আতঙ্কের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কিছু ধারা বাক স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী- সাংবাদিক ও গণমাধ্যম মালিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় এমন উদ্বেগ জানানোর পরও প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থাতেই গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল-২০১৮-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।
আইনটি পাসের আগে সংশোধনের ব্যাপারে সরকারের তরফে নানা সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তবে গতকাল যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে তাতে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছোটখাটো কিছু বিষয়ে ঘষামাজা বাদে কোনো পরিবর্তনের কথা বলা হয়নি। নতুন করে এতে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ যুক্ত করা হলেও ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস এক্টকে যুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের ৩২ ধারার বহুল সমালোচিত ‘ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি’ শব্দবন্ধে ভাষাগত পরিবর্তনের কথা বলা হলেও বিষয়বস্তু প্রায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
রোববার দেশের দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের সমন্বয়ে গঠিত সম্পাদক পরিষদের এক বৈঠকে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করা হয়। বিবৃতি দিয়ে তারা বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারায় কোনো মৌলিক পরিবর্তনের কথা বলা হয়নি তাই তারা এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ধারাগুলো বাক স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি। এতে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীন সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানিয়ে প্রস্তাবিত এই আইন পাস না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতাখারুজ্জামান গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে অফিসিয়াল সিক্রেটস এক্ট পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। উদ্বেগ জানানোর পরও সাংবাদিকতাকে ঝুঁকিতে ফেলে এমন ধারাগুলো সংশোধন না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংশোধন ছাড়াই ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল পাস হলে জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরি হবে।’
Comments