৫১ বছরে পদ্মায় বিলীন ২৫৬ বর্গমাইল
পদ্মার ভাঙনে ১৯৬৭ সাল থেকে গত ৫১ বছরে ২৫৬ বর্গমাইল জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যে পরিমাণ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তার আয়তন প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম শহর শিকাগোর সমান।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) আর্থ অবজারভেটরি থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে পদ্মার এই তীব্র ভাঙনের পেছনে দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এটি একটি প্রাকৃতিক, মুক্তভাবে প্রবাহিত নদী যার পাড় রক্ষায় কোনো সুব্যবস্থা নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত, নদীটির দুই ধারে বালুচর রয়েছে যা দ্রুত ভাঙতে পারে।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা পদ্মা নদীর প্রস্থ, গভীরতা ও আকৃতি পরীক্ষা করে দেখেছেন। প্রতিবেদনটিতে ১৯৮৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত নদীটিতে যেভাবে স্রোতের পথ পরিবর্তিত হয়েছে সেটিও ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যেক বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে শুষ্ক মৌসুমে নাসার ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট দিয়ে এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে পদ্মা নদীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে উজান থেকে বয়ে আসা প্রচুর পরিমাণে বালির কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে এই বালু আসার একটি কারণ হিসেবে ১৯৫০ সালের ভূমিকম্প ও এর ফলে সৃষ্ট ভূমিধসকে দায়ী করা হয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, এই নদী দিয়ে উজান থেকে আসা বালি সমুদ্র পর্যন্ত পৌছাতে প্রায় অর্ধ শতাব্দী সময় লেগে যায়।
গত তিন দশকের পদ্মার ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় নদীটির জলস্রোত সংকীর্ণ ও সরল রৈখিক অবস্থা থেকে পরিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চওড়া হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ধারায় বিভক্ত হয়েছে। সম্প্রতি নদীটির স্রোত আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। নাসার স্যাটেলাইটের সাম্প্রতিক ছবিগুলোতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর এলাকায় পদ্মার গতিপথে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এই উপজেলা ও আশপাশের এলাকাগুলোই সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে গত কয়েক বছরে।
Comments