এবার আশা জাগিয়েও পারল না বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে  ৭  উইকেটে হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আগে ব্যাট করে জোড়া ফিফটিতে ১৭৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। এক বল আগে ওই রান পেরিয়ে যায় পাকিস্তান।
hasan mahmud

লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের ঝড়ো দুই ফিফটিতে স্কোরবোর্ডে ছিল জুতসই পুঁজি। তবে ক্যাচ হাতছাড়া করার পাশাপাশি বাজে ফিল্ডিং আবার বাড়াল আক্ষেপ। সম্ভাবনা জাগিয়েও ত্রিদেশীয় সিরিজে একটি জয়ের দেখা পেল না বাংলাদেশ।

ক্রাইস্টচার্চে বাংলাওয়াশ ত্রিদেশীয় সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হারল সাকিব আল হাসানের দল। বৃহস্পতিবার শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে  ৭  উইকেটে হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আগে ব্যাট করে জোড়া ফিফটিতে ১৭৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। এক বল আগে ওই রান পেরিয়ে যায় পাকিস্তান।

পাকিস্তানের রান তাড়ায় ফিফটি করেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে কাজের কাজ করেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। রিজওয়ানের মন্থর ব্যাটিংয়ে বাড়তে থাকা চাপ ২০ বলে ৪৫ রানের ঝড়ে নিভিয়ে দেন এই বাঁহাতি।

শেষ ৬ ওভারে তাদের জিততে দরকার ছিল ৬২। শেষ ২ ওভারে ১৪। ১৯তম ওভারে দারুণ বল করে রিজওয়ানকে আউট করে নাটকীয়তার আভাস দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। তবে শেষ ওভারে ৮ রান আর বাঁচাতে পারেননি পুরো ম্যাচে বাজে বল ও রিজওয়ানের ক্যাচ ছাড়া মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

পাকিস্তানের হয়ে ৫৬ বলে সর্বোচ্চ ৬৯ করেন রিজওয়ান। অথচ ৩২ বলে ৩২ রানেই আউট হতে পারতেন তিনি। রিজওয়ান জীবন পান সাইফুদ্দিন সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়ায়। অধিনায়ক বাবর খেলে যান ৪০ বলে ৫৫ রানের ইনিংস। 

উদ্বোধনী জুটিতেই ১০১ রান তুলেন তারা। তবে রানের গতি মন্থর থাকায় আশা ছিল বাংলাদেশ। প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটে পাকিস্তান তুলে ৭৩। শেষ ১০ ওভারে বাকি ১০১ রান তুলতে মূল ভূমিকা ছিল নাওয়াজের। ২০ বলে ৫ চার আর ১ ছক্কায় গতিপথ বদলে দেন তিনি। 

রান তাড়ায় পাকিস্তান ওপেনাররা আবার তাদের ধরন অনুযায়ী আনেন সতর্ক ও ভালো শুরু। বাংলাদেশের বোলাররাও আলগা দিয়ে তাদের চাপে ফেলতে পারেননি।  প্রথম ১০ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে পাকিস্তান তুলে ৭৩ রান। 

একাদশ ওভারেই উইকেটের দেখা পেত বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের বলে চাপে থাকা রিজওয়ান ফ্লিক করে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ফাইন লেগে। সেই ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি সাইফুদ্দিন। ৩২ রানে জীবন পান রিজওয়ান। পরের ওভারে বল হাতে এসেও দলকে হতাশায় ডুবান এই পেসার। নো বল, ওয়াইড, তিন চারে ১৯ রান দিয়ে পাকিস্তানের সব চাপ সরিয়ে দেন তিনি। 

পরের ওভারে হাসান মাহমুদ এসে ফেরান বাবরকে। তুলে মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ধরা দেন ৪০ বলে ৫৫ করা পাকিস্তান অধিনায়ক। এক বল পরেই হায়দার আলিকে দারুণ ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন হাসান। বাংলাদেশের ম্যাচে ফেরার আভাস দেখা দিয়েছিল তখন। 

শেষ ৬ ওভারে ৬২ রান দরকার দাঁড়ায় পাকিস্তানের। তাসকিন তার নিজের চতুর্থ  ওভারে দেন ১০। সাকিব নিজের তৃতীয় ও দলের ১৫তম ওভার করেন খরুচে। মোহাম্মদ নাওয়াজের হাতে খান দুই চার, এক ছয়। ওভারে দেন ১৭ রান। ম্যাচ চলে যায় পাকিস্তানের নাগালে। 

পরেও বেহাল দশা ছিল সাইফুদ্দিনের। বল করতে এলেই স্লটে ফেলেছেন, লেগ স্টাম্পের বাইরে ব্যাটারদের দিয়েছেন জায়গা। 

শেষ দুই ওভারে যখন দরকার কেবল ১৪। তখন অনিয়মিত বোলার সৌম্যকে ডেকে আনেন সাকিব। ওয়াইড লাইনে দারুণ বল করে কেবল ৬ রান দিয়ে রিজওয়ানকে আউট করে দেন তিনি। কিন্তু শেষ ওভারে আর লাভ হয়নি। সাইফুদ্দিনের প্রথম ৫ বল থেকে ১১ রান তুলে ম্যাচ শেষ করে দেয় পাকিস্তানিরা। 

এর আগে টস জিতে  ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দলকে চাপে ফেলে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মন্থর ব্যাটিংয়ে সঙ্গীকেও চাপে ফেলে দেন। ভালো শটে শুরু সৌম্য দ্রুত রান আনার চেষ্টায় দেন আত্মাহুতি। প্রথম ৯ বলে ১ রান করা শান্ত দুই চার মেরেও করতে পারেন ১৫ বলে ১২। 

তৃতীয় উইকেটে এরপর দারুণ ব্যাটিং ঝলকে দলকে দিশা দেন সাকিব-লিটন। একের পর এক বাউন্ডারিতে মাঝের ওভারে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লিটন দলকে রাখেন স্বস্তিতে। সাকিবও তার সঙ্গে আগ্রাসী হলে ইতিবাচক আবহ ছড়িয়ে পড়ে। জুটিতে ৫৫ বলে ৮৮ আনেন তারা। ৩১ বলে ফিফটি করা লিটন নিজের জন্মদিনে থামেন ৪২ বলে ৬৯ করে। সাকিবও ৪২ বল খেলে আউট হন ৬৮ রানে। কিন্তু এরপর আর কোন ব্যাটার চাহিদা মেটাতে পারেননি। ইনিংসে শেষ ওভারে স্রেফ ৩ রান নিতে পারেন নুরুল হাসান সোহানরা। অন্তত ১০ রানের আক্ষেপ তাই এদিনও পুড়িয়েছে বাংলাদেশকে।

 

Comments

The Daily Star  | English

No confrontations, no use of force, Quader warns independents

Awami League General Secretary Obaidul Quader today cautioned the AL leaders running as independents not to engage in confrontations with party nominees or use any force

1h ago