জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছে টাইগাররা
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা দারুণ করেছিল জিম্বাবুয়ে। বিশেষকরে ওপেনার সিফাস জুওয়াও ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক। ৪ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে আসে ৪৮ রান। কিন্তু এরপর মোস্তাফিজুর রহমান ও নাজমুল ইসলাম অপুর আঘাতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। আর রানআউটে কাটা পরে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার বিদায়ে বিপদটা আরও বেড়েছে সফরকারীদের। এরপর সিকান্দার রাজাও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ফলে দারুণভাবে তাদের চেপে ধরেছে টাইগাররা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১০০ রান। । ২৪ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ক্রেইগ আরভিন। তার সঙ্গী শেন উইলিয়ামস উইকেটে আছেন ৫ রানে।
এদিন জিম্বাবুয়ের ইনিংসে প্রথম আঘাতটা করেন পেসার মোস্তাফিজ। দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে ব্যাট প্যাডের ফাঁক গলিয়ে বোল্ড করেন জুওয়াওকে (৩৫)। এ ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে ব্রেন্ডন টেইলরকে (৫) ঘূর্ণি জাদু দেখান বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। দারুণ এক ডেলিভারিতে টেইলরের অফস্টাম্প উড়িয়ে দেন তিনি। দুই ওভার পর বড় ধাক্কাটা খায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হন অধিনায়ক মাসাকাদজা (২১)। ইমরুলের থ্রোটা খুব ভালো না থাকলেও তা ধরে ঝাঁপিয়ে পরে স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীম। এরপর দারুণ এক বলে রাজাকেও (৭) বোল্ড করেন অপু।
ইমরুলের সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ের পুঁজি বাংলাদেশের
দীর্ঘদিন পর সুযোগ পেয়েই এশিয়া কাপে কার্যকরী এক ইনিংস খেলেছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু হারিয়েছিলেন নিজের পছন্দের জায়গা। এরপর আবার নিস্প্রভ। তবে ঘরের মাঠে নিজের পছন্দের পজিশন ফিরে পেয়েই তেতে উঠলেন। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে নিজকে আবারো প্রমাণ করলেন এ ওপেনার। আর তার ব্যাটেই লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭১ রান করেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দলে আসা যাওয়ার মধ্যেই থাকেন ইমরুল। যত না অফ ফর্মের জন্য তার চেয়ে বেশি ইনজুরির কারণে। তবে দলে যে নিয়মিত জায়গা পাওয়ার যোগ্য খেলোয়াড় তা ভালো ভাবেই বুঝিয়ে দিলেন তিনি। দারুণ এক ইনিংসে শুধু নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরিই তুলে নেননি, বাংলাদেশের ইনিংসের মেরামতটাও হয় তার ব্যাটেই। এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করে আউট হয়েছেন ৪৯তম ওভারে।
দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল নেই। তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্বটা ভালোভাবেই সামলেছেন ইমরুল। কিন্তু ওপেনিং জুটির দুর্দশা কাটেনি। ফাইনাল ছাড়া এশিয়া কাপের ব্যর্থতার নজির ধরে রেখে এদিনও ১৭ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পরে দলটি। এরপর ইমরুলের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়ে ভালো কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। কিন্তু তিনি মাভুতার বাজে বলে লেগে ঘোরাতে গিয়ে উইকেট হারান। ফলে আবারো চাপে পরে বাংলাদেশ।
এরপর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে জুটি বেঁধে সে চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন ইমরুল। স্কোর বোর্ডে ৭১ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু এরপর আবার সব এলোমেলো। তৃতীয় স্পেলে বল করতে এসে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন কাইল জার্ভিস। ২ রানের ব্যবধানে তিন টাইগার ব্যাটসম্যানকে শিকার করেন তিনি। তিন জনই নিজেদের উইকেট দিয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্রেন্ডন টেইলরের তালুবন্দি হয়ে। তখন মনে হচ্ছিল দুইশত রান করাই কষ্টকর হয়ে যাবে টাইগারদের জন্য।
কিন্তু সে শঙ্কা দূর হয় ওই ইমরুলের ব্যাটেই। সঙ্গী হিসেবে পান দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরে আসা তরুণ সাইফউদ্দিনকে। ১২৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। ফলে বাংলাদেশ পায় ২৭১ রানের লড়াই করার পুঁজি। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১৪৪ রান করেন ইমরুল। ১৪০ বলে ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। দারুণ ব্যাটিং করেন সাইফউদ্দিনও। ৬৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ রানের ইনিংস খেলেন এ তরুণ অলরাউন্ডার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৭১/৮ (লিটন ৪, ইমরুল ১৪৪, ফজলে ০, মুশফিক ১৫, মিঠুন ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ০, মিরাজ ১, সাইফউদ্দিন ৫০, মাশরাফি ২*, মোস্তাফিজ ১*; জার্ভিস ৪/৩৭, চাতারা ৩/৫৫, তিরিপানো ০/৬০, মাভুতা ১/৪৮, রাজা ০/৩৭, উইলিয়ামস ০/৩২)।
Comments