মেয়েদের খেলাধুলোয় বদলাচ্ছে পাকিস্তানের চেহারা

দ্য ডেইলি স্টারকে এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার জানালেন, পাকিস্তানে সব ধরনের খেলাধুলোতেই এখন মেয়েরা বেশ অগ্রসর।
Nida Dhar
নিদা দার। ছবি: সংগ্রহ

এক যুগেরও বেশি সময় আগে নিদা দার যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করেন, তখনো চারপাশে প্রতিবন্ধকতার কঠোর দেয়াল। সমাজের বাঁকা কথা, পরিবারের দ্বিধার মাঝে বিশ্বাসটা ছিল কেবল নিজের ভেতর। এক যুগ পর ক্যারিয়ারের চূড়ায় এসে এখন তিনি দেখছেন ইতিবাচক হাওয়া। দ্য ডেইলি স্টারকে এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার জানালেন, পাকিস্তানে সব ধরনের খেলাধুলোতেই এখন মেয়েরা বেশ অগ্রসর।

২০১০ সালে পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অভিষেক নিদার। ১১৬টি টোয়েন্টি খেলে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৮ উইকেট তার। অফ স্পিন বল করে ৯৪ ওয়ানডেতেও নিয়েছেন ৮৯ উইকেট। উইকেট শিকারে সেখানে তার উপরে আছেন কেবল সানা মীর।

মেয়েদের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বড় ভরসাদের একজন নিদা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ  ম্যাচে ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে রেখেছেন ভূমিকা। পরের ম্যাচের আগে দলের অনুশীলনের ফাঁকে দ্য ডেইলি স্টারকে নিদা জানান পাকিস্তানে তাদের শুরুর সময়টার কথা, 'যখন শুরু করি তখন মেয়েদের জন্য ব্যাপারটা কঠিন ছিল। আপনারা জানেন আমরা পাকিস্তানি, সেদিক থেকে কঠিন ছিল। অনেকে অনেক কথা বলত। আমাদের সেরকম পরিবেশ বা সুযোগ সুবিধাও ছিল না। তবে আমরা সামনের দিকে এগুতে চেয়েছি,  মেয়েরা হাল ছাড়েনি। এখন অনেক মেধাবী ক্রিকেটার এসেছে। পরিস্থিতিও বদলাচ্ছে, এখন অনেক সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে। মেয়েদের জন্য ভালো অবস্থা হচ্ছে। পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করা সব সময় গর্বের। এখন পরিবার থেকেও সমর্থন পায় সবাই।'

নিদা অবশ্যই পরিবার থেকে বরাবরই সমর্থন পেয়ে এসেছেন। তার বাবা খাওয়াজা রশিদ হাসান করাচির হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলছেন। বাবার হাত ধরেই ক্রিকেটে পা পড়ে নিদার। নিদা জানান তার বাবার মতো এখন আরও অনেক বাবা মেয়েদের হাত ধরে ক্রিকেটে আনতে উৎসাহি হচ্ছেন,  'আমি যখন শুরু করি তখন অনেক কঠিন ছিল। এখন জিনিসটা বদলে যাচ্ছে অনেক। মেয়েরা এখন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারছে। পরিবার এখন বাধা দিচ্ছে না সেভাবে, বাবারাও সহায়তা করছেন। শুধু ক্রিকেট নয়, এভাবে যেকোন খেলায় মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে। এখন কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারলে ব্যাপারটা আরও সাবলীল হয়ে যাবে।'

'দেখুন  আগে পাকিস্তানের মেয়েরাও ভাবত ক্রিকেট খেলতে এলে বিয়ে হবে না, বাচ্চা নেওয়া যাবে না। পারিবারিক জীবন থাকবে না। বিসমাহ মারুফকে দেখে সেই চিন্তাও কিন্তু  এখন বদলাচ্ছে। পিসিবিও বিসমাহ মারুফকে দারুণ সহায়তা করে। শিশুকে সঙ্গে রাখতে সুবিধা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে ভাবনা জায়গাটার বদল হচ্ছে।'

এক যুগ আগেও মেয়েদের খেলাধুলোয় নামমাত্র অর্থনৈতিক সুবিধা ছিল। এখন সেই পরিস্থিতিরও বদল হয়েছে। মেয়েদের খেলাধুলোয় উৎসাহি হওয়ার এটাও একটা কারণ,  'সেটা (অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়া) বলতে পারেনএকটা কারণ। পিসিবি এখন অনেক খেলার আয়োজন করে। মেয়েদের এখন অর্থনৈতিক সহায়তা বেড়েছে। আমরা এখন পিসিবির কেন্দ্রিয় চুক্তিতে আছি। এসব দেখেও অনেকে খেলায় আসতে উৎসাহী হচ্ছে।'

সিলেটের উইকেট, নিজেদের লক্ষ্য

সিলেটের উইকেট নিয়ে রীতিমতো অভিযোগ জানিয়ে বসেছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তান ওপেনার সিদ্রা আমিন ম্যাচ  জেতার পরও  উইকেট যে টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ না সেটা উল্লেখ করেছেন। অভিযোগ না থাকলেও বাকি দেশের খেলোয়াড়রাও বিস্ময় আড়াল করেননি। তবে স্পিনার হওয়ায় এমন উইকেট পেয়ে বেশ খুশি নিদা,  'অবশ্যই টুর্নামেন্ট খুব ভালো চলছে তবে খুব চ্যালেঞ্জিং আবহাওয়া ও প্লেয়িং কন্ডিশনের কারণে। উইকেট স্পিনারদের সহায়তা করছে। স্পিনার হিসেবে এটা আমার জন্য ভালো (হাসি)। ব্যাটারদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জিং। আমাদের ব্যাটাররা এই চ্যালেঞ্জ নিবে।''

'আমরা উপমহাদেশের উইকেট এমনিতে জানি যেটা মন্থর ও নিচু থাকে। আমাদেরও সেরকম ভেবে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই রান করতে হবে।'

উইকেট মন্থর ও নিচু বাউন্সের হওয়ার পেছনে খেলা শুরুর সময় একটা কারণ বলে মনে করেন নিদা, 'কাল বেলা খেলা শুরু হওয়ায় এমনিতেই বোলারদের পক্ষে থাকে পরিস্থিতি। এটা একটু ভিন্ন ব্যাপার যে সকাল বেলা টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট করতে নামা। '

 

Comments

The Daily Star  | English
Metro now connects Uttara with Motijheel

Uttara-Motijheel Metro: 8am-8pm service not before April

Commuters may have to wait until July for service until midnight on the entire Uttara-Motijheel section, hints Metro rail authorities

4h ago