পাওয়ার প্লেতেও দেখা হয়েছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং
তখন পড়ন্ত বিকেল, অনুশীলনের একদম শেষ দিক। সৌম্য সরকারের সঙ্গে নামলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাজানো হলো পাওয়ার প্লের ফিল্ডিং। তাতে এক ওভার করে তিন দফায় ব্যাট করলেন তারা। এর আগে স্লগ ওভারের পরিস্থিতিতেও ব্যাট করেছেনঅভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার ম্যাচ পরিস্থিতির অনুশীলনে অনেকরকমভাবেই খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখেছেন শ্রীধরন শ্রীরাম।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল পরামর্শক মাঠে দাঁড়িয়ে থেকে বোলারদের দিয়েছেন নির্দেশনা, ব্যাটসম্যানদের বেধে দিয়েছেন চ্যালেঞ্জ। মাহমুদউল্লাহ ভিন্ন ভূমিকায় একাধিকবার নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে মাহমুদউল্লাহ থাকবেন কিনা তা নিয়ে আছে দোলাচল। মাহমুদউল্লাহ ছাড়াও বাড়তি ওপেনার হিসেবে জায়গা পাওয়ার লড়াইয়ে থাকা সৌম্যের বেলায় কি হবে, এসব প্রশ্নের সমাধান আপাতত শ্রীরামের কাছে।
ওপেনার ভূমিকায় মাহমুদউল্লাহ!
সৌম্যের সঙ্গে পাওয়ার প্লেতে খেলার ভূমিকায় নেমে তিন দফায় তিনটি বড় শট খেলেন মাহমুদউল্লাহ। প্রতিটি দফায় এক ওভার করে সুযোগ পান তারা। প্রথম দফায় সৌম্য মোকাবেলা করতে পারেন কেবল এক বল, এক রান নিয়ে মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দেওয়ার পর বাকি পাঁচ বল খেলে তিনি মারেন এক বাউন্ডারি। পরের দফায় সৌম্য এক চার, এক ছয় মেরে মাহমুদউল্লাহকে দিলে তিনিও মারেন এক ছয়। শেষ দফায় মাহমুদউল্লাহ এক চার মেরে সৌম্যকে স্ট্রাইক দিলে তিনি মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হয়ে আবার সুযোগ পেয়ে বাকি ২ বলে তুলেন চার রান।
স্লগ ওভারের মাহমুদউল্লাহ
এর আগে সাত নম্বর পজিশনে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে স্লগ ওভারের পরিস্থিতিতে নামেন মাহমুদউল্লাহ। শ্রীরাম ফিল্ডিং পজিশন সাজিয়ে বোলারদের দেন নির্দেশনা। ব্যাটারদের জানিয়ে দেন খেলা চলছে শেষের ছয় ওভারের। মাহমুদউল্লাহ থিতু হতে সময় নিয়েছেন। পরে মেরেছেন এক চার ও এক ছয়।
ইয়াসির আলি ছিলেন সাবলীল
লম্বা সময় পর চোট কাটিয়ে ফেরার পথে থাকা ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বিকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। তিন দফায় সুযোগ পেয়ে দুবার আউট হলেও ব্যাটে-বলে সংযোগ ছিল ভাল। প্রথম দফায় বিশাল দুই ছক্কার সঙ্গে তিনি মারেন তিন বাউন্ডারি।
মোসাদ্দেক ও আফিফের পাঁচ দফার ব্যাটিং
আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বারবার পরখ করেছেন শ্রীরাম। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমানদের বলে আফিফ দুবার আউট হলেও তাকে মাঠে রেখে দেন টেকনিক্যাল পরামর্শক। নির্দিষ্ট ওভার পর্যন্ত ব্যাট করিয়ে পরের আরও দুই দফা সুযোগ দেন। সেই দুই দফাতেও তিনবার আউট হন আফিফ।
একই অবস্থা মোসাদ্দেকের। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর এক ওভারে একইভাবে গালিতে ক্যাচ দেন দুবার। তবু তাকে চালিয়ে যেতে বলা হয়। মোসাদ্দেক কয়েকটি বড় শট মেরেছেন। বেশিরভাগই ছিল স্পিনারদের বলে।
সৌম্যকে যেমন দেখা গেল
শুরুতে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে পাওয়ার প্লের পরিস্থিতে নামেন সৌম্য। এই দফায় এক ছক্কা, দুই চার মারেন তিনি। তবে নির্দিষ্ট ওভার পর আউট না হলেও তাকে উঠিয়ে নেওয়া হয়, শান্তও বেরিয়ে যান। নামানো হয় ভিন্ন আরেক জুটি।
শেষ বিকেলে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে এক ওভার করে তিন দফায় কয়েকটি বল খেলার সুযোগ পান সৌম্য। তাতে একবার আউট হয়ে তিনি মারেন দুই ছক্কা আর দুই চার।
শান্তর সুযোগ এসেছে একাধিকবার
সকালে তিন নম্বরে নেমে প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন শান্ত। পরে আবার সুযোগ পান তিনি। বৃষ্টির পর নেমে পুল করে এক ছক্কা, স্কয়ার লেগে ঠেলে এক চার পান এই বাঁহাতি। শেষ দিকে আরও তিনবার সুযোগ পেয়েছেন। মাঝের ওভারের পরিস্থিতিতে ইয়াসির আলির সঙ্গে নামানো হয় তাকে।
মাঝের ওভারে ব্যাট করলেন লিটন
দলের সেরা ওপেনার হলেও পাওয়ার প্লেতে লিটন দাসকে ব্যাট করতে দেখা যায়নি। ম্যাচ পরিস্থিতির অনুশীলনে দুই দফাতেই এই ডানহাতি ব্যাট করেছেন মাঝের ওভারের সময়। তবে তাতেও বেশ সাবলীল দেখা গেছে তাকে। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা এই ব্যাটার পুল করে অনায়াসে ছক্কা মেরেছেন, ফ্লিক করে চার আদায় করেছেন। অন ড্রাইভে দেখিয়েছেন নিয়ন্ত্রণ। তবে শেষ দিকে আর ব্যাট করতে দেখা যায়নি তাকে।
ফিল্ডিং করার পাশাপাশি টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে নিবিড় আলোচনায় পাওয়া গেছে লিটনকে।
এলোমেলো মোস্তাফিজ, সাদামাটা সাইফুদ্দিন
মোস্তাফিজুর রহমান কয়েক দফাতেই বল করেছেন। বল করেছেন পাওয়ার প্লে ও স্লগ ওভারের পরিস্থিতিতে। খুব একটা ভাল করতে পারেননি। বেশ কিছু ওয়াইড করেছেন, স্লটে দিয়েও মার খেয়েছেন।
এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খরুচে বল করেছিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও। ম্যাচ পরিস্থিতির অনুশীলনেও তাকে সেরা অবস্থায় মেলেনি। আফিফকে একবার আউট করলেও বাকিটা সময় মার খেয়েছেন। অনেকগুলো ফুলটসও করতে দেখা গেছে তাকে।
Comments