আফগানিস্তানকে উড়িয়ে শেষ ম্যাচে সান্ত্বনা পেল বাংলাদেশ

Litton Das
রান তাড়ায় ফিফটি করেন লিটন দাস। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

একাদশে ফেরা শরিফুল ইসলামের আগুনে স্পেলে তছনছ হয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের ইনিংস আর ঘুরে দাঁড়াতে দেননি বাকিরা। দারুণ বোলিংয়ে  প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে রান তাড়াতেও এবার কোন ভুল করেনি বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে আফগানদের উড়িয়ে লিটন দাসরা পেয়েছেন ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার রসদ।

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সফরকারীদের ৭  উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শরিফুলের তোপে আফগানিস্তান করে মাত্র ১২৬ রান। ওই রান টপকাতে স্রেফ ২৩.৩ ওভার খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

দলকে জিতিয়ে ৬০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক লিটন। তবে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে মূল নায়ক শরিফুলই। ৯ ওভার বল করে ২১ রান খরচায় ৪ উইকেটন নেন বাঁহাতি পেসার।

এই ম্যাচটা জিতলেও আফগানদের কাছে প্রথমবার ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারার অস্বস্তি অবশ্য থাকবেই।

অনেক প্রত্যাশা নিয়ে শুরু করা সিরিজে প্রাপ্তির খাতা ছিল প্রায় শূন্য। ৮ বছর পর ঘরের মাঠে কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কাও চোখ রাঙাচ্ছিল। অবশেষে এমন সমীকরণের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ পেল সান্ত্বনা।

রান তাড়ায় নেমে আবারও চরম হতাশ করেন নাঈম শেখ। আউটের ধরন হুবহু আগের ম্যাচের মতই। ফজল হক ফারুকির অফ স্টাম্পের বাইরের বল শরীরের দূর থেকে টেনে স্টাম্পে নিয়ে আসেন বাঁহাতি ওপেনার। আগের ম্যাচে ২১ বলে করেছিলেন ৯, এবার ৮ বলে কোন রান করে বিদায় নেন এই ব্যাটার।

অধিনায়ক লিটনের সঙ্গে মিলে নাজমুল হোসেন শান্ত দুই চারে থিতু হওয়ার আভাস দিতেই নিভেছেন। তারও হন্তারক ফারুকি। ফারুকির বল স্টাম্প থেকে সরে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, পরাস্ত ভেতরে ঢোকা বল তার স্টাম্প ভেঙে দেয়, শেষ মুহূর্তে আর সামাল দিতে পারেননি তিনি।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ২৮ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন সাকিব-লিটন। দুই ম্যাচেই থিতু হয়ে আত্মাহুতি দেওয়া লিটন এবার খেলেন আরও সতর্ক হয়ে। সাকিব নেমে শুরু থেকেই ছিলেন রান বাড়ানোর তাড়ায়। দুজনের জুটি জমে উঠে জম্পেশ। ওয়ানডেতে কিছুটা ব্যাডপ্যাচে থাকা লিটন ফারুকিকে পুল করে উড়ান ছক্কায়, স্কয়ার কাটে পান বাউন্ডারি।

সাকিব দ্রুতই ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। তবে মোহাম্মদ নবির বলে বড় শটের ছক্কায় টাইমিংয়ে তালগোল পাকিয়ে ক্যাচ তুলে দেন দেশের শীর্ষ অলরাউন্ডার। ৩৯ বলে ৩৯ করে থামেন সাকিব। ৬১  বলে ৬১ রান তুলে ভাঙে তৃতীয় উইকেট জুটি। সাকিব আউট হলেও ম্যাচ তখন একদম নাগালে। তাওহিদ হৃদয়কে বাকি পথ পাড়ি দিতে কোন সমস্যা হয়নি ওয়ানডেতে দশম ফিফটি করা লিটনের।

টস জিতে ব্যাটিং বেছে খেলতে নেমেই চরম বিপদে পড়ে সফরকারীরা।  প্রথম দুই ম্যাচে বেঞ্চে বসে অপেক্ষায় ছিলেন শরিফুল। ভেতরে তাড়না হয়ত ছিল প্রবল  বিশ্বকাপে নিজের দাবি জোরালো করার সুযোগ পেয়েই তেড়েফুঁড়ে উঠেন তিনি।

উইকেট থেকে বাড়তি বাউন্স আদায় করে চাপে ফেলতে থাকেন ব্যাটারদের। প্রথম উইকেটটি অবশ্য পেয়েছেন আড়াআড়ি বেরিয়ে যাওয়া বলে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইব্রাহিম জাদরান এবার ১ রান করেই জমা পড়েন মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।

এক বল পরই রহমত শাহর ক্যাচ উঠে গালিতে। মেহেদী হাসান মিরাজ তা নিতে না পারলেও অপেক্ষে পুড়তে হয়নি। পরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনিও।

চাপে পড়া আফগানরা ৬ষ্ঠ ওভারে পড়ে আরও বিপদে। বিপদজনক রাহমানুল্লাহ গুরবাজকে বাড়তি বাউন্সে কাবু করেন তাসকিন। শর্ট বল খেলতে না পেরে গুরবাজের দেওয়া ক্যাচ অনেকখানি লাফিয়ে ধরেন মুশফিক।

মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শহিদি পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছিলেন। রানের চাকা মন্থর হয়ে গেলেও টিকে থাকার দিকে মন দিচ্ছিলেন তারা, লাভ হয়নি। নবম ওভারে নিজের প্রথম স্পেলে আরেক সাফল্য শরিফুলের। তার বলে ফ্লিক খেলতে গিয়ে পায়ে লাগিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন।।

হাসমতুল্লাহ তাইজুল ইসলামকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। অভিষিক্ত আব্দুল রহমানকে ছেঁটে শরিফুল নিজের চতুর্থ উইকেট তুললে ৬৮ রানেই ৭ উইকেট পড়ে যায় আফগানিস্তানের। এরপর টেল এন্ডারদের নিয়ে ইনিংস লম্বা করেছেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ওয়ানডেতে তার প্রথম ফিফটিতে আফগানরা পেরিয়ে যায় তিন অঙ্কের ঘর। তবে তাদের মামুলি পুঁজি আর সমস্যার কারণ হতে পারেনি বাংলাদেশের।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

4h ago