৩ কোটি মানুষের তথ্য চুরি হয়েছে, স্বীকার করল ফেসবুক
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে হ্যাকাররা তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে হানা দিয়ে প্রায় তিন কোটি মানুষের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে যত তথ্য চুরি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছিল এই সংখ্যাটি তার চেয়ে কম হলেও এখন জানা যাচ্ছে সার্চ হিস্ট্রি থেকে শুরু করে ব্যবহারকারীদের গতিবিধি সম্পর্কেও প্রচুর তথ্য খোয়া গেছে।
ফেসবুকের ১৪ বছরের ইতিহাসের এই সবচেয়ে বড় সাইবার হামলার ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে জানা গিয়েছিল, ‘এক্সেস টোকেন’ ও ‘ভিউ এজ’ ফিচারের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের একাউন্টের তথ্য বেহাত হয়েছে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, এই সংখ্যাটি তিন কোটি হবে। তবে এদের মধ্যে কারও পাসওয়ার্ড বা ক্রেডিট কার্ড তথ্য চুরি হয়নি বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।
ফেসবুক স্বীকার করেছে, তিন কোটির মধ্যে এক কোটি ৪০ লাখ একাউন্টের বিস্তারিত প্রায় সব তথ্যই চুরি গিয়েছে। এমনকি ব্যবহারকারীরা ফেসবুকে খোঁজেন এমন ১৫টি তথ্য ও সর্বশেষ ১০টি জায়গার ‘চেক ইন’ এর মতো স্পর্শকাতর তথ্য রয়েছে। এছাড়াও ব্যবহারকারীদের লিঙ্গ, ধর্মবিশ্বাস, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ও যেসব ডিভাইস ব্যবহার করে ফেসবুকে ঢোকা হয় সেসবের তথ্যও রয়েছে। আর শুধুমাত্র ইউজার আইডি ও ফোন নম্বর চুরি হয়েছে এমন প্রোফাইলের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর বাইরে আরও প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারীর সিকিউরিটি টোকেন চুরি করতে সক্ষম হলেও এসব প্রোফাইল থেকে তথ্য চুরি হয়নি বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট গাই রোজেন ব্লগপোস্টে লিখেছেন, নিরাপত্তা ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করতে দুই সপ্তাহ ধরে আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।
ফেসবুকের এই তথ্য চুরি নিয়ে উদ্বিগ্ন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরাও। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান এরিয়া-১ এর প্রধান নির্বাহী ওরেন যে. ফল্কউইজ বলেছেন, এই সাইবার হামলার পেছনে হ্যাকারদের বড় ধরনের উদ্দেশ্য রয়েছে। শুধু ফেসবুকে আক্রমণ চালানো তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। সুদক্ষ হ্যাকাররা এসব তথ্য ব্যবহার করে ‘ফিশিং এটাক’র মতো আরও বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। তথ্য সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
Comments