১৩.৫৫ শতাংশ অগ্নিকাণ্ডের সূচনা সিগারেট থেকে
সব সিগারেটের প্যাকেটেই বিভিন্ন মারণ রোগের ছবিসহ বড় করে লেখা থাকে ধূমপান ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ফুসফুসের রোগের কারণ। ধূমপানে স্বাস্থ্যের এমন ক্ষতির কথা এখন সবারই জানা। কিন্তু এটা কত জন মানুষ জানেন যে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতির বাইরেও নিজের ঘরবাড়ি ও দেশের সম্পদের জন্যও ধূমপান একটি বড় হুমকি?
গত বছর দেশে যত অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তার কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। তাদের তথ্য বলছে, গত বছর দেশে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে ১৮ হাজারের কিছু বেশি। এর মধ্যে ২,৪৫৩টি ঘটনায় আগুনের সূত্রপাত হয়েছে ছুড়ে ফেলা জ্বলন্ত সিগারেট থেকে যা অগ্নিকাণ্ডের সব কারণের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সেই হিসাবে মোট অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে ১৩.৫৫ শতাংশই ঘটেছে ধূমপান থেকে।
গত বছরের সব অগ্নি দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে বিদ্যুতের সর্ট সার্কিট থেকে। এর পরই বেশি আগুন লেগেছে চুলা থেকে। সর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে প্রায় ৩৭ শতাংশ ক্ষেত্রে। আর চুলা থেকে আগুন লেগেছে ২৩.৪ শতাংশ ক্ষেত্রে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সিগারেট থেকে অগ্নিকাণ্ডের যত ঘটনা ঘটছে শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলেই এ ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান বলেন, জ্বলন্ত সিগারেট থেকে আগুন লাগার পেছনে মূল কারণ মানুষের বদভ্যাস। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় ধূমপায়ীরা জ্বলন্ত সিগারেট যেখানে সেখানে ফেলে দেন।
পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ হলেও মানুষ অহরহই এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করছেন। তার ভাষায়, এ কারণেই প্রায় সব জায়গাতেই মানুষকে ধূমপান করতে দেখা যায়। …উদ্বেগের বিষয় হলো জ্বলন্ত সিগারেট থেকে বিপদের বিষয়টি অনেকেই তোয়াক্কা করছেন না।
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গত বছর সিগারেট থেকে যেসব অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তাতে মোট ১৫ কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে।
সময়ের সাথে সাথে দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও বাড়ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৯৬ সালে দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল মোট ৫,৩৭৬টি। ২১ বছরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৩৩৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে বেড়েছে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। ১৯৯৬ সালে যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৬৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা সেখানে গত বছর এই অঙ্ক বেড়ে হয়েছে ২৫৭ কোটি ৪৫ লাখ।
Comments