‘বাংলাদেশ থেকে আমরা এক ধাপ এগিয়ে’
টানা দুই জয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করা আফগানিস্তান দল এখন উড়ছে। মঙ্গলবার শেষ ম্যাচেও একই ফল আদায় করে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করতে চায় তারা। তার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের পেস বোলিং কোচ হামিদ হাসান জানালেন, সব বিভাগেই বাংলাদেশ থেকে এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন তারা। তিনি ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন এই সিরিজে তাদের সাফল্যের পেছনের কারণ।
ফজল হক ফারুকি যেভাবে বল করছেন, তাকে নিয়ে নিশ্চয়ই গর্বিত?
হামিদ হাসান: অবশ্যই (গর্বিত)। গত দুই ম্যাচে সে যেমন বল করেছে যেকোনো দল, যেকোনো কোচই গর্বিত হবে। সে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভুগেছে কারণ সে খুব বেশি ওয়ানডে খেলেনি। কিন্তু আমরা আবুধাবিতে দারুণ অনুশীলন করেছি, সে খুব ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। আমি খুশি সে তার সেরা ছন্দ পেয়েছে। আশা করছি এশিয়া কাপ এবং লক্ষ্য করছি বিশ্বকাপ সে আমাদের বোলিং আক্রমণের বড় এক শক্তি হবে।
তার বোলিংয়ে বিশেষত্ব কি?
হামিদ: সত্যি কথা বলতে তার দক্ষতা আছে। সে সারা দুনিয়া ঘুরে ক্রিকেট খেলে। দ্বিতীয়ত সে খুব ভালো ছাত্র। আপনি তাকে বোলিং নিয়ে কিছু বললেই সেটা সে দ্রুত আয়ত্ত করতে পারে। এটাই মূল। আমি তার ডেথ ওভার নিয়ে কাজ করছি। সে আগে এই জায়গা নিয়ে ভুগেছে, এখন অনেক উন্নতি করেছে যদিও। সে নতুন বলে বল করতে পারে, ডেথেও বল করতে পারে। দিনে দিনে সে অনেক উন্নতি করে আফগানিস্তানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
টানা দুই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত, জেতার এই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবেন নিশ্চয়ই
হামিদ: অবশ্যই। প্রত্যেক দলই জেতার ছন্দ ধরে রাখতে চায়। বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মাঠে হারানো সহজ না। তিন বিভাগেই ছেলেরা ভালো করেছে। এটা দলীয় চেষ্টা ছিল যার কারণে আমরা এমন ফল পেয়েছি। কালও জিতব আশা করি।
বিশ্বকাপে আপনাদের বোলিং আক্রমণ ভাইটাল হতে পারে?
হামিদ: অবশ্যই। গত দুই ম্যাচে তারা যেভাবে শুরু করেছে দারুণ ছিল। এইজন্য আসন্ন এশিয়া আপ ও বিশ্বকাপের দিকে তাকিয়ে আমরা। এই সফর শেষে কিছুদিন বিরতি থাকবে। কিন্তু আমরা তবু খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করব যাতে তারা ছন্দে ফিরে পায়। সম্ভবত পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের একটা সিরিজ খেলব। যদিও নিশ্চিত না। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে ছন্দটা ধরে রাখতে চেষ্টা করব।
বিশ্বকাপের স্বপ্ন কি আপনাদের
হামিদ: এবার আমরা বড় স্বপ্ন দেখছি। দল যেভাবে পারফর্ম করছে ভালো ফল আশা করছি। আফগানিস্তানকে নিয়ে দুনিয়া সতর্ক আছে। তারা সেরা লড়াই করবে, সেরাটা দিবে নিজেদের। আমরা তাদের থেকে সেরাটা পাওয়ার আশা করছি। আমাদের ভালো ব্যাটার আছে। বিশ্বকাপে ভালো করব। কিছু ম্যাচ আমরা জিততে চাই।
বাংলাদেশ যে ধরণে খেলেছে কাজটা কি সহজ ছিল আপনাদের?
হামিদ: সহজ ছিল না (বাংলাদেশকে হারানো)। আমাদেরকে এজন্য অনেক অনুশীলন করতে হয়েছে, প্রস্তুত হতে হয়েছে। হ্যাঁ (অবাক হয়েছি বাংলাদেশের অ্যাপ্রোচে)। আমরা একটু ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছি, বাংলাদেশ থেকে এক ধাপ এগিয়ে ছিলাম। এই জন্যই বাংলাদেশ আমাদের বোলার বা ব্যাটকে ধরতে পারেনি। এটাই সম্ভবত আসল ব্যবধান করে দিয়েছে ফলেই দেখতে পারছেন। বাংলাদেশের মাঠে বাংলাদেশকে হারানো সহজ ছিল না। আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। ৫-৬ ঘণ্টা করে অনুশীলন করেছি। আপনার যদি নিজের উপর বিশ্বাস থাকে তাহলে যে কাউকে হারাতে পারেন।
বিশ্বকাপে কি বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা টিক চিহ্ন দিয়ে রাখছেন?
হামিদ: (হাসি) এখনই বলা যাচ্ছে না কারণ ক্রিকেটে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আমরা প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি বল, যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যেকোনো জায়গায় খেলা আমরা ইতিবাচক থাকতে চাই। এবং দেখতে চাই কেমন ফল হয়। বাংলাদেশ হোক বা অন্য কোন দেশ হোক।
বাংলাদেশের মাঠে দুই ম্যাচেই আফগান দর্শক ছিল, তাদের দেখে অবাক হয়েছেন?
হামিদ: আমরাও খুব অবাক হয়েছে আফগানিস্তানের মানুষকে এখানে দেখে। আমার মনে হয় তারা শিক্ষার্থী। আমাদেরকে মাঠে এসে সমর্থন দেওয়ায় তাদেরকে ধন্যবাদ দেই। দেশের বাইরে যখনই গিয়ে নিজেদের সমর্থন পাবেন, এটা বাড়তি শক্তি দেয়। বাংলাদেশের সমর্থকরাও দুর্দান্ত। তারা তাদের দলকে পুরো সমর্থন দিচ্ছে। দেশের বাইরে সমর্থনে অনেক প্রেরণা পাওয়া যায়। সমর্থন দেখলে শতভাগ দিয়ে রোমাঞ্চকর খেলা যায়।
Comments