‘হোম অব ক্রিকেটে’ খেলে রোমাঞ্চিত তারা

Physically challenged Cricket
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/ স্টার

কারো এক হাত নেই, পায়ের সমস্যা থাকায় কেউ হাঁটছেন খুঁড়িয়ে। কেউ জন্মগতভাবে শারীরিক অনেক প্রতিবন্ধকতায় ভুগছেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এমন ক্রিকেটাররা সুযোগ পেলেন 'হোম অব ক্রিকেটে' খেলার। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা যে ড্রেসিংরুমে বসেন সেখানেই বসলেন তারা। ম্যাচ শেষের সব আনুষ্ঠানিকতার পরও যেন সবুজ গালিচা ছেড়ে যেতে মন চাইছিল না তাদের।

গত ৬ মে পূর্বাচলের শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সাইটে শুরু হয়ে বিসিবির আয়োজনে ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। বৃহস্পতিবার ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করা হয় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। তাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য  ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড (বিসিএপিসি) ৫৩ রানে ইউনিসার্ভ ডিজেবল ক্রিকেট টিম ফর বাংলাদেশকে (ইউডিসিটিভি) হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।

টুর্নামেন্টে ২২০ রান করে সেরা হন মাহফুজুর রহমান। মিরপুরের মাঠে প্রথমবার খেলতে পেরে বিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি, 'আমাদের সুন্দর একটা টুর্নামেন্ট হয়েছে, বিসিবিকে ধন্যবাদ এখানে খেলার সুযোগ করায়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও যে এভাবে খেলা যায়, এটা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে। সবচেয়ে ভালো লাগল ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ায়। কোচ, পরিবার,স্যাররা সবাই সহযোগিতা করেছে বলে এ পর্যন্ত এসেছি। অধিনায়ক সুমিত দা উনি কানাডায় থাকেন এখন, উনিও আমায় সহযোগিতা করেছেন।'

সাকিবের মতন ৭৫ নম্বর জার্সি নিয়ে খেলেন দ্রুপম পত্রনবিশ তীর্থ। বাঁহাতি স্পিনের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও বেশ পটু তিনি। হাতে প্রতিবন্ধকতা নিয়েও খেলেছেন ঢাকার প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে। এই টুর্নামেন্টে ১৭ উইকেট নিয়ে হন সেরা বোলার। মিরপুরের মাঠে খেলা তার কাছে স্বপ্ন পূরণের মতন,  'এটা তো অনেকেরই স্বপ্ন থাকে, এই মাঠে খেলার। আজকে খেলতে পারলাম। খুবই ভালো লাগছে। যারা ক্রিকেট খেলে, ছোটবেলা থেকে সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার। এখন একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আস্তে আস্তে হয়তো পূরণ হবে।' 

তীর্থ বল করেন সাকিবের মতই। সাকিবের জার্সি নম্বরও চাপিয়েছেন গায়ে। জানিয়েছেন সাকিবই তার আইডল,  'সাকিব ভাই তো আমাদের সবার আইডল। ছোট বেলা থেকেই উনার খেলা ভাল লাগত। সেখান থেকে আমি জার্সি নম্বরটা নিয়েছি। উনার সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল বিকেএসপিতে। আমি তখন অনূর্ধ্ব-১৭ ক্যাম্প করছিলাম।'

স্বাভাবিকভাবে তাদের কারোরই পেশা ক্রিকেট নয়। অন্য চাকরির ফাঁকে ছুটি নিয়ে খেলতে এসেছেন। বিসিবির আর্থিক সহায়তা পেলে নিয়মিতই খেলতে চান তারা।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ আয়োজনে ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি তাদের খেলা দেখে বেশ মুগ্ধ। জানালেন, আইসিসি কখনো বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের নিয়ে কোন টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে সেখানে বাংলাদেশের দল তৈরি করে পাঠাবেন তারা।

এদিন উৎসাহ দেওয়ার জন্য নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খানদের মাঠে দেখা গেছে। আকরাম আবার বিসিবির এই কমিটির দায়িত্বেও আছেন। আগামীতে তাদের নিয়ে আরও কিছু খেলা আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

July 6, 2024: 'Bangla Blockade' announced

Beyond Dhaka, protesters hold the streets with equal resolve

21h ago