দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুঁড়িয়ে ১৭ বছরের আক্ষেপ ঘোচাল অস্ট্রেলিয়া

১৭ বছর আগে শেষবার ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর আরও তিনবার প্রোটিয়ারা সফর করলেও সাদা পোশাকের সিরিজে একবারও শেষ হাসি হাসতে পারেনি অজিরা। অবশেষে ডেভিড ওয়ার্নার-ক্যামেরন গ্রিনদের হাত ধরে সেই আক্ষেপ ঘুচল তাদের। এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন টেস্টের সিরিজ জিতে নিলো তারা।
২০০৫-০৬ মৌসুমে রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া সবশেষ ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারিয়েছিল প্রোটিয়াদের। পার্থে প্রথম ম্যাচ ড্র হলেও মেলবোর্ন ও সিডনিতে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল স্বাগতিকরা। এরপর ২০০৮-০৯, ২০১২-১৩ ও ২০১৬-১৭ মৌসুমে তিনবার অজিদের তাদের মাটিতেই টেস্ট সিরিজ হারের তেতো স্বাদ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইনিংস ও ১৮২ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দেশের মাঠে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। ১ উইকেটে ১৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা সফরকারীরা গুটিয়ে যায় ২০৮ রানে। এদিন বাকি ৯ উইকেটের বিনিময়ে আর ১৮৯ রান যোগ করতে পারে তারা। কাজে আসেনি ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টেম্বা বাভুমার একক লড়াইয়ে পাওয়া ফিফটি। অজি অফ স্পিনার নাথান লায়ন শিকার করেন ৩ উইকেট।
দলীয় ৪৭ রানে সারেল এরউইয়ার উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এই ওপেনার করেন ২১ রান। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে চতুর্থ দিনে অজিদের প্রথম সাফল্য এনে দেন মিচেল স্টার্ক। হাতে চোট নিয়েই বল করতে থাকেন এই বাঁহাতি পেসার। খানিক বাদে ২৮ রান করে ফিরে যান থিউনিস ডি ব্রেইনও। স্কট বোল্যান্ডের বলে তার ক্যাচ নেন স্টিভেন স্মিথ।
টিকতে পারেননি খায়া জন্ডো। রানআউট হয়ে তিনি ফিরে গেলে ৬৫ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর ৬৩ রানের জুটি গড়ে খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা চালান বাভুমা ও কাইল ভেরেইনে। ৪০ বলে ৩৩ রান করে ভেরেইনে বোল্যান্ডের শিকার হয়ে ফিরলে আলাদা হন দুজন। মার্কো ইয়ানসেনকে দ্রুত ফেরান লায়ন।
কেশব মহারাজকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ার প্রয়াস ছিল বাভুমার। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে ১৩ রান করে রানআউট হন মহারাজ। ভাঙে ৩০ রানের জুটি। সঙ্গী হারিয়ে বাভুমা পরের ওভারেই বিদায় নেন। সমাপ্তি ঘটে তার ১৪৪ বলে ৬৫ রানের ইনিংসের। তাকে ফেরানোর পর কাগিসো রাবাদাকেও তুলে নেন লায়ন।
শেষ উইকেটে লুঙ্গি এনগিডি ও আনরিখ নরকিয়ার ২৭ রানের জুটিতে দুইশ ছাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ। ৬৯তম ওভারে এনগিডিকে বোল্ড করে দেন স্মিথ। ফলে ২০৪ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। উইকেট শিকার করেন হাত ঘুরানো পাঁচ অজি বোলারই।
ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন বাঁহাতি অজি ওপেনার ওয়ার্নার। দলের একমাত্র ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। এই টেস্টের আগে ফর্ম নিয়ে ভীষণ চাপে ছিলেন তিনি। সেটা ঠেলে সরিয়ে ২৫৫ বল মোকাবিলায় ২০০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তার কাঁধে চড়ে ৮ উইকেটে ৫৭৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
চোটের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে পারেননি অলরাউন্ডার গ্রিন। তিনি প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন ২৭ রানে। তার তোপে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৮৯ রানে।
Comments