এমন সূচি বদলও ইতিবাচক বিসিবি প্রধানের কাছে
টুর্নামেন্টের মাঝপথে সূচি বদলে বাংলাদেশকে গ্রুপে দ্বিতীয় করে দেওয়ায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে একদিকে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আবার অন্যদিকে এই সূচি বদলকে ইতিবাচক বলেও মনে করছেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। তবে কীসের জন্য ব্যাখ্যা চাওয়া, তা পরিষ্কার করেননি তিনি।
বৃহস্পতিবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচ দেখতে এসে এশিয়া কাপের সূচি বদলের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানান বোর্ড প্রধান।
এবার এশিয়া কাপে খেলা হচ্ছে দুই গ্রুপে। গ্রুপ সেরা ও দ্বিতীয় হওয়ার উপর নির্ভর করছিল সুপার ফোরের সূচি। কিন্তু গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে ভারত (এ-১) ও আফগানিস্তানকে (বি-১) ‘এ’ ও ‘বি’ গ্রুপ থেকে এক নম্বর দল ধরে সূচি চূড়ান্ত করে ফেলে এসিসি। তাতে ভারতের সবগুলো খেলাই পড়েছে দুবাইতে। এমন সিদ্ধান্তে দুই গ্রুপেরই শেষ ম্যাচ হয়ে পড়ে অর্থহীন।
ভারতের চাওয়া মতো দুবাইতে খেলা দেওয়া নিশ্চিত করতেই সূচিতে হুট করে এই বদল বলে অভিযোগ উঠে। এমন উলট-পালটের পর পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমদ ও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা ক্ষোভও জানান।
তবে এই ব্যাপারে ভিন্নমতই দিলেন বিসিবি প্রধান। তার মতে যেহেতু সেমিফাইনাল পর্বই নেই তাই চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপ নিয়েও কিছু আসে যায় না , ‘এখানে দুটো জিনিস আছে। প্রথম কথা হচ্ছে আমরা লিখিত ব্যাখ্যা ইতিমধ্যে চেয়েছি। কিন্তু মূল যে জিনিসটা হচ্ছে, যা নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছিল, এটা নিয়ে কিন্তু আমাদের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব আগেও ছিল না, এখনো নেই। ওই যে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ। বি-১, বি-২ এসব কিছুই না। সেমিফাইনাল হলে একটা কথা ছিল চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ। ’
এরপরই বোর্ড প্রধান শুনিয়েছেন অদ্ভুত কথা, ‘কথা ছিল যে আজকে খেলার পর যদি জানা হতো সূচিটা কেমন হবে। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে কালকে কার সঙ্গে খেলব আমরা জানি না (আগের সূচিতে থাকলে)। কোথায় খেলব সেটাও জানি না। যদি ইন্ডিয়ার সঙ্গে খেলা হয় তাহলে দুবাইতে। আর পাকিস্তানের সঙ্গে হলে এখানে। কাজেই আমাদের দল কি করবে আজকে খেলে, এখানে রাত্রে খেলার পরে যদি ফল হয়। সকালে জানার পরে আবার এখানে আসবে? কাজেই এটা একটা দ্বিধা ছিল।’
‘শুধু আমাদের জন্য না প্রত্যেকটা দলের জন্য। সেজন্য যেহেতু চার দল চূড়ান্ত হয়ে গেছে, পাকিস্তান (আসলে ভারত) এবং ওমানের (আসলে হংকং) খেলার পর। তখন কিন্তু তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, এখন আমরা সূচিটা দিয়ে দিতে পারি, যা সকলের জন্য ভাল হবে। সকলেই চেয়েছে সূচি দিয়ে দিয়েছে। লিগ খেলা সবার সঙ্গে সবাইকে খেলতে হবে।’
কিন্তু দ্বিধাটা আসলে কেন সেট নিয়েই তালগোল পাকিয়েছেন বোর্ড প্রধান। বুধবার ভারত পাকিস্তানকে হারানোর পরই আসলে ‘এ’ গ্রুপের হিসেব চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আগের সূচিতে থাকলে আজ বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হারালে নিশ্চিতভাবেই পরদিন খেলা পড়ত আবুধাবিতে। আর হেরে গেলে ভারতের বিপক্ষে খেলা পড়ত দুবাইতে। এটা আগে থেকে জেনেই খেলতে নামার কথা বাংলাদেশের। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষার কোন ব্যাপারই এখানে নেই। কারণ বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ।
ভারতকে সুবিধা দিতেই সূচি বদল, এমন অভিযোগের পক্ষেও একমত নন বিসিবি প্রধান। তার মতে ভারত আবুধাবিতে খেলবে না বলে আগে থেকেই নাকি শর্ত ছিল, ‘ভারতের সুবিধা না। ভারতের শর্ত ছিলো ওরা দুবাইতে খেলবে। এ কারণেই ওরা আবুধাবিতে খেলবে না। একারণেই খেলা হচ্ছে দুবাইয়ে।
তাহলে টুর্নামেন্টের ফরম্যাট আগেই কেন সেভাবে করা হলো না। কেন মাঝপথে বদলানো হলো তার কারণ ব্যাখ্যা করেননি তিনি।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে বার্ষিক সভার পরই দায়িত্ব নেবেন নাজমুল। বিভেদ ভুলে বরং সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুর তুলেছেন তিনি, ‘এসিসিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ক্রিকেট এশিয়াতেই সবচেয়ে বড় বাজার, দর্শক। কিভাবে এসিসিকে শক্তিশালী করা যায় এ নিয়েও কথা হয়েছে। বিভেদ থাকলে দুর্বল হয়ে যাবো।’
Comments