রাষ্ট্রপতি কোন অর্থে রাষ্ট্রের ‘পতি’?

বাংলাদেশের সংবিধানে ইংরেজি ‘প্রেসিডেন্ট’ শব্দের বাংলা করা হয়েছে ‘রাষ্ট্রপতি’। যদিও প্রেসিডেন্ট শব্দের আরেকটি বাংলা ‘সভাপতি’, যেটি বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রধানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তার মানে ‘রাষ্ট্রপতি’ হোক কিংবা ‘সভাপতি’, দুটি ক্ষেত্রেই ‘পতি’ শব্দটি রয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানে ইংরেজি 'প্রেসিডেন্ট' শব্দের বাংলা করা হয়েছে 'রাষ্ট্রপতি'। যদিও প্রেসিডেন্ট শব্দের আরেকটি বাংলা 'সভাপতি', যেটি বিভিন্ন দল ও সংগঠনের প্রধানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তার মানে 'রাষ্ট্রপতি' হোক কিংবা 'সভাপতি', দুটি ক্ষেত্রেই 'পতি' শব্দটি রয়েছে।

বাংলা একাডেমি 'পতি' শব্দের অর্থ লিখেছে স্বামী। আরও কয়েকটি অর্থ লিখেছে। যেমন: প্রভু, কর্তা, পালক, রক্ষক, রক্ষাকর্তা, অধীশ্বর, অধিপতি, রাজা, নেতা, নায়ক, প্রধান ব্যক্তি, পরিচালক। দেখা যাচ্ছে প্রধান ব্যক্তি অর্থেও পতি ব্যবহৃত হয়। সেই হিসেবে রাষ্ট্রপতি মানে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি হতে পারে। কিন্তু তারপরও 'পতি' শব্দটি শুনলে পুরুষবাচক মনে হয়। ফলে বাংলাদেশে যদি ভবিষ্যতে কখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হন (এবারও স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরীর নাম শোনা গিয়েছিল), তাহলে তাকে রাষ্ট্রপতি বলে সম্বোধন করাটাই খুব যুৎসই হবে না। ফলে প্রেসিডেন্টের বাংলা রাষ্ট্রপতির বিকল্প কিছু করা না গেলে ইংরেজিতে 'প্রেসিডেন্ট'  বলা যায় কি না, সেটি ভেবে দেখা যেতে পারে। তবে সেজন্য সংবিধানে একটা ছোট্ট সংশোধনী লাগবে।

সংবিধান বলছে, কোনো অনুচ্ছেদের বাংলা ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে (অনুচ্ছেদ ১৫৩)। তার মানে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে 'রাষ্ট্রপতি' বলাটাই অধিকতর শুদ্ধ।

প্রেসিডেন্টের বাংলা কেন রাষ্ট্রপতি করা হলো তার একটি কারণ হতে পারে এই যে, ১৯৭২ সালে যখন সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, তখন শব্দ ব্যবহার ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে জেন্ডার সেনসিটিভটি বা সংবেদনশীলতা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। সর্ব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা বিধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধানও (অনুচ্ছেদ ১৯) বলছে, 'জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন'। আরেকটি অনুচ্ছেদে (২৮) বলা হয়েছে, 'কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানে কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।'

