আন্তর্জাতিক

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যালটে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ইন্টারনেট প্রযুক্তি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয় ও ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি প্যানেলের বিশেষজ্ঞরা। তাই আগামী ২০২০ সাল থেকে দেশটির সব ধরণের নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতির পরিবর্তে কাগজের ব্যালটে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব করেছেন তারা। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
২০১৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের চিত্র। রয়টার্স ফাইল ছবি

ইন্টারনেট প্রযুক্তি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয় ও ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি প্যানেলের বিশেষজ্ঞরা। তাই আগামী ২০২০ সাল থেকে দেশটির সব ধরণের নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতির পরিবর্তে কাগজের ব্যালটে ভোট গ্রহণের প্রস্তাব করেছেন তারা। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ সরকারের হস্তক্ষেপ ছিল, তদন্ত সাপেক্ষে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন সিদ্ধান্ত জানানোর পর গত বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্যানেলটি সতর্কতামূলক এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, দেশজুড়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা এবং সঠিকভাবে ভোট গণনা নিশ্চিতে নির্বাচন পরবর্তী তদারকি আরও বৃদ্ধি করা উচিত।

প্যানেল সহকারী ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট লি বোলিঙ্গার বলেন, ‘নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ ভবিষ্যতের ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়াকে হুমকিতে ফেলে দিতে পারে। ফলে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমাদের ভোট গণনা এবং পুনঃগণনার প্রয়োজন হবে। তাই ফেডারেল, স্টেটসহ যুক্তরাষ্ট্রের সবগুলো স্থানীয় নির্বাচনকে অধিকতর নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে।’

‘নিরাপদ ভোট: আমেরিকার গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ শিরোনামের ১৫৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রেরে ভোট গ্রহণের যন্ত্রগুলো প্রায় এক যুগ আগের এবং সেগুলোতে ব্যবহৃত সফটওয়্যার অরক্ষিত হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাছাড়া এইসব মেশিন পরিচালনাকারীদের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও অপ্রতুল।

যদিও প্রচলিত ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থা বাদ দিয়ে, পুরাতন নিয়মে কাগজের ব্যালটে ভোট গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ কেমন হবে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। তবে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রিনান সেন্টার বলছে, আগামী কয়েকবছরের মধ্যে পুরনো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলো পরিবর্তন করতে হবে, যাতে এক বিলিয়ন ডলারের মতো খরচ হতে পারে।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তাকারী প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী এন্ড্রু এপ্পেল বলেছেন, ‘রাজ্যগুলো যদি ডিজিটাল ভোটিং মেশিনের বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে ভালো হয়। অধিকাংশ মার্কিন ভোটারের কাগজের ব্যালটে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোনো কারণে কম্পিউটার অকার্যকর হয়ে পড়লেও আমরা ব্যালট গুণে ফল বলে দিতে পারব।’

নির্বাচন নিরাপদ করতে এ বছরের শুরুর দিকে রাজ্যগুলোকে ৩৮০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়া হয়েছে। তবে এ অর্থ কিভাবে খরচ করা হবে তার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনের অপর লেখক ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) রাজনীতি বিষয়ক বিজ্ঞানী চার্লস স্টিওয়ার্ট এ অর্থকে ‘ডাউন পেমেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা সরকারি ও বেসরকারি যৌথ বিনিময়ের মাধ্যমে ভোট ধারা কার্যক্রমকে সচল রাখতে সহায়তা করে।’

প্রতিবেদনে রাজ্যগুলোর ভোটার তালিকার সমস্যা নিয়ে ফেডারেল সরকারের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ পরামর্শমূলক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে ইলিনয় রাজ্যের ভোটার তালিকায় বড় ধরণের গড়মিল ধরা পড়ে। সে সময় প্রায় ৫ লাখ ভোটারের তথ্য রুশ এজেন্টরা ডাউনলোড করে ফেলেছিল বলে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে, নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত অভিযোগ আসার পর থেকেই ভোটের নিরাপত্তা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন মার্কিন রাজনীতিবেদরা। একটি কমিশনকে এ বিষয়ে গবেষণার জন্য দায়িত্ব দিতে গত জুন মাসে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের সিনেটর রন ওয়েডেন ও অন্য চার ডেমোক্রেটিক সিনেটর মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব তুলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory

Column by Mahfuz Anam: Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory?

With values destroyed, laws abused, institutions politicised, and corruption having become the norm, will victory be worthwhile for the Awami League?

10h ago