শিক্ষক নির্যাতন মামলায় সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি
শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে নির্যাতনের মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ সেলিম ওসমানকে আজ মঙ্গলবার অব্যাহতি দিয়েছেন ঢাকার এক আদালত।
মামলাটি নিয়ে দীর্ঘ শুনানির পর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকম ইমদাদুল হক এই আদেশ দেন। তাতে বলা হয়, মামলায় সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এদিকে অপর আসামি মো. অপুকে আদালতের সামনে হাজির করে, তার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার প্রমাণ রয়েছে বলে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আদেশে বিচারক বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনসহ অন্যান্য দলিলপত্র ঘেঁটেও সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার জন্য কোনো উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দেওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট নন। ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক এবং শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত বলেও জানান।
২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে সেলিম ওসমানের সামনে কান ধরে উঠবস করতে দেখা যায়। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনার সূত্রপাত হয়।
কান ধরে উঠবসের কারণ হিসেবে মুসলমানদের ‘ধর্মীয় অনুভূতি’তে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে। এই অজুহাতে তাকে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি।
ঘটনাটি তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার তাঁকে আবার প্রধান শিক্ষক করা হয়।
দোষীদের বের করতে মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনাটির বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। এই তদন্তেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয় এবং বলা হয়, শ্যামলকে মারধর করে কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
Comments