ওমানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আরও কাছে জিম্বাবুয়ে
দুরন্ত ছন্দে থাকা শন উইলিয়ামস আবারও হয়ে উঠলেন উত্তাল। টুর্নামেন্টে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে তিনি জিম্বাবুয়েকে পাইয়ে দিলেন বিশাল পুঁজি। রান তাড়ায় কেশপ প্রজাপতির সেঞ্চুরিতে দারুণ জবাব দিচ্ছিল ওমানও। তাকে থামিয়ে খেলায় ফেরার পর শেষ দিকেও স্বাগতিকদের হুঙ্কার দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ নাদিম। তবে সব বাধা পেরিয়ে আরেকটি জয়ে বিশ্বকাপের বেশ কাছে চলে গেছে জিম্বাবুয়ে।
বৃহস্পতিবার বুলাওয়েতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সুপার সিক্সে ওমানকে ১৪ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। এই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেল ক্রেইগ আরভিনের দল। বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে আর একটি জিতলেই ভারতের টিকেট নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। অন্য দুই ম্যাচ হারলেও থাকবে সুযোগ। তবে এই হারের পর ওমানের কার্যত আর কোন সুযোগ থাকল না।
আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ের করা ৩৩২ রানের জবাবে ৩১৮ পর্যন্ত যেতে পেরেছে ওমান।
Zimbabwe continue their winning streak to start the Super Six stage with an important win #CWC23 | #ZIMvOMA: https://t.co/Q8Wfk9rOEs pic.twitter.com/EDrkugEHvX
— ICC (@ICC) June 29, 2023
দারুণ জয়ে জিম্বাবুয়ের নায়ক উইলিয়ামস। ১০৩ বলে ১৪ চার, ৩ ছক্কায় ১৪২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এদিনও ব্যাটিং-বোলিং আর ফিল্ডিং মিলিয়ে অবদান রাখেন সিকান্দার রাজা। ৪৯ বলে ৪২ করার পর গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রো আনেন। পরে নেন দারুণ এক ক্যাচ।
রেকর্ড ৩৩৩ রান তাড়ায় দলের ২৯ রানে জতিন্দর সিংকে হারায় ওমান। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ না দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হয় জিম্বাবুয়ে। শুরু ধাক্কা উড়িয়ে দারুণ জুটি পেয়ে যান প্রজাপতি আর আকিব ইলিয়াস। বেশ কিছু বাউন্ডারি বের করে তারা রানরেটের চাপও দমিয়ে রাখেন।
আকিবকে স্টাম্পিং করে মহা গুরুত্বপূর্ণ ৮২ রানের জুটি ভাঙেন রাজা। এরপর অধিনায়ক জিসান মাসুদকে এক পাশে রেখে উড়ছিলেন প্রজাপতি। জিসান থিতু হয়ে একটি শট খেলতে গিয়ে পেশিতে টান লেগে মাঠ ছাড়েন, ৪৪ রানের জুটি থামে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। পরে তিনি ফেরেন ৮ম উইকেট পড়ার পর। কিন্তু কঠিন সমীকরণ মেলানোর অবস্থা তার ছিল না।
জিসানের চোটে মাঠ ছাড়ার পরও দমে যাননি প্রজাপতি। তার উড়ে চলা তবু থামছিল না। আয়ান খানকে নিয়ে আরেক জুটি গড়তে থাকেন তিনি। ৯২ বলে পেয়ে যান দারুণ সেঞ্চুরি। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওমানের প্রথম কোন সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন ডানহাতি ব্যাটার। সেঞ্চুরির পর পরই অবশ্য তার ডানা ছেঁটেছেন মুজারাবানি। দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা এই পেসারকে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। লং অন থেকে অনেকখানি ছুটে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ হাতে জমান রাজা। ম্যাচের তখন অনেকটা টার্নিং পয়েন্ট বলা যায়।
ম্যাচে ফেরা জিম্বাবুয়ে এরপর চেপে ধরে ওমানকে। রিচার্ড এনগারাভা, টেন্ডাই চারারা মিলে গতিতে পরাস্ত করতে থাকেন তাদের লোয়ার অর্ডার। পর পর উইকেট পড়তে থাকায় রানরেট হয়ে যাচ্ছিল চড়া, সেই পারদ আর নামানো হয়নি এশিয়ার দলটির। তবে আটে নেমে কয়েকটি বাজে বল কাজে লাগিয়ে খেলা জমানোর আভাস দিচ্ছিলেন নাদিম। তার ১৮ বলে ৩০ রানের ঝড় কেবল আক্ষেপের কারণই হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির।
এর আগে টস হেরে খেলতে নামা জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার আরভিন আর জয়লর্ড গুম্বি আনেন সতর্ক শুরু। দ্বাদশ ওভারে ৪৬ রানের মাথায় আরভিনকে বোল্ড করে প্রথম উইকেট নেন কালেমুল্লাহ। গুম্বিও ফিরে যান দ্রুতই। আচমকা দুই উইকেট হারানো দল দিশা পায় উইলিয়ামসের ব্যাটে।
ওয়েসলি মাধভেরেকে নিয়ে ৬৪, রাজাকে নিয়ে ১০২ রানের জুটির পর বার্লকে এক পাশে রেখে ৪১, লুক জঙ্গুইর সঙ্গে ২১। টানা এসব জুটিতে স্বাগতিকদের রানের চাকা তরতরকে এগিয়ে নেন উইলিয়ামস।
অভিজ্ঞ ব্যাটার আবারও আগ্রাসী মেজাজে সেঞ্চুরি পেরিয়ে হয়ে উঠেন বিপদজনক। রাজা ৪৯ বলে ৪২ করে থেমে গেলেও তিনিই দলকে রাখেন পথে। শেষ দিকে ২৮ বলে ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও খেলেন জঙ্গুই। প্রতিপক্ষের আলগা বোলিং, বাজে ফিল্ডিং মিলিয়ে বড় পুঁজি পেতে সমস্যা হয়নি আসরে এখন পর্যন্ত সব ম্যাচ জেতা জিম্বাবুয়ের।
Comments