আধুনিক রাষ্ট্র ও সমাজে এখন নারী ও পুরুষের সমমর্যাদা নিশ্চিতে এইজাতীয় শব্দকে কমন জেন্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমন এখন আর 'শিক্ষিকা' বলা হয় না। বরং নারী পুরুষ উভয়কেই 'শিক্ষক' লেখা হয়। একইভাবে অধ্যাপিকা কিংবা জনাবাও লেখা হয় না। এরই ধারাবাহিকতায় এখন সংগঠন ও দলের প্রধানকে সভাপতি না বলে সভাপ্রধান বা ইংরেজিতে চেয়ারপারসন লেখা হয়। চেয়ারপারসনের খুব সুন্দর বাংলা এখনও করা যায়নি। যেসব শব্দের যুৎসই বাংলা করা যায়নি সেগুলো ইংরেজি ব্যবহার করাই ভালো। যেমন স্পিকারের বাংলা করা হয়নি। আবার নেতা শব্দটি এখন কমন জেন্ডার হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। নারী নেতাকে এখন নেত্রী বলার প্রবণতা কমছে। যেমন সংসদ নেতা ও বিরোধীদলীয় নেতা নারী হলেও তাকে সংসদ নেত্রী বা বিরোধীদলীয় নেত্রী বলা হয় না। এখানে নেতা বলতে উভয় লিঙ্গকেই বোঝানো হয় এবং এটাই অধিকতর কমিউনিকেটিভ বা যোগাযোগবান্ধব।

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় যখন সংবিধানে অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছিল, সংসদ চাইলে তখন এইসব ছোটখাট পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারত। যেমন সংবিধানে এখনও 'মহিলা' শব্দটি বহাল। অথচ এখন মহিলা শব্দটিকে নারীদের জন্য সম্মানজনক মনে করা হয় না। বরং মহিলা শব্দটির স্থলে অনায়াসে নারী লেখা যেত।

এটা গেল শব্দের মারপ্যাঁচ। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যিনি রাষ্ট্রের পতি, মানে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি, তিনি আসলে কোন অর্থে রাষ্ট্রের প্রধান? রাষ্ট্র পরিচালনায় তার এখতিয়ার কতটুকু বা সংবিধান তাকে কতটুকু ক্ষমতা দিয়েছে—সেটিই মূল আলোচনা।

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মো. সাহাবুদ্দিন নিঃসন্দেহে একজন যোগ্য ব্যক্তি। পেশাগত জীবনে তিনি রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মো. সাহাবুদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনে একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাবনা জেলায় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর তাকে তিন বছর কারাবরণ করতে হয়।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংক উত্থাপিত পদ্মা সেতু সংক্রান্ত কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ভূমিকা পালন করেন।

কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার যেহেতু খুবই সীমিত এবং অনেক ক্ষেত্রেই পদটি আলঙ্কারিক হওয়ায় একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেও তিনি আসলে কী করতে পারেন?

সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ বলছে, কেবল প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তার অন্য সব দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। কিন্তু এই বিধান পড়ে এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। কেননা নির্বাচনে জয়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রধানই যে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেটিই স্বীকৃত। রাষ্ট্রপতির পক্ষে এখানে অন্যথা করার সুযোগ নেই। প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটিও রাষ্ট্রপতি ঠিক করেন না। কারণ প্রধান বিচারপতি কে হবেন, সেটি নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ার না হলেও এটি অনেক বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।

কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করা বা কারো সাজা মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার যে ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে, সেখানেও তিনি স্বাধীন নন। বরং প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই তিনি কাউকে ক্ষমা করেন। অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেন তার সবই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী করেন।

জাতীয় সংসদে বছরের প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেন, সেটিও মন্ত্রিসভায় অনুমোদন নিতে হয়। অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ তাকে যেরূপ কথা বলার অনুমতি দেবেন, রাষ্ট্রপতি কেবল ততটাই বলবেন।

সাধারণ বিলের ব্যাপারে মতামত দিতে পারলেও অর্থবিলে রাষ্ট্রপতি কোনো ধরনের মতামত বা পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করে সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন না। সংসদ যা পাস করে রাষ্ট্রপতিকে তাতেই সম্মতি দিতে হয়।

