দায়টা কার? সাকিব, ফিজিও নাকি অন্য কারোর?

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফিরেই সাকিব আল হাসান তার আঙুলের সার্জারি করবেন বলে জানা গেলো। কিন্তু হুট করেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। খেলতে গেলেন এশিয়া কাপে। এরপর দুই ম্যাচ যেতে না যেতেই সে আঙুলে ব্যথা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে সংক্রামণের ফলে দেশে ফিরে দ্রুত ছোট খাট একটি অস্ত্রোপচারও করতে হয়। দেশের সেরা খেলোয়াড়কে নিয়ে এমন টানা হেঁচড়ায় প্রশ্ন উঠেছে অনেক? দায়টা আসলে কার?
Shakib Al Hasan
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে চিকিৎসাধীন সাকিব। ছবি: সংগ্রহ

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফিরেই সাকিব আল হাসান তার আঙুলের সার্জারি করবেন বলে জানা গেলো। কিন্তু হুট করেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। খেলতে গেলেন এশিয়া কাপে। এরপর দুই ম্যাচ যেতে না যেতেই সে আঙুলে ব্যথা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে সংক্রামণের ফলে দেশে ফিরে দ্রুত ছোট খাট একটি অস্ত্রোপচারও করতে হয়। দেশের সেরা খেলোয়াড়কে নিয়ে এমন টানা হেঁচড়ায় প্রশ্ন উঠেছে অনেক? দায়টা আসলে কার?

এশিয়া কাপের মাঝ পথে দেশে ফেরেন সাকিব। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অস্ত্রোপচারের। সে রাতেই ব্যথা আরও বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত রাজধানীর এপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন। তখনই ধরা পরে অঙ্গুলের সংক্রামণের। অস্ত্রোপচার করে দ্রুত আঙুল থেকে পুঁজ বের করে আনা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে নেওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে অ্যাপওয়ার্থি হাসপাতালে চিকিৎসক গ্রেগ হয়ের তত্ত্বাবধানে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে আছেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সংস্করণের অধিনায়ক।

সাকিবের বর্তমান অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। সংক্রামণ অনেকটাই কমে আসছে। তবে আরও সাতদিন থাকতে হবে হাসপাতালে। তিন মাস ঠিকমত পুনর্বাসন করে ফিরলে দেখা যেতে পারে বিপিএলেই। তবে খেলা শুরুর পর ব্যথা হলে ছুরিকাঁচির নিচে যেতেই হবে। কিন্তু তারপরও প্রশ্ন হাতের এমন অবস্থায় এশিয়া কাপ কেন খেললেন সাকিব?

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে যে কোন ধরণের চাপ দেওয়া হয়নি তা বললেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, ‘আমাকে ও (সাকিব) বলেছে, আঙুলের জন্য আমার এই সমস্যা। আমি বলেছি, তুমি ডাক্তারের সাথে দেখা কর। এমন যদি হয়, এখন না করলেও চলবে। তুমি এটা তারপর কর । তারপর মক্কা এবং মদীনায় দেখা। আমি বলেছি, তোমার সিদ্ধান্ত। ও বলল, ফিজিও বলে দিয়েছে অসুবিধা নাই। খেললে খারাপ হতে পারে কি না। বলল, না।’

ফিজিওর কাছ থেকে যদি সবুজ সংকেত পেয়েই থাকেন সাকিব। তাহলে প্রশ্ন হঠাৎ হাতের অবস্থা এতোটা খারাপ হলো কেন? এ প্রশ্ন বিসিবি সভাপতিরও, ‘ও যদি খেলতে গিয়ে ব্যথা পেত তাহলে বুঝতাম। তাহলে এরকম হলো কি করে? হঠাৎ করে হাতে এমন পুঁজ হলো কি করে। এটা আমাদের কাছে বিরাট প্রশ্ন। এর মধ্যে আমি দেবাশীষকে ফোন করি। আমরা সবাই এটা নিয়ে বেশ অবাক। এক দিনের মধ্যে এত পুঁজ, এত সিরিয়াস হলে কি করে?’

তবে পুরো বিষয়টা জানার চেষ্টায় আছে বিসিবি। পাপনের ভাষায়, ‘ওদের (চিকিৎসকদের) সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, সংক্রামণ ওদের পক্ষে বোঝা কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ইনজেকশন দিয়েছে, এখন ওই ইনজেকশনের জন্য হলো কি না জানি না। আগে থেকে একটু থাকলে স্টেরয়ডের জন্য বাড়তে পারে। কিন্তু সেটাও বলা যাচ্ছে না। কোন অভিযোগ করা হচ্ছে না। আসল পরিস্থিতিটা আমরা জানি না, জানার চেষ্টা করছি।’

এশিয়া কাপে খেলতে যাওয়ার পুরো সিদ্ধান্তটা যে সাকিবেরই ছিল তা আরও একবার জানালেন বিসিবি সভাপতি, ‘আমাকে সে (সাকিব) মক্কা-মদীনাতে বলেছে, ফিজিও বলেছে খেললে এটা বাড়ার কোনো সুযোগ নাই। কোনো অসুবিধা নাই। তারপরও বলেছি, একজন ডাক্তার দেখাও। আমার ধারণা ছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা যুক্তরাষ্ট্রে করতে পারে। কিন্তু অস্ত্রোপচার কোনো ডাক্তার করতেই বলেছে এমন নয়। এই জিনিস ছিল সাকিব, ফিজিও ও ডাক্তারের ওপর।’

দিন শেষে এশিয়া কাপে খেলার সিদ্ধান্তটা নিজেই নিয়েছেন সাকিব। দেশের স্বার্থেই। কিন্তু তিনি নিয়েছেন ফিজিও-চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনেই। তাহলে প্রশ্ন দায়টা কার? আর একটু হলেই যে দেশের সেরা খেলোয়াড়কে হারাতে বসছিল বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago