বিশ্বমঞ্চে ট্রাম্প-রুহানির বাকযুদ্ধ
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরটি যেন রাষ্ট্রনায়কদের একটি ‘যুদ্ধক্ষেত্রের’ রূপ নিয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বসংস্থাটির সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে এসে নেতারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শক্ররাষ্ট্রগুলোকে উদ্দেশ্য করে জানান দিয়ে যান ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী।’
এ বছরেও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে এসে বিশ্ব নেতারা- বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি পরস্পরের প্রতি বিষেদাগার ঝেড়ে গেলেন। ওয়াশিংটন ও তেহরানের দ্বন্দ্বের কথা তারা বিশ্ববাসীকে জানালেন সাধারণ পরিষদের আসরে এসে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায় জাতিসংঘে বার্ষিক বক্তৃতায় ট্রাম্প ইরানের ক্ষমতাসীনদের “দুর্নীতিবাজ শাসক” বলে অভিহীত করেন। তার ৩৫ মিনিটের বক্তৃতায় ছিলো ইরানের প্রতি সরাসরি আক্রমণ। তিনি বলেন, মোল্লাশাসিত দেশটি পরমাণুবোমা বানানোর চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, দেশটি সিরিয়া, লেবানন এবং ইয়েমেনে জঙ্গিদের সহায়তা দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
ট্রাম্পের ভাষায়, “ইরানের শাসকগোষ্ঠী বিশৃঙ্খলা, মৃত্যু ও ধ্বংসের বীজ বুনে চলছে। তারা প্রতিবেশীদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখছে না। এমনকি, রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্বের প্রতিও না।”
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রপতিও ছিলেন বলিষ্ঠ মনোভাব নিয়ে। তিনি বলেন, “ইরান যা বলছে তা পরিষ্কার ভাষাতেই বলছে। ইরান বলছে- কোনো যুদ্ধ নয়, নয় কোনো অবরোধ বা হুমকি। কোনো রকমের ঠেসাঠেসিও চলবে না।”
বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে রুহানি বলেন, “সবাইকে আইন মেনেই চলতে হবে। যেসব দায়বদ্ধতা রয়েছে তা পূরণ করতে হবে।”
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে নাৎসিশক্তির সঙ্গেও তুলনা করে। রুহানি বলেন, আমেরিকার প্রশাসন একরোখা জাতীয়তাবাদকে উৎসাহ দিচ্ছে। উসকে দিচ্ছে চরমপন্থা। দেশটি বর্ণবাদকে লালন করছে বলেও মন্তব্য করেন রুহানি।
ট্রাম্প প্রশাসন সমস্ত আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকেজো করে দিচ্ছে বলেও বিশ্বনেতাদের সামনে অভিযোগ করেন ইরানের রাষ্ট্রপতি।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘে ট্রাম্প গত বছরের বক্তৃতায় হুমকি-ধামকি দিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার শাসকদের উদ্দেশ্য করে। এবার তিনি তার ক্ষোভ ঝাড়লেন ইরানের ওপর।
Comments