মালদ্বীপে সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান বর্জন করল ভারত

মালদ্বীপের দুটি দ্বীপের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি সেতু উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন দেশটিতে থাকা ভারতীয় কূটনীতিকরা। সেতুটি রাজধানী মালের সঙ্গে যে দ্বীপে বিমানবন্দর রয়েছে তাকে সংযুক্ত করেছে। এই অনুষ্ঠান বর্জনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বন্ধু মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক টানাপড়েনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে সামনে চলে এসেছে।
প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে একটি চীনা কোম্পানির তৈরি করা সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৪ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার চীন-মালদ্বীপ মৈত্রী সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল। স্বাভাবিকভাবেই এতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত অখিলেশ মিশ্র আর ওই অনুষ্ঠানে যাননি। এ ব্যাপারে ভারতের দিক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলা হয়নি।
তবে শুধু ভারতই নয়, দেশটির বর্তমান বিরোধী দলের মুখপাত্র আহমেদ মাহলুফ জানান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা সেখানে উপস্থিত হলেও তাদেরকে হেঁটে যেতে বলায় তারা শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন।
মালদ্বীপ সরকারের সমালোচনা করে তিনি টুইটে বলেন, প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের নিরাপত্তা রক্ষীরা চীনা রাষ্ট্রদূতের গাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিলেও বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূতদের গাড়ি থামিয়ে দিয়ে তাদেরকে হেঁটে যেতে বলেছিলেন। পুরনো বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতি এটি অপমানজনক।
প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন সেতুটিকে দেশের কূটনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে আখ্যা দিলেও তার বিরোধীরা বলছেন, এর মাধ্যমে চীনের ঋণজালে জড়িয়ে পড়েছে মালদ্বীপ। তাদের আরও অভিযোগ পুরো প্রকল্পে ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট সরাসরি এই দুর্নীতিতে যুক্ত।
মালদ্বীপের নির্বাসিত নেতা মোহাম্মদ নাশিদ বলেছেন, চীন যে নীতিতে মালদ্বীপের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তা কেবল ভূমিদখল ও উপনিবেশবাদের সঙ্গে তুলনীয়। মালদ্বীপের মোট ঋণের ৮০ শতাংশই বেইজিংয়ের কাছ থেকে নেওয়া।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, মালদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে সামরিক ঘাঁটি তৈরির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বেইজিং। এ নিয়ে দুই দেশই অনেক দূর অগ্রসর হয়ে গেছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে আর বিশেষ কিছু করারও থাকবে না নয়া দিল্লির।
এদিকে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে দেশটি। শুধু হেলিকপ্টার নয়, সেখানে উপস্থিত ৫০ জন ভারতীয় সেনাকর্মীকেও যাতে ভারত ফিরিয়ে নেয়, সে জন্যও চাপ বাড়াচ্ছে তারা।
Comments