'হাথুরুসিংহে পিছনে কোনো কথা বলে না, যা বলে সামনে বলে'

ছবি: এএফপি

২০১৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধান কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তখন শোনা গিয়েছিল, ক্রিকেটারদের অনেকের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। এমনকি তিনি খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও নিবেদনের ঘাটতি নিয়েও ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। সেই হাথুরুসিংহে যখন দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন সামনে ড্রেসিং রুমের পরিস্থিতি কেমন হতে পারে তা নিয়ে থাকছে সংশয়। তবে বিসিবি টিম ডিরেক্টর ও খুলনা টাইগার্সের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন আছেন ইতিবাচক। হাথুরুসিংহের স্পষ্টভাষী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রশংসাও করেছেন তিনি।

গত ৩১ জানুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিসিবি জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন হাথুরুসিংহে। এর আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত একই পদে ছিলেন তিনি। ৫৪ বছর বয়সী এই শ্রীলঙ্কান কোচের অধীনে সেসময় বাংলাদেশ পেয়েছিল বেশ কিছু বড় সাফল্য। তবে দায়িত্বের শেষ পর্যন্ত ড্রেসিং রুমের নিয়ন্ত্রণ তিনি ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারেননি। তারকা ক্রিকেটারদের কয়েক জনের পাশাপাশি অনেকের সঙ্গেই তার বনিবনা হচ্ছিল না। অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের কারণে তাকে কড়া হেডমাস্টার তকমাও দেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের কাছে সুজন অবশ্য হাথুরুসিংহের গুণগানই গেয়েছেন, 'খুব পরিচ্ছন্ন ড্রেসিং রুম ছিল, যখন হাথুরুসিংহে ছিল। দেখুন, আমরা সব সময় একটা কথা বলি, গণমাধ্যমে আমিও শুনি যে কড়া হেডমাস্টারের মতো কথা বলে ও। আমার মনে হয়, সে এতটাও কড়া নয়। যেরকম করে আমরা বলি, সেরকম কিন্তু ও না। ও যেটা হয়... আমি ব্যক্তিগতভাবে কী চাই, আমার পিছনে কথা না বলে সামনে কথা বলুক। এটাই তো ভালো মানুষের লক্ষণ। আমি মনে করি, হাথুরুসিংহে ভালো মানুষ। ও পিছনে কোনো কথা বলে না, যা বলে সামনে বলে।'

এমন অনেক কোচের সঙ্গেই সুজন কাজ করেছেন, যারা একেক জায়গায় একেকরকম কথা বলেন। তবে হাথুরুসিংহে তার কাছে একদম আলাদা, 'পিছনে কথা চালাচালির চেয়ে একজন খেলোয়াড়কে যদি আপনি সামনে থেকে বলেন, তোমার থেকে আমি এটা চাই বা তোমার এই জিনিসটা ভালো না, আমি এটা খারাপ তো দেখি না। এটা যদি কড়া হেডমাস্টার হয়ে যায়, তাহলে ও কড়া হেডমাস্টার। তবে আমি মনে করি, আমি অনেক কোচের সঙ্গে কাজ করেছি বাংলাদেশে যারা সামনে একরকম, পিছনে অন্যরকম কথা বলে। কিন্তু আমি হাথুরুর ব্যাপারে একটা কথা বলব, হাথুরুর এই গুণটা আমার দারুণ লাগে যে ও যা বলে সামনে বলে।'

ড্রেসিং রুমে হাথুরুসিংহেকে অভিজ্ঞ ও তরুণ সব খেলোয়াড়কেই সম্মান করতে দেখেছেন এই বিসিবি পরিচালক, 'সাকিব কিংবা তামিম, নিঃসন্দেহে তারা সম্মানিত, বড় খেলোয়াড়, সিনিয়র খেলোয়াড়, গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় আমাদের দলের। কিন্তু সে ওই বৈষম্য তৈরি করে না দলের মধ্যে। একজন তরুণ খেলোয়াড়ের যে সম্মানটা পাওয়া উচিত, আমার মনে হয়, সে সম্মানটা হাথুরুসিংহে সব সময় সবাইকে দিয়েছে।'

হাথুরুসিংহের অভিজ্ঞতার ঝুলি এতদিনে আরও সমৃদ্ধ হওয়ায় সুজনের আশা, তার দ্বিতীয় মেয়াদেও বাংলাদেশ ভালো ফল করবে, 'আমি নেতিবাচকভাবে নিতে চাই না। দেখুন, তখন যে সময় ও ছিল, ও নিজেও তরুণ (কোচ হিসেবে) ছিল। আমাদের যে একটা অবস্থা ছিল যে আমরা জিততে পারছিলাম না। আমাদের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছে তখন। এখন তো পরিস্থিতি অন্যরকম। হাথুরুসিংহেও অনেক পরিণত, যে কথাটা বললাম। আমার মনে হয়, যদি আমরা ইতিবাচকভাবে নেই, সব কিছু ঠিক থাকে, আমার মনে হয় না যে আমরা খারাপ করব ওর অধীনে। আমাদের ভালো করারই কথা।'

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Prof Yunus named among Time’s 100 Most Influential People of 2025

A tribute article on Prof Yunus was written by Hillary Clinton for the magazine

3h ago