অশ্রুসজল চোখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায়ই বলে দিলেন তামিম

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেললেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

হুট করে যখন সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন, তখন থেকেই চলছিল জোরালো গুঞ্জন। শেষ পর্যন্ত ঘটলও তাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেললেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বিদায়ী বার্তা দেওয়ার সময় তিনি ভাসলেন চোখের জলে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তামিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের চলমান ওয়ানডে সিরিজের মাঝপথে এলো এই ঘোষণা। আগের দিন চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে টাইগারদের নেতৃত্ব দেন তিনি। নিজ শহরের মাঠে সেই ম্যাচটি হয়ে থাকল বাঁহাতি তারকা ওপেনারের ক্যারিয়ারের শেষ। 

আফগানদের বিপক্ষে হারের পর অনেকেই আঙুল তুলেছেন তামিমের দিকে। তাছাড়া, আগের দিনই একটি সংবাদমাধ্যমে তার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শতভাগ ফিট না হয়েও খেলতে চাওয়ার বেজায় খেপেন বিসিবি প্রধান। যা তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করে।

অবশ্য চোট সমস্যা বেশ পুরনোই তামিমের। গত ডিসেম্বরেও ভারতের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে পারেনি। খেলতে পারেননি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টও। এই সিরিজের আগে শতভাগ ফিট না থাকার কথা জানান। প্রথম ম্যাচ খেলে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত এলো অবসরের।

তবে সিদ্ধান্তটি হুট করে নেননি বলে দাবি করেন তামিম। অশ্রুসজল চোখে বলেন, 'আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালকের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেক দিন ধরেই আমি ভাবছিলাম। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।'

বিদায় বেলায় তামিম ধন্যবাদ জানান সতীর্থ, কোচ, পরিবার ও সমর্থকদের, 'ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তাগণ, আমার পরিবার ও যারা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।'

২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আগমন হয় তামিমের। এরপর ২৪১টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৫৬টি ফিফটিতে ৩৬.৬২ গড়ে করেছেন ৮৩১৩ রান। আর ৭০টি টেস্ট খেলে ৩৮.৮৯ গড়ে করেছেন ৫১৩৪ রান। যেখানে ৩১ ফিফটির সঙ্গে রয়েছে ১০ সেঞ্চুরি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অবশ্য আগেই ছেড়েছেন তামিম। গত জুলাইয়ে অবসর নেওয়ার আগে ৭৪টি ম্যাচে করেছেন ১৭০১ রান। দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে এ সংস্করণে একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছেন তিনি। এরসঙ্গে রয়েছে ৭টি ফিফটিও।

Comments