সংসদে অনুমোদিত হওয়ার পর সব বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়। তিনি সাধারণত সব বিলেই সই করেন। কেননা তিনি যদি কোনো বিলে সই না-ও করেন, তাহলে ১৫ দিন পরে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদিত হয়ে যাবে, অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি সই করেছেন বলে গণ্য হবে। আবার রাষ্ট্রপতি যদি কোনো বিল সংশোধনের জন্য সংসদে ফেরত পাঠান, সেটিও সংশোধনে সংসদ বাধ্য নয়। ফলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের রাষ্ট্রপতিগণ রাষ্ট্রের সবচেয়ে সম্মানীয় নাগরিক এবং একটি প্রতীক ছাড়া কিছু নন। সংবিধানই তার হাত পা বেঁধে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে সরকার ও দলীয় প্রধান হওয়ায় দলের কোন সদস্যকে কী পদ দেওয়া হবে; সংসদ নির্বাচনে কারা মনোনয়ন পাবেন; স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদে কারা নিয়োগ পাবেন; সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে কারা মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন; কারা সংসদে দলের চিফ হুইপ বা হুইপ নির্বাচিত হবেন—এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতা ভোগ করেন। তিনি চাইলে কারো সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন, না করলেও আইনত সেটি অবৈধ নয়।

উল্লেখ্য, সংসদীয় পদ্ধতিতে ফিরে আসার প্রাক্কালে সংবিধানে যে দ্বাদশ সংশোধনী আনা হয়, তখন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা এতটাই নিরঙ্কুশ করা হয় যে পুরো রাষ্ট্র ও সরকার কাঠামোয় রাষ্ট্রপতি আলঙ্কারিক পদে পরিণত হয়।

নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের নাম ঘোষণার পরে তাকে উদ্ধৃত করে একাধিক টেলিভিশন চ্যানেল ব্রেকিং নিউজে লিখেছে: 'আমি চাই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, সব দল অংশ নিক।'

আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি কী ভূমিকা পালন করবেন বা ওই নির্বাচন নিয়ে তিনি কী ভাবছেন বা নির্বাচনটি তিনি কেমন দেখতে চান, সে বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মী তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও আগ্রহ আছে। সেই আগ্রহ থেকেই রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে তার কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে সাংবাদিকরা যে এই প্রশ্নটি করবেন, সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিদ্যমান সংবিধানের আলোকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে এবং সেখানে ব্যক্তিগতভাবে বা সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির কি কিছু করার আছে কি না, সেটিই প্রশ্ন? যদি নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তখনও কি রাষ্ট্রপতি একক সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু করতে পারেন? পারেন না। কারণ ওইরকম পরিস্থিতিতে যদি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়, সেখানেও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন লাগে (অনুচ্ছেদ ১৪১ ক)।

সুতরাং কে রাষ্ট্রপতি হলেন; তাকে রাষ্ট্রপতি বলা হবে নাকি প্রেসিডেন্ট; তিনি কতটা যোগ্য ও দক্ষ এবং রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে তিনি রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কতটা নিরপেক্ষ থাকবেন—সেসব প্রশ্নের বাইরে বরং সাংবিধানিকভাবেই রাষ্ট্রের যাবতীয় ক্ষমতা যেহেতু প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তার ক্ষমতার যেহেতু কোনো ভারসাম্য নেই—ফলে এখন এই প্রশ্নটিই করা উচিত যে, গণতন্ত্র ও বৃহত্তর দেশের স্বার্থে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা উচিত কি না? কেননা, যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রপতিকে যদি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিতে হয়, তাহলে সেখানে কোনো ভারসাম্য থাকে না এবং সাংবিধানিকভাবে তাকে রাষ্ট্রের প্রধান বলা হলেও কার্যত কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া তার কিছু করার এখতিয়ার নেই। সেক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার একক ক্ষমতা থাকা উচিত এবং সেজন্য যে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে, সেখানে সব দলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি।

আমীন আল রশীদ: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English
Civil society in Bangladesh

Our civil society needs to do more to challenge power structures

Over the last year, human rights defenders, demonstrators, and dissenters have been met with harassment, physical aggression, detainment, and maltreatment by the authorities.

9h ago