আন্দোলনে নামবে বিএনপি, পরিকল্পনা ১৫ দিনের মধ্যেই
নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পরপরই সারাদেশে একযোগে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি।
দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে বিএনপি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে সরকারকে যতটা সম্ভব চাপে রাখার ইচ্ছা তাদের।
বিএনপির আন্দোলনে যাওয়া উচিত হবে কি না, এ নিয়ে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পরেই সারাদেশে একযোগে আন্দোলন শুরু করার পক্ষে মত দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
কারণ তাদের ভয়, বিএনপি যদি কোনো আন্দোলন ছাড়াই নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে ক্ষমতাসীন জোট নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে।
বিএনপির একজন ঊর্ধ্বতন নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে গতকাল বলেছেন, ‘আমরা যদি আন্দোলনে যাই, তাহলে সরকার চাপে থাকবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে। এবার আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের নিয়ন্ত্রণ কেউ নিয়ে নিতে পারবে না। অচিরেই আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
আন্দোলনের ব্যাপারে দলের জেলা পর্যায়ের নেতাদের শিগগিরই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আন্দোলন শুরুর আগে তৃণমূলের কর্মীদের উজ্জীবিত করার সম্ভাব্য সকল উপায় বের করতে প্রায় প্রতিদিনই দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বৈঠক করে যাচ্ছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনের পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচিরও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সরকার যদি আমাদের দাবিতে সাড়া না দেয় তাহলে আন্দোলনে নামা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
নির্বাচনকে মাথায় রেখেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করতে কাজ করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করতে ৪০ হাজারেরও বেশি কমিটি গঠন করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, এরিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনে নামার ব্যাপারে তাদের মতামত চেয়েছেন বিএনপির নেতারা। জামায়াতের নেতারা বলেছেন, তারা রাস্তা দখলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন।
গত মাসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফেরার পথে লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচন এবং আন্দোলন নিয়ে তাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তারেকের ঘনিষ্ঠ বিএনপির এক নেতা এই প্রতিবেদকে জানান, গত কয়েক মাস ধরে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারেক রহমান। এছাড়া তিনি বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীরও মতামত নিয়েছেন। তাদের অনেকেই তারেক রহমানকে নির্বাচনে অংশ নিতে এবং দলের দাবি পূরণে আন্দোলনে নামার পরামর্শ দিয়েছেন।
Comments