রান উৎসবের ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে সমতায় শ্রীলঙ্কা
শুরুতে ঝড় তুললেন ওপেনার কুসল মেন্ডিস। মাঝে রানের চাকা সচল রাখলেন চারিথ আসালাঙ্কা। শেষদিকে তাণ্ডব চালিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দুইশ পার করালেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। লক্ষ্য তাড়ায় দশম ওভারে ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলল ভারত। সেই বিপর্যয়ে দাঁড়িয়ে সুরিয়াকুমার যাদব ও আক্সার প্যাটেল করলেন ফিফটি। আগ্রাসী হলেন শিভাম মাভিও। তবে তাদের দারুণ চেষ্টা সত্ত্বেও হার মানতে হলো স্বাগতিকদের।
বৃহস্পতিবার পুনেতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৬ রানে জিতেছে লঙ্কানরা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২০৬ রান তোলে তারা। জবাবে পুরো ওভার খেলে ৮ উইকেটে ১৯০ রান করে ভারত। তিন ম্যাচের সিরিজে চলছে ১-১ ব্যবধানে সমতা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নাটকীয় লড়াইয়ে ২ রানে জিতেছিল হার্দিক পান্ডিয়ার দল।
লঙ্কানদের পক্ষে মেন্ডিস ফিফটি হাঁকিয়ে ৩১ বলে ৫২ রান করেন ৩ চার ও ৪ ছক্কার সাহায্যে। ২০ বলে হাফসেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়া শানাকা খেলেন অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংস। মাত্র ২২ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ২ চার ও ৬ ছক্কা। ভারতের হয়ে সমান ৩ চার ও ছক্কায় ৩৬ বলে ৫১ রান করেন সুরিয়াকুমার। আক্সার খেলেন ৬৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। ৩১ বল খেলে তিনি মারেন ৩ চার ও ৬ ছক্কা।
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় সফরকারীরা। ৮.২ ওভারে ৮০ রানের জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা ও মেন্ডিস। সেখানে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন মেন্ডিস। ২৭ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করার পর বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে তাকে বিদায় করেন যুজবেন্দ্র চাহাল।
এরপর খেই হারায় শ্রীলঙ্কা। একশ ছোঁয়ার আগেই আরও ২ উইকেট হারায় তারা। পরের ওভারেই ভানুকা রাজাপাকসেকে বোল্ড করে দেন পেসার উমরান মালিক। আরেক ওপেনার নিশাঙ্কার ধীরগতির ইনিংসের ইতি টানেন আক্সার। ৩৫ বলে ৩৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
আসালাঙ্কাকে সঙ্গ দিতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তাকে সাজঘরে পাঠান বাঁহাতি স্পিনার আক্সার। ছক্কায় এগোতে থাকা আসালাঙ্কা চড়াও হতে গিয়েই ডিপ মিডউইকেটে তালুবন্দি হন শুবমান গিলের। ১৯ বলে ৪ ছয়ে ৩৭ রান করেন তিনি। আসালঙ্কার পর ভানিন্দু হাসারাঙ্গাকেও নিজের ঝুলিতে তোলেন উমরান। গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ নেন হাসারাঙ্গা।
১৬ ওভার শেষে লঙ্কানদের রান দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৩৮। সেই অবস্থান থেকে তারা বড় পুঁজি পায় শানাকার কল্যাণে। সপ্তম উইকেটে চামিকা করুনারত্নের সঙ্গে ২৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। সেখানে করুনারত্নের ভূমিকা ছিল প্রায় দর্শকের। তিনি ১০ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন। শানাকার অবদান ১৭ বলে ৫২ রান।
নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আক্সার ৪ ওভারে ২ উইকেট নেন ২৪ রানে। ৩ উইকেট নিলেও খরুচে ছিলেন উমরান। ৪৮ রান দেন তিনি। সবচেয়ে বেশি মার খান আরেক পেসার মাভি। তার ৪ ওভার থেকে আসে ৫৩ রান।
ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ৪ উইকেট হারায় ভারত। দুই ওপেনার ইশান কিশান ও গিলকে একই ওভারে তুলে নেন পেসার কাসুন রাজিথা। অভিষিক্ত রাহুল ত্রিপাঠিকে ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে দেননি দিলশান মাদুশাঙ্কা। ৫ বলে ৫ রান করে উইকেটরক্ষক মেন্ডিসের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি।
পান্ডিয়াও একই কায়দায় বিদায় নেন করুনারত্নের শিকার হয়ে। দিপক হুডার উইকেট শিকার করেন লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা। রীতিমতো এলোমেলো হয় পড়ে স্বাগতিকরা। ১০ ওভারে তাদের রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৬৪। ফলে বাকি ১০ ওভারে দরকার পড়ে ১৪৩ রান। প্রায় অসম্ভব এই সমীকরণও একটু হলে মিলিয়ে ফেলেছিল ভারত। কিন্তু শেষটা রাঙাতে পারেনি তারা।
ষষ্ঠ উইকেটে সুরিয়াকুমার ও আক্সার ৪০ বলে যোগ করেন ৯১ রান। সপ্তম উইকেটে আক্সার ও মাভি আনেন ২২ বলে ৪১ রান। আক্সার ২০ ও সুরিয়াকুমার ৩৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন। মাভির ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। ১৫ বলে সমান ২ চার ও ছয় মারেন তিনি।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২১ রান দরকার ছিল ভারতের। সেই রোমাঞ্চকর মুহূর্তে প্রথমবারের মতো বল হাতে তুলে নেন শানাকা। তৃতীয় বলে আক্সারকে লং অফে করুনারত্নের ও শেষ বলে মাভিকে এক্সট্রা কভারে মহেশ থিকশানার ক্যাচ বানান তিনি। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান দেন ম্যাচসেরা শানাকা।
Comments