‘মনে হলো খেলা ছাড়া থাকতে পারব না’

যে স্বপ্ন নিয়ে ফজলে মাহমুদ রাব্বি ক্রিকেটে এসেছিলেন। সেই স্বপ্ন একসময় ফিকেই হতে বসেছিল। কক্ষচ্যুত হয়ে পড়েছিলেন, খেলা টেলা ছেড়ে শুরু করেছিলেন নটা-পাঁচটা চাকরি। কিন্তু কিছু দিন পর ক্রিকেটের টানেই ফিরতে হয়েছে। নানান ধাপ পেরিয়ে সেই রাব্বি এখন জাতীয় দলে। জানালেন, জীবনের বিরূপ পরিস্থিতিই তাকে শিখিয়ে কি করে এগিয়ে যেতে হবে সামনে।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ফজলে রাব্বির অভিষেক সেই ২০০৪-০৫ মৌসুমে। শুরুর দিকে ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল। ডাকাবুকো পারফরম্যান্স দিয়ে এইচপি দলেও জায়গা মিলেছিল। ফর্ম হারাতে সময় লাগেনি, দেশের ক্রিকেটের মূলস্রোত থেকেও হারিয়েছেন দ্রুতই। অবস্থা এমন যে ক্রিকেটই ছেড়ে দিয়েছিলেন। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ঢুকিয়ে গিয়েছিলেন চাকরিতে। সেখানে মন বসল না, ফিরলেন সেই ২২ গজেই।
ফজলে রাব্বির গল্পটা এরমধ্যে চাওর হয়েছে। জাতীয় দলে ঢুকার পর অনুশীলনের প্রথম দিন নিজের কৌতূহল জাগানিয়া অতীত ফের কথা বলেছেন তিনি, ‘আসলে খেলতে খেলতে হয় না এমন, আমি সামনেও যাচ্ছি না। আমার পড়াশোনাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি ওই চিন্তা করেছি, অন্য কোন পেশায় যায় কিনা। সেই সময় চিন্তা করেছিলাম খেলা ছাড়ার। কিন্তু কিছুদিন চাকরি করার পর আমি আমার মনকে সায় দিতে পারলাম না। আমার মনে হল, আমি খেলা ছাড়া থাকতে পারব না। তারপর আবার চলে আসলাম, আবার খেলায় মন দিলাম।’
ক্যারিয়ারের শুরুতে আগ্রাসী ব্যাটিং ধরণে সুনাম কুড়িয়েছিলেন, কিন্তু ওই ধরণ বেশি টেকসই নয় বলে বদনামও জুটেছিল। ধারাবাহিকভাবে রান করা আত্মস্থ করতে ভুগছিলেন। সেই সংকট কেটেছে চাপহীন থাকার ফরমুলায়। এক মৌসুমে ঠিক করেছিলেন এবারই শেষ, এরপর তুলে রাখবেন ব্যাট-প্যাড। যা হবার হবে ভেবে খেলেছেন নিজের মতো। তাতেই মিলেছে সাফল্য। বুঝেছেন সামনে অপেক্ষায় আছে আরও ঝলমলে দিন, ‘ওই বছর আমি আমার বন্ধুদের বলেছিলাম, আমি খেলব না। এরপর একদম খোলা মনে যখন খেলতে গিয়েছিলাম, তখন আমার মনে কোন চাপ ছিল না। শেষ পর্যন্ত পারফর্ম ভাল হয়েছে। এরপর থেকেই আসলে পরিবর্তনটা শুরু, মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। বুঝেছি চাপ ছাড়া খেললে ভাল খেলত পারব। এখন ওইরকম চিন্তাই করি না খেলা নিয়ে। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
Comments