শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও পারল না বাংলাদেশ
এশিয়ান গেমস ফুটবলে কাতারের বিপক্ষে জয় তুলে সাড়া জাগিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। অনেকেই দেশের ফুটবলের নতুন দিগন্ত দেখেছিলেন সে জয়ে। কিন্তু আবারো আশাহত করেছে লাল-সবুজের দল। ঘরের মাঠে দুর্বল প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও হারল দলটি। ১-০ গোলের ব্যবধানে র্যাংকিং ২০০ নম্বরে থাকা দলের বিপক্ষে হারে মামুনুলরা।
তবে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণই ছিল বাংলাদেশের। একচ্ছত্রভাবেই মাঝ মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয় মামুনুলরা। কিন্তু সঙ্ঘবদ্ধ কোন আক্রমণ গোছাতে পারেনি দলটি। অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়েছেন রনি-রবিউলরা। উল্টো ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে হেরেই বসে বাংলাদেশ। তবে এশিয়ান গেমসে ইতিহাস গড়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১২৩ দলের মাত্র একজন খেলোয়াড়কে এদিন মূল একাদশে রেখেছিলেন ইংলিশ কোচ জেমি ডে। দ্বিতীয়ার্ধে জামাল ভুঁইয়া, জাফর ইকবালদের মাঠে নামালেও বদলায়নি ম্যাচের চিত্র।
৮ মিনিটেই গোল করার মতো সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সাখাওয়াত হোসেন রনি বাড়ানো বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হন অভিষিক্ত রবিউল ইসলাম। তবে দুই মিনিট পর এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে লক্ষ্যভেদ করেন মোহাম্মদ ফজল। এ গোলে অবশ্য কিছুটা দায় রয়েছে গোলরক্ষক শহিদুল ইসলামের। লঙ্কান দল আক্রমণে থাকা অবস্থায়ও কিছুটা এগিয়ে ছিলেন তিনি। সে সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিলেন ফজল। বুদ্ধিদীপ্ত এক শটে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
পরের মিনিটে লঙ্কান তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন রনি। তবে লাভ হয়নি। জটলা থেকে পাওয়া বলে নেওয়া মামুনুলের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৫ মিনিটে লক্ষে থাকেনি রনির দূরপাল্লার শট। পরের মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বলে ফাঁকায় পা ছোঁয়াতে পারলে গোল পেতে পারতেন রনি। ম্যাচের যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে ডি বক্সের বাইরে থেকে কাভিন্দু ইসানের নেওয়া কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দ্বিতীয়ার্ধেও ছিল একই চিত্র। মাঝে মাঠের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ভালো আক্রমণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭৭ মিনিটে দারুণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন বদলী খেলোয়াড় জাফর ইকবাল। কিন্তু তার বাড়ানো ক্রসে কেউ হেড নিতে পারেননি। পাঁচ মিনিট পর থ্রোইন থেকে নেওয়া নাসিরউদ্দিন চৌধুরীর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৬ মিনিটে লঙ্কান ডি বক্সের সামনে জটলায় বল পেয়ে গোলরক্ষকের গায়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন জাফর। ফলে শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় জেমি ডের শিষ্যদের।
এই ম্যাচে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামের। শুধু তাই নয়, রংপুর বিভাগেই এটি ছিল প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ। ম্যাচ নিয়ে আলাদা উন্মাদনা ছিল স্থানীয় ফুটবল ভক্তদের। কিন্তু মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ২১ হাজার দর্শকদের।
Comments