বাজপায়ীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানান।
এর আগে বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ শ্রদ্ধা জানান। ভারতের তিন বাহিনীর প্রধানরাও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দুপুর পৌনে তিনটায় বিজেপি সদর দফতর থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য বাজপেয়ীর মরদেহবাহী শকট রওনা হয় দিল্লির বিজয় ঘাট রাষ্ট্রীয় স্মৃতিস্থলের দিকে।
এদিকে, দেশজুড়ে আগামী সাতদিন রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। আর একইভাবে আজ (১৭ আগস্ট) অর্ধদিবস ছুটি পালিত হচ্ছে দেশটির কেন্দ্র এবং রাজ্য-শাসিত অঞ্চলগুলোতে। যদিও বেশ কিছু রাজ্যে চলছে পূর্ণদিবস ছুটি।
গতকাল (১৬ আগস্ট) রাতে ভারতের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ নিয়ে রাখা হয় কৃষ্ণ মেনন মার্গে প্রয়াতের বাসভবনে। সেখান থেকে আজ সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে স্বজনদের শ্রদ্ধা জানানোর পর মরদেহবাহী শকটে প্রয়াতের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র সদর দফতরে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতারা সেখানেই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
বিজেপির সদর দফতর থেকে স্থানীয় সময় দুপুরে প্রাক্তন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য। শেষ যাত্রা পথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ শীর্ষ বিজেপি নেতারাও শরিক হন।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আগে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরবিদায় জানাবে।
এর আগে গতকাল (১৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকাল ৫ টা ৫ মিনিটে অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাজপেয়ী।
প্রথিতযশা এই ব্যক্তি শুধু মাত্র রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় কবিও। ছিলেন ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসে বিজেপি। সেবার মাত্র ১৩ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্ব পেয়েছিলেন বাজপেয়ী।
যদিও এর দুবছর পর ১৯৯৮ সালে এক বছরের কিছু বেশি সময়ের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন প্রয়াত এই নেতা। তবে ১৯৯৯ সালের দেশটির জাতীয় লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাকেই জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাতে হয়।
২০০৯ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার পর থেকে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন বাজপেয়ী। ভুগছিলেন ডিমেনশিয়ায় রোগেও। ২০১৫ সালে তাকে ভারতের শীর্ষ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’-এ ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন:
Comments