ছাত্র খুনের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বনধ

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে দুজন ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বনধ-এর ডাক দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
West Bengal strike
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে গুলিতে দুজন ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বনধ-এর ডাক দেয় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ছবি: স্টার

পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে দুজন ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বনধ-এর ডাক দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী শক্তি। বনধ সফল করতে কলকাতাসহ রাজ্যের ২২ জেলায় হাজার হাজার বিজেপি সমর্থক-কর্মীরা পথে নেমেছেন।

অন্যদিকে রাজ্য সরকার বনধ ব্যর্থ করতে সরকারি অফিসে শতভাগ হাজিরা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। রাস্তায় হাজার হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

তবে রাজধানী কলকাতায় বনধ-এর প্রভাব দেখা না গেলেও রাজ্যের অন্য প্রায় সব জায়গায় এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বনধ সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে বহু জায়গায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছু জায়গা যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বনধ-এ ট্রেন পরিষেবাও অনেক জায়গায় ব্যাহত হচ্ছে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। কলকাতা ও শহরতলীতে প্রচুর সরকারি বাস দেখা গেছে। তবে বেসরকারি বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি খুব কম সংখ্যক চোখে পড়ছে।

বনধ নিয়ে বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, জোর করে কোথাও বনধ পালন করছে না বিজেপি। বনধ মানুষ সমর্থন করেছে। রাজ্যের সব জেলাতে ভালো সাড়া পাচ্ছি। তবে শাসক দল নিজেরাই হুলুস্থুল করে বেড়াচ্ছে।

ছাত্ররা শিক্ষক চাইলো, আর তাদের বুকে গুলি চললো রাজ্যের এটাই এখন পরিস্থিতি। সাধারণ মানুষের পক্ষেই বিজেপি এই বনধ ডেকেছে বলেও যোগ করে দিলীপ ঘোষ।

রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, জনসমর্থনহীন একটা বনধ পালন হচ্ছে রাজ্যে। মানুষের কোনও সাড়া নেই। বিজেপি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। সেটা রাজ্যবাসী বুঝে গিয়েছেন।

বনধ-এ সমর্থন না থাকলেও উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্যের আরেক বিরোধী শিবির বামফ্রন্ট। ফ্রন্টের অন্যতম শরিক সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ছাত্ররা কি দোষ করেছিল? ওদের আন্দোলনে পুলিশ কেন লাঠি না চালিয়ে গুলি চালালো। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে এই ঘটনায়। এটা এই রাজ্যের মানুষের প্রত্যাশিত নয়। বামেরাও এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেবে সামনে। তবে বিজেপির ডাকা এই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বামেদের কোনও সমর্থন নেই বলেও জানান সুজন চক্রবর্তী।

কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী মনে করেন, রাজ্যের পুলিশ এখন শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। ইসলামপুরের ছাত্র খুনের ঘটনা প্রমাণ করে রাজ্যে পুলিশ প্রশাসন বলে কিছু নেই। তবে বিজেপির বনধ-এ তাদের নৈতিক সমর্থন নেই।

পশ্চিমবঙ্গের এই অচলাবস্থায় কষ্টের মুখোমুখি হচ্ছেন বিদেশি পর্যটকরা। কলকাতার ফ্রি-স্কুল স্ট্রিট, সদর স্ট্রিটের হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক রয়েছেন। যারা বেশির ভাগ চিকিৎসা করাতে আসেন। আজ অনেকেরই ডাক্তার দেখানোর তারিখ ছিল, কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে গাড়ি না পাওয়ায় সময় মতো দেখাতে পারেননি। অনেকের বিকেলে সময় দেওয়া আছে, তারা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন হোটেলে বসে।

একই সঙ্গে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে ট্যাক্সির জন্যও অনেক বাংলাদেশি পর্যটককে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। বনধ-এর প্রভাব পড়েছে ভারত-বাংলাদেশের পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তেও। যানবাহন না পেয়ে বহু বাংলাদেশি পর্যটক বেনাপোলে থেকে গিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago